1 পরে তিনি আমাকে বললেন, হে মানুষের সন্তান, তোমার কাছে যা উপস্থিত, তা ভোজন কর, এই কিতাবখানি ভোজন কর এবং ইসরাইল-কুলের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বল।
2 তখন আমি মুখ খুললাম, আর তিনি আমাকে সেই কিতাব ভোজন করালেন;
3 আর তিনি আমাকে বললেন, হে মানুষের সন্তান, আমি তোমাকে যে কিতাব দিলাম, তা খেয়ে উদর পরিপূর্ণ কর। তখন আমি তা ভোজন করলাম; আর তা আমার মুখে মধুর মত মিষ্ট লাগল।
4 পরে তিনি আমাকে বললেন, হে মানুষের সন্তান, তুমি যাও, ইসরাইল-কুলের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমার কালামগুলো বল।
5 কারণ তুমি দুর্বোধ্য ও কঠিন ভাষাবাদী কোন জাতির কাছে প্রেরিত হও নি, কিন্তু ইসরাইল-কুলের কাছে প্রেরিত হচ্ছ।
6 যাদের কথা তোমার বোধের অগম্য, এমন দুর্বোধ্য ও কঠিন ভাষাবাদী অনেক জাতির কাছে তুমি প্রেরিত হও নি; আমি তাদের কাছে তোমাকে পাঠালে তারা তোমার কথা অবশ্য শুনতো।
7 কিন্তু ইসরাইল-কুল তোমার কথা শুনতে সম্মত হবে না, যেহেতু তারা আমার কথা শুনতে সম্মত নয়, কারণ ইসরাইল-কুলের সকলেই উদ্ধত ও কঠিনচিত্ত।
8 দেখ, আমি তাদের মুখের বিপরীতে তোমার মুখ এবং তাদের কপালের বিপরীতে তোমার কপাল দৃঢ় করলাম।
9 যে হীরক চক্মকি পাথর থেকেও শক্ত, তার মত আমি তোমার কপাল শক্ত করলাম; যদিও তারা বিদ্রোহীকুল, তবুও তাদেরকে ভয় করো না ও তাদের মুখ দেখে ভয় পেয়ো না।
10 আরও তিনি আমাকে বললেন, হে মানুষের সন্তান আমি তোমাকে যা যা বলি, সেসব কালাম তুমি অন্তরে গ্রহণ কর, কান দিয়ে শোন।
11 আর যাও, ঐ নির্বাসিত লোকদের, তোমার স্বজাতি সন্তানদের কাছে গিয়ে তাদেরকে বল; তারা শুনুক বা না শুনুক, তবুও তাদেরকে বল, সার্বভৌম মাবুদ এই কথা বলেন।
12 পরে রূহ্ আমাকে তুলে নিলেন এবং আমি আমার পেছন দিকে এই কালাম মহাকল্লোলের শব্দের মত তাঁর স্থান থেকে শুনলাম, ‘ধন্য মাবুদের মহিমা।’
13 আর ঐ প্রাণীদের পরস্পরের পাখা চালানোর আওয়াজ, তাদের পাশে চাকার আওয়াজ, এই মহাকল্লোলের আওয়াজ শুনলাম।
14 আর রূহ্ আমাকে তুলে নিয়ে গেলে আমি মনে দুঃখ পেয়ে গমন করলাম; আর মাবুদের হাত আমার উপরে বলবৎ ছিল।
15 আমি টেল্-আবীবে অবস্থিত নির্বাসিত লোকদের, কবার নদীতীরবাসীদের কাছে এলাম এবং তারা যে স্থানে বাস করতো, সেই স্থানে সাত দিন স্তব্ধ থেকে তাদের মধ্যে বসে রইলাম।
16 সাত দিন গত হলে পর মাবুদের এই কালাম আমার কাছে নাজেল হল,
17 হে মানুষের সন্তান, আমি তোমাকে ইসরাইল-কুলের জন্য প্রহরী নিযুক্ত করলাম; তুমি আমার মুখে কথা শুনবে এবং আমার নামে তাদেরকে চেতনা দেবে।
18 যখন আমি দুষ্ট লোককে বলি, তুমি মরবেই মরবে, তখন তুমি যদি তাকে চেতনা না দাও এবং তার প্রাণরক্ষার জন্য চেতনা দেবার জন্য সেই দুষ্ট লোককে তার কুপথের বিষয় কিছু না বল, তবে সেই দুষ্ট লোক নিজের অপরাধে মরবে, কিন্তু তার রক্তের প্রতিশোধ আমি তোমার হাত থেকে নেব।
19 কিন্তু তুমি দুষ্টকে চেতনা দিলে, সে যদি তার নাফরমানী ও কুপথ থেকে না ফেরে, তবে সে নিজের অপরাধে মরবে, কিন্তু তুমি তোমার প্রাণ রক্ষা করলে।
20 আবার, কোন ধার্মিক লোক যদি তার ধার্মিকতা থেকে ফিরে অন্যায় করে, আর আমি তার সামনে বাধা রাখি, তবে সে মরবে; তুমি তাকে চেতনা না দিলে সে নিজের গুনাহে মরবে এবং তার কৃত ধর্মকর্ম আর স্মরণে আসবে না; কিন্তু আমি তোমার হাত দিয়ে তার রক্তের প্রতিশোধ নেব।
21 আর তুমি ধার্মিক লোককে গুনাহ্ না করতে চেতনা দিলে সে যদি গুনাহ্ না করে, তবে সচেতন হওয়াতে সে অবশ্য বাঁচবে; আর তুমিও তোমার প্রাণ রক্ষা করলে।
22 পরে সেই স্থানে মাবুদ আমার উপরে হস্তার্পণ করলেন, আর তিনি বললেন, উঠ, বের হয়ে সমতল ভূমিতে যাও, আমি সেখানে তোমার সঙ্গে কথা বলবো।
23 তাতে আমি উঠে সমতল ভূমিতে গেলাম, আর দেখলাম, সেই স্থানে মাবুদের সেই মহিমা দণ্ডায়মান, কবার নদীতীরে যে মহিমা দেখেছিলাম; তখন আমি উবুড় হয়ে পড়লাম।
24 পরে রূহ্ আমাতে প্রবেশ করে আমাকে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড় করালেন; আর তিনি আমার সঙ্গে কথা বলে আমাকে বললেন, যাও, তুমি তোমার বাড়ির দরজা বন্ধ করে ভিতরে থাক।
25 কিন্তু হে মানুষের সন্তান, দেখ, লোকেরা দড়ি দিয়ে তোমাকে বাঁধবে, তাতে তুমি বাইরে তাদের মধ্যে যেতে পারবে না।
26 আর আমিও তোমার জিহ্বা মুখের তালুতে আট্কে দেব, তাতে তুমি বোবা হবে, তাদের কাছে দোষবক্তা হবে না, কেননা তারা বিদ্রোহীকুল।
27 কিন্তু যখন আমি তোমার সঙ্গে কথা বলি, তখন তোমার মুখ খুলে দেব, তাতে তুমি তাদেরকে এই কথা বলবে, সার্বভৌম মাবুদ এই কথা বলেন; যে শুনে সে শুনুক, যে না শুনে সে না শুনুক; কেননা তারা বিদ্রোহীকুল।