1 সপ্তার প্রথম দিনের ভোর বেলায়, অন্ধকার থাকতেই মগ্দলীনী মরিয়ম সেই কবরের কাছে গেলেন। তিনি দেখলেন, কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরানো হয়েছে।
2 সেইজন্য তিনি শিমোন-পিতর আর যে শিষ্যকে যীশু ভালবাসতেন সেই শিষ্যের কাছে দৌড়ে গিয়ে বললেন, “লোকেরা প্রভুকে কবর থেকে নিয়ে গেছে। তাঁকে কোথায় রেখেছে আমরা তা জানি না।”
3 পিতর আর সেই অন্য শিষ্যটি তখন বের হয়ে কবরের দিকে যেতে লাগলেন।
4 দু’জন একসংগে দৌড়াচ্ছিলেন। অন্য শিষ্যটি পিতরের আগে আগে আরও তাড়াতাড়ি দৌড়ে প্রথমে কবরের কাছে আসলেন, কিন্তু তিনি কবরের ভিতরে গেলেন না।
5 তিনি নীচু হয়ে দেখলেন, যীশুর দেহে যে কাপড়গুলো জড়ানো হয়েছিল সেগুলো পড়ে আছে।
6 শিমোন-পিতরও তাঁর পিছনে পিছনে এসে কবরের ভিতরে ঢুকলেন এবং কাপড়গুলো পড়ে থাকতে দেখলেন।
7 তিনি আরও দেখলেন, তাঁর মাথায় যে রুমালখানা জড়ানো ছিল তা অন্য কাপড়ের সংগে নেই, কিন্তু আলাদা করে এক জায়গায় গুটিয়ে রাখা হয়েছে।
8 যে শিষ্য প্রথমে কবরের কাছে পৌঁছেছিলেন তিনিও তখন ভিতরে ঢুকলেন এবং দেখে বিশ্বাস করলেন।
9 মৃত্যু থেকে যীশুর জীবিত হয়ে উঠবার যে দরকার আছে, পবিত্র শাস্ত্রের সেই কথা তাঁরা আগে বুঝতে পারেন নি।
10 এর পরে শিষ্যেরা ঘরে ফিরে গেলেন,
11 কিন্তু মরিয়ম কবরের বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে নীচু হয়ে কবরের ভিতরে চেয়ে দেখলেন,
12 যীশুর দেহ যেখানে শোওয়ানো ছিল সেখানে সাদা কাপড় পরা দু’জন স্বর্গদূত বসে আছেন-একজন মাথার দিকে আর অন্যজন পায়ের দিকে।
13 তাঁরা মরিয়মকে বললেন, “কাঁদছ কেন?”মরিয়ম তাঁদের বললেন, “লোকেরা আমার প্রভুকে নিয়ে গেছে এবং তাঁকে কোথায় রেখেছে জানি না।”
14 এই কথা বলে মরিয়ম পিছনে ফিরে দেখলেন যীশু দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু তিনি যে যীশু তা বুঝতে পারলেন না।
15 যীশু তাঁকে বললেন, “কাঁদছ কেন? কাকে খুঁজছ?”যীশুকে বাগানের মালী ভেবে মরিয়ম বললেন, “দেখুন, আপনি যদি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন তবে বলুন কোথায় রেখেছেন। আমিই তাঁকে নিয়ে যাব।”
16 যীশু তাঁকে বললেন, “মরিয়ম।”তাতে মরিয়ম ফিরে দাঁড়িয়ে অরামীয় ভাষায় যীশুকে বললেন, “রব্বুনি।” রব্বুনি মানে গুরু।
17 যীশু মরিয়মকে বললেন, “আমাকে ধরে রেখো না, কারণ আমি এখনও উপরে পিতার কাছে যাই নি। তুমি বরং ভাইদের কাছে গিয়ে বল, যিনি আমার ও তোমাদের পিতা, যিনি আমার ও তোমাদের ঈশ্বর, আমি উপরে তাঁর কাছে যাচ্ছি।”
18 তখন মগ্দলীনী মরিয়ম শিষ্যদের কাছে গিয়ে সংবাদ দিলেন, তিনি প্রভুকে দেখেছেন আর প্রভুই তাঁকে এই সব কথা বলেছেন।
19 সেই একই দিনে, সপ্তার প্রথম দিনের সন্ধ্যাবেলায় শিষ্যেরা যিহূদী নেতাদের ভয়ে ঘরের সমস্ত দরজা বন্ধ করে এক জায়গায় মিলিত হয়েছিলেন। তখন যীশু এসে তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক।”
20 এই কথা বলে তিনি তাঁর দুই হাত ও পাঁজরের দিকটা তাঁর শিষ্যদের দেখালেন। প্রভুকে দেখতে পেয়ে শিষ্যেরা খুব আনন্দিত হলেন।
21 পরে যীশু আবার তাঁদের বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক। পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি।”
22 এই কথা বলে তিনি শিষ্যদের উপর ফুঁ দিয়ে বললেন, “পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ কর।
23 তোমরা যদি কারও পাপ ক্ষমা কর তবে তার পাপ ক্ষমা করা হবে, আর যদি কারও পাপ ক্ষমা না কর তবে তার পাপ ক্ষমা করা হবে না।”
24 যীশু যখন এসেছিলেন তখন থোমা নামে সেই বারোজন শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁদের সংগে ছিলেন না। এই থোমাকে যমজ বলা হত।
25 অন্য শিষ্যেরা পরে থোমাকে বললেন, “আমরা প্রভুকে দেখেছি।”থোমা তাঁদের বললেন, “আমি তাঁর দুই হাতে যদি পেরেকের চিহ্ন না দেখি, সেই চিহ্নের মধ্যে আংগুল না দিই এবং তাঁর পাঁজরে হাত না দিই, তবে কোনমতেই আমি বিশ্বাস করব না।”
26 এর এক সপ্তাহ পরে শিষ্যেরা আবার ঘরের মধ্যে মিলিত হলেন, আর থোমাও তাঁদের সংগে ছিলেন। যদিও সমস্ত দরজা বন্ধ ছিল তবুও যীশু এসে তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক।”
27 পরে তিনি থোমাকে বললেন, “তোমার আংগুল এখানে দিয়ে আমার হাত দু’খানা দেখ এবং তোমার হাত বাড়িয়ে আমার পাঁজরে রাখ। অবিশ্বাস কোরো না বরং বিশ্বাস কর।”
28 তখন থোমা বললেন, “প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার।”
29 যীশু তাঁকে বললেন, “থোমা, তুমি কি আমাকে দেখেছ বলে বিশ্বাস করছ? যারা না দেখে বিশ্বাস করে তারা ধন্য।”
30 যীশু শিষ্যদের সামনে চিহ্ন হিসাবে আরও অনেক আশ্চর্য কাজ করেছিলেন; সেগুলো এই বইয়ে লেখা হয় নি।
31 কিন্তু এই সব লেখা হল যাতে তোমরা বিশ্বাস কর যে, যীশুই মশীহ, ঈশ্বরের পুত্র, আর বিশ্বাস করে যেন তাঁর মধ্য দিয়ে জীবন পাও।