1 পরে আল্লাহ্ ইয়াকুবকে বললেন, উঠ, বেথেলে গিয়ে সেই স্থানে বাস কর এবং তোমার ভাই ইসের সম্মুখ থেকে তোমার পলায়নকালে যে আল্লাহ্ তোমাকে দর্শন দিয়েছিলেন, তাঁর উদ্দেশে সেই স্থানে কোরবানগাহ্ তৈরি কর।
2 তখন ইয়াকুব তাঁর পরিজন ও সঙ্গীদের বললেন, তোমাদের কাছে যে সমস্ত বিজাতীয় দেবমূর্তি আছে সেগুলো দূর কর এবং পাক-পবিত্র হও ও অন্য পোশাক পর।
3 আর এসো, আমরা উঠে বেথেলে যাই; যে আল্লাহ্ আমার সঙ্কটের দিনে আমাকে মুনাজাতের উত্তর দিয়েছিলেন এবং আমার যাত্রা পথে সহবর্তী ছিলেন, তাঁর উদ্দেশে আমি সেই স্থানে একটি কোরবানগাহ্ তৈরি করবো।
4 তাতে তারা তাদের কাছে যেসব বিজাতীয় দেবমূর্তি ও কানের গহনা ছিল, তা সবই ইয়াকুবকে দিল এবং তিনি ঐ সকল শিখিমের নিকটবর্তী এলা গাছের তলে পুঁতে রাখলেন।
5 পরে তাঁরা সেখান থেকে যাত্রা করলেন। তখন চারদিকের নগরগুলোতে আল্লাহ্ থেকে বিপদ উপস্থিত হল, তাই সেখানকার লোকেরা ইয়াকুবের পুত্রদের পিছনে তাড়া করে এলো না।
6 পরে ইয়াকুব ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে কেনান দেশের লূস নগরে অর্থাৎ বেথেলে উপস্থিত হলেন।
7 সেখানে তিনি একটি কোরবানগাহ্ তৈরি করে সেই স্থানের নাম এল্-বৈথেল (বৈথেলের আল্লাহ্) রাখলেন; কারণ ভাইয়ের সম্মুখ থেকে তাঁর পলায়নকালে আল্লাহ্ সেই স্থানে তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন।
8 সে সময় রেবেকার ধাত্রী দবোরার মৃত্যু হল এবং বেথেলের অধঃস্থিত অলোন গাছের তলে তার কবর হল। সেই স্থানের নাম অলোন্-বাখুৎ (রোদন-বৃক্ষ) রাখা হল।
9 পদ্দন্-অরাম থেকে ইয়াকুব ফিরে আসলে আল্লাহ্ তাঁকে পুনর্বার দর্শন দিয়ে দোয়া করলেন।
10 ফলত আল্লাহ্ তাঁকে বললেন, তোমার নাম ইয়াকুব; লোকে তোমাকে আর ইয়াকুব বলবে না, তোমার নাম ইসরাইল হবে; আর তিনি তাঁর নাম ইসরাইল রাখলেন।
11 আল্লাহ্ তাঁকে আরও বললেন, আমিই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্, তুমি প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও; তোমার মধ্য থেকে একটি জাতি, এমন কি, বহুজাতি উৎপন্ন হবে, আর তোমার বংশ থেকে অনেক বাদশাহ্ উৎপন্ন হবে।
12 আর আমি ইব্রাহিম ও ইস্হাককে যে দেশ দান করেছি সেই দেশ তোমাকে ও তোমার ভবিষ্যৎ বংশকে দেব।
13 সেই স্থানে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলে আল্লাহ্ তাঁর কাছ থেকে উপরের দিকে উঠে গেলেন।
14 আর ইয়াকুব সেই কথোপকথন স্থানে একটি স্তম্ভ, পাথরের স্তম্ভ, স্থাপন করে তার উপরে পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন ও তেল ঢেলে দিলেন।
15 যে স্থানে আল্লাহ্ তাঁর সঙ্গে কথা বললেন, ইয়াকুব সেই স্থানের নাম রাখলেন বেথেল ।
16 পরে তাঁরা বেথেল থেকে প্রস্থান করলেন, আর ইফ্রাথে উপস্থিত হবার অল্প পথ অবশিষ্ট থাকতে রাহেলার প্রসব-বেদনা হল এবং তাঁর প্রসব করতে বড় কষ্ট হল।
17 আর প্রসব বেদনা কঠিন হলে ধাত্রী তাঁকে বললো, ভয় করো না, কারণ এবারও তোমার পুত্র সন্তান হবে।
18 পরে তাঁর মৃত্যু হল, আর তাঁর মৃত্যুর সময়ে তিনি পুত্রের নাম বিনোনী (আমার কষ্টের পুত্র) রাখলেন, কিন্তু তার পিতা তার নাম বিন্ইয়ামীন (ডান হাতের পুত্র) রাখলেন।
19 এভাবে রাহেলার মৃত্যু হল এবং ইফ্রাথ অর্থাৎ বেথেলহেমের পথের পাশে তাঁকে দাফন করা হল।
20 পরে ইয়াকুব তাঁর কবরের উপরে একটি স্তম্ভ স্থাপন করলেন, রাহেলার সেই সমাধিস্তম্ভ আজও আছে।
21 পরে ইসরাইল সেখান থেকে যাত্রা করলেন এবং মিগ্দল-এদরের অপর পাশে তাঁবু স্থাপন করলেন।
22 সেই দেশে ইসরাইলের অবস্থিতিকালে রূবেণ গিয়ে তাঁর পিতার উপপত্নী বিল্হার সঙ্গে শয়ন করলো এবং ইসরাইল তা শুনতে পেলেন।
23 ইয়াকুবের বারো জন পুত্র। লেয়ার সন্তান; ইয়াকুবের জ্যেষ্ঠ পুত্র রূবেণ এবং শিমিয়োন, লেবি, এহুদা, ইষাখর ও সবূলূন।
24 রাহেলার সন্তান; ইউসুফ ও বিন্ইয়ামীন।
25 রাহেলার বাঁদী বিল্হার সন্তান; দান ও নপ্তালি।
26 লেয়ার বাঁদী সিল্পার সন্তান; গাদ ও আশের। এরা ইয়াকুবের পুত্র, পদ্দন্-অরামে জন্মগ্রহণ করেছিল।
27 পরে কিরিয়থর্বের অর্থাৎ হেবরনের নিকটবর্তী মম্রি নামক যে স্থানে ইব্রাহিম ও ইস্হাক প্রবাস করেছিলেন, সেই স্থানে ইয়াকুব তাঁর পিতা ইস্হাকের কাছে উপস্থিত হলেন।
28 ইস্হাকের বয়স এক শত আশি বছর হয়েছিল।
29 পরে ইস্হাক বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হয়ে প্রাণত্যাগ করে আপন লোকদের কাছে গৃহীত হলেন এবং তাঁর পুত্র ইস্ ও ইয়াকুব তাঁকে দাফন করলেন।