1 মূসা জবাবে বললেন, কিন্তু দেখুন, তারা আমাকে বিশ্বাস করবে না এবং আমার আহ্বানে মনোযোগ দেবে না, কেননা তারা বলবে, মাবুদ তোমাকে দর্শন দেন নি।
2 তখন মাবুদ তাঁকে বললেন, তোমার হাতে ওটা কি? তিনি বললেন, লাঠি। তখন তিনি বললেন, ওটা ভূমিতে ফেল।
3 পরে মূসা তাঁর লাঠিখানা ভূমিতে ফেললে পর তা সাপ হয়ে গেলো; আর তিনি তার সম্মুখ থেকে পালিয়ে গেলেন।
4 তখন মাবুদ মূসাকে বললেন, “হাত বাড়িয়ে ওর লেজ ধর”, তখন তিনি হাত বাড়িয়ে ধরলে ওটা তাঁর হাতে লাঠি হল—
5 “যেন তারা বিশ্বাস করে যে, মাবুদ, তাদের পূর্বপুরুষদের আল্লাহ্, ইব্রাহিমের আল্লাহ্, ইস্হাকের আল্লাহ্ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্ তোমাকে দর্শন দিয়েছেন।”
6 পরে মাবুদ তাঁকে আরও বললেন, তুমি পোশাকের নিচে তোমার বুকে হাত দাও। তিনি বুকে হাত দিলেন এবং পরে তা বের করলে দেখা গেল, তাঁর হাত তুষারের মত সাদা কুষ্ঠ হয়েছে।
7 পরে তিনি বললেন, “তুমি পোশাকের নিচে তোমার বুকে হাত দাও”। তিনি আবার বুকে হাত দিলেন এবং পরে বুক থেকে হাত বের করে দেখলেন তা পুনরায় আগের মত হয়ে গেছে।
8 “তারা যদি তোমাকে বিশ্বাস না করে এবং ঐ প্রথম চিহ্নেও মনোযোগ না দেয় তবে দ্বিতীয় চিহ্নে বিশ্বাস করবে।
9 আর এই দু’টি চিহ্নেও যদি বিশ্বাস না করে ও তোমার আহ্বানে সাড়া না দেয় তবে তুমি নদীর কিছু পানি নিয়ে শুকনো ভূমিতে ঢেলে দিও। তাতে তুমি নদী থেকে যে পানি তুলবে, তা শুকনো ভূমিতে রক্ত হয়ে যাবে।”
10 পরে মূসা মাবুদকে বললেন, হে আমার মালিক! আমি বাক্পটু নই, এর আগেও ছিলাম না, বা এই গোলামের সঙ্গে তোমার আলাপ করার পরেও নই; কারণ আমার জিহ্বায় জড়তা আছে।
11 মাবুদ তাঁকে বললেন, মানুষের মুখ কে তৈরি করেছে? আর বোবা, বধির, দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন বা অন্ধকে কে তৈরি করে? আমি মাবুদই কি করি না?
12 এখন তুমি যাও; আমি তোমার মুখের সহবর্তী হব এবং কি বলতে হবে তা তোমাকে জানাবো।
13 তিনি বললেন, হে আমার মালিক, আরজ করি, যার হাতে পাঠাতে চাও তো পাঠাও।
14 তখন মূসার প্রতি মাবুদের ক্রোধ প্রজ্বলিত হল; তিনি বললেন, তোমার ভাই লেবীয় হারুন কি নেই? আমি জানি সে সুবক্তা; আরও দেখ, সে তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসছে এবং তোমাকে দেখে আনন্দিত হবে।
15 তুমি তাকে নির্দেশ দেবে ও কি বলতে হবে তা তাকে জানিয়ে দেবে। আমি তোমার ও তার সহায় হব ও কি করতে হবে তা তোমাদের জানাবো।
16 তোমার পক্ষে সে লোকদের কাছে বক্তা হবে; ফলত সে তোমার মুখপাত্র হবে এবং তুমি তার আল্লাহ্স্বরূপ হবে।
17 আর তুমি এই লাঠিটি হাতে নেবে আর এই লাঠি দ্বারাই তোমাকে সেসব চিহ্ন-কাজ করতে হবে।
18 পরে মূসা তাঁর শ্বশুর শোয়াইবের কাছে ফিরে এসে বললেন, আরজ করি, মিসরে অবস্থিত আমার ভাইদের কাছে ফিরে যেতে আমাকে বিদায় দিন। আমি গিয়ে দেখতে চাই তারা এখনও জীবিত আছে কি না। শোয়াইব মূসাকে বললেন, সহিসালামতে যাও।
19 আর মাবুদ মাদিয়ানে মূসাকে বললেন, তুমি মিসরে ফিরে যাও; কেননা যে লোকেরা তোমার প্রাণনাশের চেষ্টা করছিলো, তারা সকলে মারা গেছে।
20 তখন মূসা তাঁর স্ত্রী ও পুত্রদের গাধার পিঠে চড়িয়ে মিসর দেশে ফিরে গেলেন এবং মূসা আল্লাহ্র সেই লাঠিটি নিজের হাতে করে নিলেন।
21 মাবুদ মূসাকে বললেন, তুমি যখন মিসরে ফিরে যাবে, দেখো, আমি তোমার হাতে যে সমস্ত অলৌকিক কাজের ভার দিয়েছি, ফেরাউনের সাক্ষাতে সেসব করো; কিন্তু আমি তার অন্তর কঠিন করবো, সে লোকদেরকে ছেড়ে দেবে না।
22 আর তুমি ফেরাউনকে বলবে, মাবুদ এই কথা বলেন, ইসরাইল আমার পুত্র, আমার প্রথমজাত।
23 আমি তোমাকে বলেছি, আমার এবাদত করার জন্য আমার পুত্রকে ছেড়ে দাও; কিন্তু তুমি তাকে ছেড়ে দিতে অসম্মত হলে; দেখ, আমি তোমার পুত্রকে, তোমার প্রথম-জাতকে, হত্যা করবো।
24 পরে পথে পান্থশালায় মাবুদ তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন।
25 তখন সফুরা একখানি পাথরের ছুরি নিয়ে তাঁর পুত্রের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কেটে নিলেন এবং তা তাঁর পায়ের কাছে ফেলে দিয়ে বললেন, আমার পক্ষে তুমি রক্তের বর।
26 আর আল্লাহ্ তাঁকে ছেড়ে দিলেন; তখন সফুরা বললেন, খৎনা সম্বন্ধে তুমি রক্তের বর।
27 তখন মাবুদ হারুনকে বললেন, তুমি মূসার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মরুভূমিতে যাও। তাতে তিনি গিয়ে আল্লাহ্র পর্বতে তাঁর দেখা পেয়ে তাঁকে চুম্বন করলেন।
28 মাবুদ মূসাকে প্রেরণ করার সময় যা যা বলেছিলেন সেসব কথা তিনি হারুনকে জানালেন এবং যেসব চিহ্ন-কাজ করার হুকুম দিয়েছিলেন তাও তিনি হারুনকে বুঝিয়ে বললেন।
29 পরে মূসা ও হারুন গিয়ে বনি-ইসরাইলদের সমস্ত প্রাচীন ব্যক্তিকে একত্র করলেন।
30 মাবুদ মূসাকে যে সমস্ত কথা বলেছিলেন হারুন তাদেরকে সমস্তই জানালেন এবং তিনি লোকদের সম্মুখে সেসব চিহ্ন-কাজ দেখালেন।
31 তাতে লোকেরা ঈমান আনলো; আর মাবুদ বনি-ইসরাইলদের প্রতি তত্ত্বাবধান করেছেন ও তাদের দুঃখ দেখেছেন, এই কথা শুনে তারা মাবুদের উদ্দেশে সেজদা করলো।