1 মাবুদ বলছেন, “যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে তালাক দেয় আর সেই স্ত্রী তাকে ছেড়ে অন্য লোককে বিয়ে করে, তাহলে সেই পুরুষের কি আবার সেই স্ত্রীর কাছে ফিরে যাবার নিয়ম আছে? যদি যায় তবে সেই দেশ সম্পূর্ণভাবে নাপাক হয়ে যাবে। কিন্তু তুমি তো অনেকের সংগে থেকে বেশ্যার মত জীবন কাটিয়েছ; এখন তুমি কি করে আমার কাছে ফিরে আসবে?
2 “তুমি চোখ তুলে গাছপালাহীন পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে দেখ। এমন কোন জায়গা আছে কি যেখানে তুমি জেনা কর নি? যাদের সংগে তুমি জেনা করেছ তাদের অপেক্ষায় তুমি রাস্তার ধারে বসে থাকতে, মরুভূমির আরবীয়দের মত ওৎ পেতে থাকতে। তোমার বেশ্যাগিরি আর দুষ্টতা দিয়ে তুমি দেশকে নাপাক করেছ।
3 এইজন্য বৃষ্টি বন্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বসন্তের বৃষ্টিও পড়ে নি। তবুও তোমার চোখে আছে বেশ্যার বেহায়া চাহনি; তোমার কোন লজ্জা নেই।
4 তুমি কি এইমাত্র আমাকে ডেকে বল নি, ‘হে আমার পিতা, আমার ছেলেবেলার বন্ধু,
5 তুমি কি সব সময় রাগ করে থাকবে? তোমার রাগ কি চিরকাল পুষে রাখবে?’ তুমি তো এইভাবে কথা বল, কিন্তু তোমার পক্ষে যতখানি খারাপ কাজ করা সম্ভব তুমি ততখানিই করেছ।”
6 বাদশাহ্ ইউসিয়ার রাজত্বের সময়ে মাবুদ আমাকে বললেন, “বিপথে যাওয়া ইসরাইল যা করেছে তা কি তুমি দেখেছ? সে সমস্ত উঁচু পাহাড়ের উপরে ও ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছের নীচে গিয়ে জেনা করেছে।
7 আমি ভেবেছিলাম এই সব করবার পরে সে আমার কাছে ফিরে আসবে, কিন্তু সে আসে নি আর তার বেঈমান বোন এহুদা তা দেখেছিল।
8 বিপথে যাওয়া ইসরাইলকে আমি তালাক-নামা দিয়েছিলাম এবং তার সমস্ত জেনার জন্য তাকে দূর করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি দেখলাম তার বেঈমান বোন এহুদার কোন ভয় নেই; সে-ও গিয়ে জেনা করল।
9 তার জেনার কাজ তার কাছে কিছুই মনে হয় নি বলে সে পাথর ও কাঠের দেব-দেবীর সংগে জেনা করে দেশকে নাপাক করল।
10 এই সব হলেও ইসরাইলের বেঈমান বোন এহুদা সমস্ত মন দিয়ে নয় কিন্তু কেবল ভান করে আমার কাছে ফিরে এসেছে। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”
11 মাবুদ আমাকে বললেন, “বিপথে যাওয়া ইসরাইল বরং বেঈমান এহুদার চেয়ে নিজেকে সৎ দেখিয়েছে।
12 তুমি গিয়ে এই সব সংবাদ উত্তর দিকে মুখ করে ঘোষণা কর: ‘আমি মাবুদ বলছি, হে বিপথে যাওয়া ইসরাইল, ফিরে এস। আমি আর তোমার দিকে ভুরু কুঁচকে থাকব না; আমি দয়াবান, তাই চিরকাল রাগ পুষে রাখব না।
13 তুমি কেবল তোমার দোষ মেনে নাও যে, তোমার মাবুদ আল্লাহ্র বিরুদ্ধে তুমি বিদ্রোহ করেছ, ডালপালা ছড়ানো সমস্ত সবুজ গাছের নীচে দেব-দেবীকে তোমার ভালবাসা দান করেছ এবং আমার কথার বাধ্য হও নি।’
14 “আমি মাবুদ আরও বলছি, ‘হে বিপথে যাওয়া লোকেরা, ফিরে এস, কারণ আমিই তোমাদের স্বামী। আমি তোমাদের মধ্যেকার প্রত্যেক শহর থেকে একজন ও প্রত্যেক বংশ থেকে দু’জনকে বেছে নিয়ে সিয়োনে আনব।
15 তারপর আমি তোমাদের আমার মনের মত পালক দেব; তারা জ্ঞান ও বুদ্ধির সংগে তোমাদের চালাবে।
16 সেই সময় আমি যখন দেশে তোমাদের লোকসংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেব তখন লোকে আর মাবুদের সাক্ষ্য-সিন্দুক সম্বন্ধে বলবে না। তার কথা কখনও তাদের মনে পড়বে না বা মনেও থাকবে না; তার আর দরকার হবে না কিংবা অন্য আর একটা তৈরীও করা হবে না।
17 সেই সময় লোকে জেরুজালেমকে বলবে মাবুদের সিংহাসন, আর মাবুদের এবাদত করবার জন্য সমস্ত জাতি জেরুজালেমে জমায়েত হবে। তাদের খারাপ দিলের একগুঁয়েমিতে আর তারা চলবে না।
18 সেই সময় এহুদার লোকেরা ইসরাইলের লোকদের সংগে যুক্ত হবে আর আমি যে দেশ অধিকার হিসাবে তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছি সেই দেশে তারা একসংগে উত্তর দিকের দেশ থেকে ফিরে আসবে।’
19 “আমি নিজেই বলেছিলাম, ‘আমি ছেলে হিসাবে তোমাদের কবুল করব এবং চাওয়ার মত একটা দেশ, জাতিদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর একটা অধিকার তোমাদের দেব।’ আমি ভেবেছিলাম তোমরা আমাকে পিতা বলে ডাকবে এবং আমার পিছনে চলা থেকে ফিরে যাবে না।
20 কিন্তু হে বনি-ইসরাইলরা, স্বামীর প্রতি অবিশ্বস্ত স্ত্রীর মত তোমরা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছ। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”
21 গাছপালাহীন পাহাড়গুলোর উপরে বনি-ইসরাইলদের ফরিয়াদ ও মিনতির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, কারণ তাদের পথ তারা বাঁকা করেছে এবং তাদের মাবুদ আল্লাহ্কে তারা ভুলে গেছে।
22 মাবুদ বলছেন, “হে বিপথে যাওয়া সন্তানেরা, ফিরে এস; তোমাদের বিপথে যাওয়া রোগ আমি ভাল করে দেব।”তখন বনি-ইসরাইলরা বলবে, “জ্বী, আমরা তোমার কাছে আসব, কারণ তুমিই আমাদের মাবুদ আল্লাহ্।
23 সত্যিই পাহাড়-পর্বতগুলোর উপরকার পূজার হৈ চৈ ছলনা ছাড়া আর কিছু নয়। সত্যিই আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র মধ্যেই আছে ইসরাইলের উদ্ধার।
24 আমাদের ছেলেবেলা থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের পরিশ্রমের ফল, অর্থাৎ তাঁদের গরু-ভেড়ার পাল ও তাঁদের ছেলেমেয়েদের এই লজ্জাজনক দেব-দেবী গ্রাস করেছে।
25 এস, আমরা আমাদের লজ্জার মধ্যে শুয়ে থাকি, আমাদের অপমান আমাদের ঢেকে ফেলুক। ছেলেবেলা থেকে আজ পর্যন্ত আমরা আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র বিরুদ্ধে গুনাহ্ করে চলেছি, আর আমাদের পূর্বপুরুষেরাও তা-ই করেছিলেন। আমরা আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র বাধ্য থাকি নি।”