1 মূসা তাঁর শ্বশুর শোয়াইব নামক মাদিয়ানীয় ইমামের ভেড়ার পাল চরাতেন। একদিন তিনি মরুভূমির পিছনে ভাগে ভেড়ার পাল নিয়ে গিয়ে আল্লাহ্র পর্বত সেই হোরেবে উপস্থিত হলেন।
2 আর ঝোপের মাঝখানে আগুনের শিখার মধ্য থেকে মাবুদের ফেরেশতা তাঁকে দর্শন দিলেন; তখন তিনি তাকিয়ে দেখলেন ঝোপ আগুনে জ্বলছে, কিন্তু ঝোপ পুড়ে যাচ্ছে না।
3 তাই মূসা বললেন, আমি এক পাশে গিয়ে এই মহা আশ্চর্য দৃশ্য দেখি, কেন ঝোপ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে না?
4 কিন্তু মাবুদ যখন দেখলেন যে, তিনি দেখবার জন্য এক পাশে যাচ্ছেন তখন ঝোপের মধ্য থেকে আল্লাহ্ তাঁকে ডেকে বললেন, মূসা, মূসা! তিনি জবাবে বললেন, দেখুন, এই তো আমি।
5 তখন মাবুদ বললেন, এই স্থানের নিকটবর্তী হয়ো না, তোমার পা থেকে জুতা খুলে ফেল; কেননা যে স্থানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ তা পবিত্র ভূমি।
6 তিনি আরও বললেন, আমি তোমার পিতার আল্লাহ্, ইব্রাহিমের আল্লাহ্, ইস্হাকের আল্লাহ্ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্। তখন মূসা নিজের মুখ আচ্ছাদন করলেন, কেননা তিনি আল্লাহ্র প্রতি দৃষ্টিপাত করতে ভয় পেয়েছিলেন।
7 পরে মাবুদ বললেন, সত্যিই আমি মিসর দেশে আমার প্রজা বনি-ইসরাইলদের কষ্ট দেখেছি এবং শাসকদের সম্মুখে তাদের কান্নার আওয়াজ শুনেছি; ফলত আমি তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা জানি।
8 আর মিসরীয়দের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করার জন্য এবং সেই দেশ থেকে উঠিয়ে নিয়ে উত্তম ও প্রশস্ত একটি দেশে, অর্থাৎ কেনানীয়, হিট্টিয়, আমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় লোকেরা যে স্থানে থাকে, সেই দুগ্ধ-মধু-প্রবাহী দেশে তাদেরকে নিয়ে যাবার জন্য নেমে এসেছি।
9 এখন দেখ, বনি-ইসরাইলদের কান্না আমার কাছে উপস্থিত হয়েছে এবং মিসরীয়েরা তাদের প্রতি যে জুলুম করে তা আমি দেখেছি।
10 অতএব এখন এসো, আমি তোমাকে ফেরাউনের কাছে প্রেরণ করি, তুমি মিসর থেকে আমার লোক বনি-ইসরাইলদের বের করে আনো।
11 মূসা আল্লাহ্কে বললেন, আমি কে যে ফেরাউনের কাছে যাই ও মিসর থেকে বনি-ইসরাইলদেরকে বের করে আনি?
12 তিনি বললেন, নিশ্চয় আমি তোমার সহবর্তী হব এবং আমি যে তোমাকে প্রেরণ করলাম, তোমার পক্ষে তার এই চিহ্ন হবে; তুমি মিসর থেকে লোকদের বের করে আনার পর তোমরা এই পর্বতে আল্লাহ্র সেবা করবে।
13 পরে মূসা আল্লাহ্কে বললেন, দেখ, আমি যখন বনি-ইসরাইলদের কাছে গিয়ে বলবো, তোমাদের পূর্বপুরুষদের আল্লাহ্ তোমাদের কাছে আমাকে প্রেরণ করেছেন, তখন যদি তারা জিজ্ঞাসা করে, তাঁর নাম কি? তবে তাদেরকে আমি কি বলবো?
14 আল্লাহ্ মূসাকে বললেন, “আমি যে আছি, সেই আছি;” আরও বললেন, বনি-ইসরাইলদের এরকম বলো, “আছি” তোমাদের কাছে আমাকে প্রেরণ করেছেন।
15 আল্লাহ্ মূসাকে আরও বললেন, তুমি বনি-ইসরাইলদের এই কথা বলো, মাবুদ, তোমাদের পূর্বপুরুষদের আল্লাহ্, ইব্রাহিমের আল্লাহ্, ইস্হাকের আল্লাহ্ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্ তোমাদের কাছে আমাকে পাঠিয়েছেন; আমার এই নাম অনন্তকালস্থায়ী এবং এই নাম দ্বারা আমি পুরুষে পুরুষে স্মরণীয়।
16 তুমি যাও, ইসরাইলের প্রাচীনদের একত্র কর, তাদেরকে এই কথা বল, মাবুদ, তোমাদের পূর্বপুরুষদের আল্লাহ্, ইব্রাহিমের, ইস্হাকের ও ইয়াকুবের আল্লাহ্ আমাকে দর্শন দিয়ে বললেন, সত্যিই আমি তোমাদের প্রতি মনোযোগ দিয়েছি এবং মিসরে তোমাদের প্রতি যা করা হচ্ছে তা দেখেছি।
17 আর আমি বলেছি, আমি মিসরের নির্যাতন থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করে কেনানীয়দের, হিট্টিয়দের, আমোরীয়দের, পরিষীয়দের, হিব্বীয়দের ও যিবূষীয়দের দেশে— দুগ্ধ-মধু-প্রবাহী দেশে নিয়ে যাব।
18 তারা তোমার কথায় মনোযোগ দেবে; তখন তুমি ও ইসরাইলের প্রাচীন লোকেরা মিসরের বাদশাহ্র কাছে যাবে, তাকে বলবে, ইবরানীদের মাবুদ আল্লাহ্ আমাদেরকে দেখা দিয়েছেন; অতএব আরজ করি, আমাদেরকে অনুমতি দিন যাতে আমরা মরুভূমির মধ্যে তিন দিনের পথ গিয়ে আমাদের আল্লাহ্ মাবুদের উদ্দেশে পশু কোরবানী করতে পারি।
19 কিন্তু আমি জানি, পরাক্রান্ত হাত দেখালেও মিসরের বাদশাহ্ তোমাদের যেতে দেবে না।
20 এর পর আমি হাত বাড়িয়ে দেবো এবং দেশের মধ্যে যে সমস্ত অলৌকিক কাজ করবো তা দিয়ে মিসরকে আঘাত করবো। এর পরে সে তোমাদেরকে যেতে দেবে।
21 আর আমি মিসরীয়দের কাছে এই লোকদেরকে অনুগ্রহের পাত্র করবো; তাতে তোমরা যাত্রাকালে খালি হাতে যাবে না;
22 কিন্তু প্রত্যেক স্ত্রী নিজ নিজ প্রতিবাসিনী কিংবা বাড়িতে প্রবাসিনী স্ত্রীর কাছে রূপার অলংকার, সোনার অলংকার ও কাপড় চাইবে; তোমরা তা দিয়ে নিজ নিজ পুত্র-কন্যাদের সাজাবে; এভাবে তোমরা মিসরীয়দের জিনিস অধিকার করে নেবে।