1 এভাবে আসমান ও দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সমস্ত কিছুর সৃষ্টির কাজ সমাপ্ত হল।
2 পরে আল্লাহ্ সপ্তম দিনে তাঁর কাজ থেকে নিবৃত্ত হলেন, সেই সপ্তম দিনে তাঁর কৃত সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম করলেন।
3 আর আল্লাহ্ সেই সপ্তম দিনকে দোয়া করে পবিত্র করলেন, কেননা সেই দিনে আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট ও কৃত সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম করলেন।
4 সৃষ্টির সময়ে যেদিন মাবুদ আল্লাহ্ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করলেন, তখনকার আসমান ও দুনিয়ার বিবরণ এই—
5 সেই সময়ে দুনিয়াতে কোন উদ্ভিদ হত না আর ক্ষেতের কোন ফসলও উৎপন্ন হত না, কেননা মাবুদ আল্লাহ্ দুনিয়াতে তখনও বৃষ্টি বর্ষণ করেন নি আর ভূমিতে কৃষিকর্ম করতে কোন মানুষ ছিল না।
6 তবে ভূমির নিচ থেকে উৎসারিত পানির ধারা উঠে সমস্ত ভূতলকে ভিজিয়ে দিত।
7 আর মাবুদ আল্লাহ্ মাটির ধূলি দিয়ে আদমকে (অর্থাৎ মানুষকে) সৃষ্টি করলেন এবং তার নাসিকায় ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন; তাতে মানুষ জীবন্ত প্রাণী হল।
8 আর মাবুদ আল্লাহ্ পূর্ব দিকে, আদনে, একটি বাগান প্রস্তুত করলেন এবং সেই স্থানে তাঁর সৃষ্ট ঐ মানুষটিকে রাখলেন।
9 আর মাবুদ আল্লাহ্ ভূমি থেকে সব জাতের সুদৃশ্য ও সুখাদ্যদায়ক গাছ এবং সেই বাগানের মধ্যস্থানে জীবন-বৃক্ষ ও নেকী-বদী-জ্ঞানের বৃক্ষ উৎপন্ন করলেন।
10 আর বাগানে সেচ দেবার জন্য আদন থেকে একটি নদী বের হল এবং সেটি সেখান থেকে বিভক্ত হয়ে চারটি শাখানদীতে বিভক্ত হল।
11 প্রথম নদীর নাম পীশোন; এই নদীটি সমস্ত হবীলা দেশ বেষ্টন করে,
12 সেখানে সোনা পাওয়া যায়, আর সেই দেশের সোনা উত্তম এবং সেই স্থানে গুগ্গুল ও গোমেদমণি জন্মে।
13 দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন; এই নদীটি সমস্ত কূশ দেশ বেষ্টন করে।
14 তৃতীয় নদীর নাম হিদ্দেকল; এটি আশেরিয়া দেশের সম্মুখ দিয়ে প্রবাহিত হয়। চতুর্থ নদীর নাম ফোরাত।
15 পরে মাবুদ আল্লাহ্ আদমকে নিয়ে আদন বাগানের কৃষিকর্ম করার ও তা রক্ষা করার জন্য সেখানে রাখলেন।
16 আর মাবুদ আল্লাহ্ আদমকে এই হুকুম দিলেন, তুমি এই বাগানের সমস্ত গাছের ফল স্বচ্ছন্দে ভোজন করো;
17 কিন্তু নেকী-বদী-জ্ঞানের বৃক্ষের ফল ভোজন করো না, কেননা যেদিন তার ফল খাবে সেদিন মরবেই মরবে।
18 আর মাবুদ আল্লাহ্ বললেন, মানুষের একাকী থাকা ভাল নয়, আমি তার জন্য তার অনুরূপ সহকারিণী সৃষ্টি করবো।
19 আর মাবুদ আল্লাহ্ মাটি থেকে যে সব বন্য পশু ও আসমানের পাখি সৃষ্টি করেছিলেন, আদম তাদের কি কি নাম রাখবেন তা জানতে সেগুলোকে তাঁর কাছে আনলেন। তখন আদম যে জীবন্ত প্রাণীর যে নাম রাখলেন সেটির সেই নাম হল।
20 আদম যাবতীয় গৃহপালিত পশুর, আসমানের পাখির ও যাবতীয় বন্য পশুর নাম রাখলেন, কিন্তু মানুষের জন্য তাঁর অনুরূপ কোন সহকারিণী পাওয়া গেল না।
21 পরে মাবুদ আল্লাহ্ আদমকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন; আর তিনি তাঁর একখানি পাঁজরের হাড় নিলেন এবং মাংস দিয়ে সেই স্থান পূর্ণ করলেন।
22 মাবুদ আল্লাহ্ আদম থেকে নেওয়া সেই পাঁজরের হাড় দিয়ে এক জন স্ত্রীলোক সৃষ্টি করলেন ও তাঁকে আদমের কাছে আনলেন।
23 তখন আদম বললেন, এবার হয়েছে; ইনি আমার অস্থির অস্থি ও মাংসের মাংস; এঁর নাম হবে নারী, কেননা ইনি নর থেকে গৃহীত হয়েছেন।
24 এই কারণে মানুষ তার পিতামাতাকে ত্যাগ করে তার স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হবে এবং তারা একাঙ্গ হবে।
25 ঐ সময়ে আদম ও তাঁর স্ত্রী উভয়ে উলঙ্গ থাকতেন এবং তাঁদের কোন লজ্জাবোধ ছিল না।