1 মাবুদ বলছেন, “ঘৃণ্য সেই পালকদের, যারা আমার চারণ ভূমির ভেড়াগুলোকে ধ্বংস করছে ও ছড়িয়ে দিচ্ছে।”
2 সেইজন্য যে পালকেরা আমার লোকদের চরায় সেই রাখালদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্ বলছেন, “তোমরা আমার পালের ভেড়াগুলোকে ছড়িয়ে ফেলেছ এবং তাদের তাড়িয়ে দিয়েছ, তাদের কোন যত্ন কর নি; কাজেই তোমাদের অন্যায়ের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব।
3 যে সব দেশে আমি আমার পালের ভেড়াগুলোকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম সেখান থেকে আমি নিজেই তাদের বাদবাকীগুলোকে তাদের চারণ ভূমিতে ফিরিয়ে আনব; সেখানে তাদের বংশ বৃদ্ধি পাবে ও তারা সংখ্যায় বেড়ে উঠবে।
4 আমি তাদের উপর এমন পালকদের নিযুক্ত করব যারা তাদের দেখাশোনা করবে; আমার ভেড়ার পাল আর ভয় পাবে না বা ব্যাকুল হবে না কিংবা কোনটা হারিয়ে যাবে না। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”
5 মাবুদ বলছেন, “সেই দিনগুলো আসছে যখন আমি দাউদের বংশে একটা ন্যায়বান চারাকে তুলব; তিনি বাদশাহ্ হয়ে জ্ঞানের সংগে রাজত্ব করবেন এবং দেশে সৎ ও ন্যায় কাজ করবেন।
6 তাঁর সময়ে এহুদা রক্ষা পাবে এবং ইসরাইল নিরাপদে বাস করতে পারবে। তাঁকে ‘মাবুদ আমাদের ধার্মিকতা’ বলে ডাকা হবে।
7 “কাজেই এমন দিন আসছে যখন লোকে আর বলবে না, ‘যিনি বনি-ইসরাইলদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন সেই আল্লাহ্র কসম,’
8 বরং তারা বলবে, ‘যিনি বনি-ইসরাইলদের উত্তর দেশে ও অন্যান্য দেশে দূর করে দিয়েছিলেন ও সেখান থেকে নিয়ে এসেছেন সেই আল্লাহ্র কসম।’ তারপর তারা নিজেদের দেশে বাস করবে।”
9 পরে নবীদের সম্বন্ধে মাবুদের কথা শুনে আমার দিল যেন আমার মধ্যে ভেংগে পড়ছে আর আমার সমস্ত হাড় কাঁপছে। মাবুদ ও তাঁর পাক কালামের জন্য আমি মাতালের মত, আংগুর-রস খেয়ে ভীষণ মাতাল হওয়া লোকের মত হয়েছি।
10 দেশ জেনাকারীদের দিয়ে ভরে গেছে; বদদোয়ার দরুন দেশ শোক করছে এবং মরুভূমির চারণ ভূমি শুকিয়ে গেছে। লোকেরা খারাপ পথ ধরে চলছে আর তাদের ক্ষমতা অন্যায়ভাবে ব্যবহার করছে।
11 মাবুদ বলছেন, “নবী ও ইমামেরা আল্লাহ্র প্রতি ভয়হীন হয়েছে; আমার ঘরে পর্যন্ত আমি তাদের দুষ্টতা দেখেছি।
12 সেইজন্য তাদের পথ পিছলা হবে; অন্ধকারে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে আর সেখানে তারা পড়ে যাবে। তাদের শাস্তি পাবার সময়ে আমি তাদের উপর বিপদ আনব।
13 “সামেরিয়ার নবীদের মধ্যে আমি এই জঘন্য ব্যাপার দেখেছি যে, তারা বাল দেবতার নামে নবী হিসাবে কথা বলে আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের বিপথে নিয়ে গেছে।
14 এ ছাড়া জেরুজালেমের নবীদের মধ্যে এই ভয়ংকর ব্যাপার দেখেছি যে, তারা জেনা করে এবং মিথ্যার মধ্যে জীবন কাটায়। তারা অন্যায়কারীদের হাত এমন শক্ত করে যার জন্য কেউ তার দুষ্টতা থেকে ফেরে না। তারা সবাই আমার কাছে সাদুম ও আমুরার লোকদের মত।
15 “সেইজন্য আমি আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন নবীদের সম্বন্ধে বলছি, আমি তাদের তেতো খাবার ও বিষাক্ত পানি খাওয়াব, কারণ জেরুজালেমের নবীদের কাছ থেকে আল্লাহ্র প্রতি ভয়হীনতা সমস্ত দেশময় ছড়িয়ে গেছে।”
16 আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলছেন, “নবীরা যে কথা বলছে তা তোমরা শুনো না; তারা তোমাদের মনে মিথ্যা আশা জাগিয়েছে। তারা মাবুদের মুখ থেকে শুনে কথা বলে না বরং নিজেদের মনগড়া দর্শনের কথা বলে।
17 যারা আমাকে তুচ্ছ করে তাদের কাছে সেই নবীরা এই কথা বলতে থাকে, ‘মাবুদ বলছেন, তোমাদের শান্তি হবে’; আর যারা নিজেদের দিলের একগুঁয়েমিতে চলে তারা তাদের বলে, ‘তোমাদের কোন বিপদ হবে না।’
18 কিন্তু তাদের মধ্যে কে আমার কালাম শুনবার ও বুঝবার জন্য আমার সামনে দাঁড়িয়েছে? কে আমার কালামে কান দিয়েছে বা তাতে মনোযোগ দিয়েছে?
19 দেখ, আমার রাগ ঝড়ের মত ফেটে পড়বে আর দুষ্টদের মাথার উপরে ঘুরে ঘুরে পড়বে ঘূর্ণিবাতাসের মত।
20 আমার রাগ আমার দিলের উদ্দেশ্য পুরোপুরিভাবে পূর্ণ না করা পর্যন্ত ফিরে যাবে না। তোমরা ভবিষ্যতে তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবে।
21 এই নবীদের আমি পাঠাই নি, তবুও তারা আগ্রহের সংগে তাদের সংবাদ লোকদের জানিয়েছে; আমি তাদের কোন কথা বলি নি, তবুও তারা কথা বলেছে।
22 কিন্তু তারা যদি আমার সামনে দাঁড়াত, তাহলে আমার বান্দাদের কাছে তারা আমার কালামই ঘোষণা করত আর খারাপ পথ ও খারাপ কাজ থেকে তাদের ফিরাত।”
23 মাবুদ বলছেন, “আমি কি কেবল কাছেরই আল্লাহ্, দূরের আল্লাহ্ নই?
24 কেউ কি এমন গোপন জায়গায় লুকাতে পারে যেখানে আমি তাকে দেখতে পাব না? আমি কি আসমান ও জমীনের সব জায়গায় থাকি না?”
25 “যে সব নবীরা আমার নাম নিয়ে মিথ্যা কথা বলে তাদের কথা আমি শুনেছি। তারা বলে, ‘আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি, একটা স্বপ্ন দেখেছি।’
26 আর কত দিন এই নবীরা তাদের দিলের মিথ্যা থেকে মিথ্যা কথা বলবে?
27 তারা মনে করে যেমন করে তাদের পূর্বপুরুষেরা বাল দেবতার পূজা করে আমার নাম ভুলে গিয়েছিল তেমনি করে তাদের যে সব স্বপ্নের কথা তারা সকলের কাছে বলে সেগুলো দিয়ে তারা আমার বান্দাদের আমার নাম ভুলিয়ে দেবে।
28 যে নবী স্বপ্ন দেখেছে সে তার স্বপ্নের কথা স্বপ্ন হিসাবেই বলুক, কিন্তু যে আমার কালাম পেয়েছে সে তা বিশ্বস্তভাবে বলুক; কারণ শস্যের কাছে খড়ের কোন দাম নেই।
29 আমার কালাম কি আগুনের মত নয়? যে হাতুড়ী পাথর টুকরা টুকরা করে আমার কালাম কি সেই হাতুড়ীর মত নয়?
30 “সেইজন্য যে নবীরা অন্যদের কাছ থেকে আমার কালাম চুরি করে আমি তাদের বিরুদ্ধে।
31 জ্বী, আমি সেই নবীদেরই বিরুদ্ধে যারা নিজেদের জিভ্ নাড়ায় আর ঘোষণা করে, ‘মাবুদ বলছেন।’
32 সত্যিই আমি সেই নবীদের বিরুদ্ধে যারা মিথ্যা স্বপ্নের কথা বলে। তারা সেগুলো বলে আর তাদের গর্বভরা মিথ্যা কথা দিয়ে আমার বান্দাদের বিপথে নিয়ে যায়। আমি কিন্তু তাদের পাঠাই নি কিংবা হুকুমও দিই নি। তারা এই লোকদের এক তিলও উপকার করতে পারে না। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”
33 মাবুদ আমাকে বললেন, “এই লোকেরা কিংবা কোন নবী বা ইমাম যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘মাবুদের কালাম কি?’ তখন তুমি তাদের বলবে যে, মাবুদ বলছেন, ‘তোমরা আমার বোঝা এবং আমি তোমাদের ফেলে দেব।’
34 যদি কোন নবী বা ইমাম কিংবা অন্য কেউ দাবি করে, ‘মাবুদের কালাম এই,’ তবে আমি সেই লোক ও তার পরিবারকে শাস্তি দেব।
35 “হে আমার বান্দারা, তোমরা প্রত্যেকে যেন তোমাদের বন্ধু বা আত্মীয়কে জিজ্ঞাসা কর, ‘মাবুদ কি জবাব দিয়েছেন?’ কিংবা ‘মাবুদ কি বলেছেন?’
36 কিন্তু তোমরা যেন আর কখনও না বল, ‘মাবুদের কালাম এই,’ কারণ প্রত্যেক লোক নিজের কথাকে আল্লাহ্র কালাম বানায়। এইভাবে তোমরা জীবন্ত আল্লাহ্র, তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের কালাম বাঁকা কর।”
37 তারপর মাবুদ আমাকে বললেন, “যখন তাদের মধ্যে কেউ নবী হিসাবে কথা বলে তখন তাকে জিজ্ঞাসা কর, ‘আপনার কাছে মাবুদ কি জবাব দিয়েছেন?’ কিংবা ‘মাবুদ কি বলেছেন?’
38 “হে আমার বান্দারা, যদি তোমরা আমার কথা অমান্য করে দাবি কর, ‘মাবুদের কালাম এই,’
39 তাহলে আমি নিশ্চয়ই আমার সামনে থেকে তোমাদের তুলে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেব এবং যে শহর আমি তোমাদের ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম সেই শহরও আমার সামনে থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেব।
40 আমি তোমাদের উপরে চিরস্থায়ী অপমান ও লজ্জা আনব যা লোকে ভুলে যাবে না।”