1 এর পরে তিবিরিয়া সাগরের পারে শিষ্যদের কাছে আবার যীশু দেখা দিলেন। ঘটনাটা এইভাবে ঘটেছিল:
2 শিমোন-পিতর, থোমা (যাঁকে যমজ বলে) গালীল প্রদেশের কান্না গ্রামের নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা এবং যীশুর অন্য দু’জন শিষ্য একসংগে ছিলেন।
3 শিমোন-পিতর তাঁদের বললেন, “আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি।”তাঁরা বললেন, “আমরাও তোমার সংগে যাব।” তখন তাঁরা বের হয়ে নৌকায় উঠলেন, কিন্তু সেই রাতে কিছুই ধরতে পারলেন না।
4 সকাল হয়ে আসছে এমন সময় যীশু সাগরের পারে এসে দাঁড়ালেন। শিষ্যেরা কিন্তু চিনতে পারলেন না যে, তিনি যীশু।
5 তিনি শিষ্যদের বললেন, “সন্তানেরা, কিছুই কি পাও নি?”তাঁরা বললেন, “না, পাই নি।”
6 যীশু তাঁদের বললেন, “নৌকার ডানদিকে জাল ফেল, পাবে।” তখন তাঁরা জাল ফেললেন, আর এত বেশী মাছ উঠল যে, তাঁরা তা টেনে তুলতে পারলেন না।
7 যীশু যে শিষ্যকে ভালবাসতেন সেই শিষ্য পিতরকে বললেন, “উনি প্রভু।” সেই সময় শিমোন-পিতরের গায়ে কোন কাপড় ছিল না। তাই যখন তিনি শুনলেন, “উনি প্রভু,” তখন গায়ে কাপড় জড়িয়ে সাগরে ঝাঁপ দিলেন।
8 তাঁরা পার থেকে বেশী দূরে ছিলেন না, কমবেশ দু’শো হাত দূরে ছিলেন। এইজন্য অন্য শিষ্যেরা মাছে ভরা জালটা টানতে টানতে নৌকায় করে পারে আসলেন।
9 পারে নেমে এসে তাঁরা কাঠকয়লার আগুন এবং আগুনের উপরে মাছ দেখতে পেলেন; সেখানে রুটিও ছিল।
10 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “এখন যে মাছ ধরলে তা থেকে কয়েকটা আন।”
11 শিমোন-পিতর নৌকায় গিয়ে জালটা পারে টেনে আনলেন। একশো তিপ্পান্নটা বড় মাছে জালটা ভরা ছিল। যদিও এত মাছ ছিল তবুও জালটা ছিঁড়ল না।
12 যীশু তাঁদের বললেন, “এস, খাও।” শিষ্যদের মধ্যে কারও সাহস হল না যে, জিজ্ঞাসা করে, “আপনি কে?” কারণ তাঁরা জানতেন, তিনি প্রভু।
13 পরে যীশু এসে রুটি নিয়ে তাঁদের দিলেন, আর সেইভাবে মাছও দিলেন।
14 মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবার পর যীশু এই তৃতীয় বার শিষ্যদের দেখা দিলেন।
15 তাঁদের খাওয়া শেষ হলে পর যীশু শিমোন-পিতরকে বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, ওদের ভালবাসার চেয়ে কি তুমি আমাকে বেশী ভালবাস?”শিমোন-পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন আপনি আমার কত প্রিয়।”যীশু তাঁকে বললেন, “আমার শিশু-মেষগুলো চরাও।”
16 যীশু দ্বিতীয় বার তাঁকে বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে ভালবাস?”শিমোন-পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি তো জানেন আপনি আমার কত প্রিয়।”যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষগুলো লালন-পালন কর।”
17 পরে তিনি তৃতীয়বার শিমোন-পিতরকে বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, সত্যিই কি আমি তোমার প্রিয়?”পিতর এবার দুঃখিত হলেন, কারণ যীশু এই তৃতীয় বার তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি সত্যিই তোমার প্রিয়?” এইজন্য পিতর যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি সব কিছুই জানেন; আপনি তো জানেন যে, আপনি আমার খুবই প্রিয়।”যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষগুলো চরাও।
18 আমি তোমাকে সত্যিই বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে তখন তুমি নিজেই তোমার কোমর বাঁধতে আর যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে। কিন্তু যখন তুমি বুড়ো হবে তখন তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দেবে এবং অন্য একজন তোমাকে বাঁধবে আর তুমি যেখানে যেতে চাও না সেখানেই নিয়ে যাবে।”
19 ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ করবার জন্য পিতর কিভাবে মরবেন তা বুঝাতে গিয়ে যীশু এই কথা বললেন।এই কথা বলবার পর যীশু পিতরকে বললেন, “আমার সংগে এস।”
20 পিতর পিছন ফিরে দেখলেন, যীশু যাঁকে ভালবাসতেন সেই শিষ্য পিছনে পিছনে আসছেন। ইনি সেই শিষ্য, যিনি খাবার সময়ে যীশুর দিকে ঝুঁকে বলেছিলেন, “প্রভু, আপনাকে যে শত্রুদের হাতে ধরিয়ে দেবে, সে কে?”
21 পিতর তাঁকে দেখে যীশুকে বললেন, “প্রভু, এর কি হবে?”
22 যীশু পিতরকে বললেন, “আমি যদি চাই এ আমার ফিরে না আসা পর্যন্ত থাকে, তাতে তোমার কি? তুমি আমার সংগে এস।”
23 এইজন্য ভাইদের মধ্যে এই কথা ছড়িয়ে গেল যে, সেই শিষ্য মরবেন না। যীশু কিন্তু পিতরকে বলেন নি সেই শিষ্য মরবেন না। তিনি বরং বলেছিলেন, “আমি যদি চাই সে আমার ফিরে না আসা পর্যন্ত থাকে, তাতে তোমার কি?”
24 সেই শিষ্যই এই সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন আর এই সব লিখেছেন। আমরা জানি তাঁর সাক্ষ্য সত্যি।
25 যীশু আরও অনেক কিছু করেছিলেন। যদি সেগুলো এক এক করে লেখা হত তবে এত বই হত যে, আমার মনে হয় সেগুলো এই জগতে ধরত না।