1 আর শয়তান ইসরাইলের প্রতিকূলে দাঁড়িয়ে ইসরাইলকে গণনা করতে দাউদকে প্রবৃত্তি দিল।
2 তখন দাউদ যোয়াব ও সৈন্যদলের সেনাপতিদের বললেন, যাও, তোমরা বের্-শেবা থেকে দান পর্যন্ত ইসরাইলের সংখ্যা গণনা কর, পরে আমার কাছে সংবাদ আন, আমি তাদের সংখ্যা জানবো।
3 তখন যোয়াব বললেন, এখন যত লোক আছে, মাবুদ তার শত গুণ বেশি তাঁর লোক বৃদ্ধি করুন; কিন্তু হে আমার মালিক বাদশাহ্, তারা সকলে কি আমার প্রভুর গোলাম নয়? আমার প্রভু এই চেষ্টা কেন করছেন? আপনি ইসরাইলের দোষের কারণ কেন হবেন?
4 তবুও যোয়াবের উপরে বাদশাহ্র কথাই প্রবল হল। তাতে যোয়াব প্রস্থান করে সমস্ত ইসরাইলের মধ্যে পর্যটন করলেন, পরে জেরুশালেমে আসলেন।
5 আর যোয়াব গণনা-করা লোকদের সংখ্যা দাউদের কাছে দিলেন। সমস্ত ইসরাইলের এগার লক্ষ তলোয়ারধারী লোক ও এহুদার চার লক্ষ সত্তর হাজার তলোয়ারধারী লোক ছিল।
6 কিন্তু তাদের মধ্যে তিনি লেবি ও বিন্ইয়ামীন বংশকে গণনা করেন নি, কারণ বাদশাহ্র কথায় যোয়াবের ঘৃণা হয়েছিল।
7 আর আল্লাহ্ এই কাজে অসন্তুষ্ট হলেন, তাই তিনি ইসরাইলকে আঘাত করলেন।
8 পরে দাউদ আল্লাহ্কে বললেন, এই কাজ করে আমি মহাগুনাহ্ করেছি, কিন্তু এখন আরজ করি, নিজের গোলামের অপরাধ মাফ কর; কেননা আমি বড়ই অজ্ঞানের কাজ করেছি।
9 পরে মাবুদ দাউদের দর্শক গাদকে এই কথা বললেন;
10 তুমি গিয়ে দাউদকে বল, মাবুদ এই কথা বলেন, আমি তোমার সম্মুখে তিনটি দণ্ড রাখলাম, তার মধ্যে তুমি একটা মনোনীত কর, আমি তোমার প্রতি তা-ই করবো।
11 পরে গাদ দাউদের কাছে এসে তাঁকে বললেন, মাবুদ এই কথা বলেন, তুমি যেটা ইচ্ছা গ্রহণ কর;
12 হয় তিন বছর দুর্ভিক্ষ, নয় তিন মাস পর্যন্ত দুশমনদের তলোয়ার তোমাকে পেয়ে বসলে তোমার বিপক্ষ লোকদের সম্মুখে সংহার, নয় তো তিন দিন পর্যন্ত মাবুদের তলোয়ার, অর্থাৎ দেশে মহামারী এবং ইসরাইলের সমস্ত অঞ্চলে মাবুদের বিনাশক ফেরেশতার ভ্রমণ। যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে কি উত্তর দেব তা এখন বিবেচনা করে দেখুন।
13 দাউদ গাদকে বললেন, আমি বড়ই বিপদগ্রস্ত হলাম; আমি যেন মানুষের হাতে না পড়ি কিন্তু মাবুদের হাতে পড়ি, কেননা তাঁর করুণা প্রচুর।
14 পরে মাবুদ ইসরাইলের উপরে মহামারী পাঠালেন, তাতে ইসরাইলের সত্তর হাজার লোক মারা পড়লো।
15 আর আল্লাহ্ জেরুশালেম বিনষ্ট করার জন্য এক জন ফেরেশতাকে সেখানে প্রেরণ করলেন; তিনি যখন বিনাশ করতে উদ্যত হলেন তখন মাবুদ সেই ভীষণ শাস্তি দেওয়া থেকে মন ফিরালেন এবং বিনাশক ফেরেশতাকে বললেন, যথেষ্ট হয়েছে, এখন তোমার হাত সঙ্কুচিত কর। তখন মাবুদের ফেরেশতা যিবূষীয় অরৌণার খামারের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
16 আর দাউদ চোখ তুলে দেখলেন, মাবুদের ফেরেশতা দুনিয়া ও আসমানের মধ্যপথে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর হাতে জেরুশালেমের উপরে প্রসারিত উম্মুক্ত তলোয়ার। তখন দাউদ ও প্রাচীনেরা চট পরিহিত ছিলেন, তাঁরা অমনি উবুড় হয়ে পড়লেন।
17 আর দাউদ আল্লাহ্কে বললেন, লোকদেরকে গণনা করতে যে হুকুম দিয়েছিল, সে কি আমি নই? আমিই গুনাহ্ করেছি, আমিই বড় অপরাধ করেছি, কিন্তু এই মেষেরা কি করলো? হে আমার আল্লাহ্ মাবুদ, আরজ করি, আমারই বিরুদ্ধে ও আমার পিতৃকুলের বিরুদ্ধে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও; কিন্তু তোমার লোকদেরকে প্রহার করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিও না।
18 পরে মাবুদের ফেরেশতা দাউদকে বলবার জন্য গাদকে বললেন, দাউদ গিয়ে যিবূষীয় অরৌণার খামারে মাবুদের উদ্দেশে একটি কোরবানগাহ্ স্থাপন করুক।
19 অতএব মাবুদের নামে কথিত গাদের কালাম অনুসারে দাউদ উঠে গেলেন।
20 পরে অরৌণা মুখ ফিরিয়ে ফেরেশতাকে দেখতে পেল, আর তার সঙ্গে যে চার পুত্র ছিল তারা গিয়ে লুকাল।
21 তখন অরৌণা গম মাড়াচ্ছিল। কিন্তু দাউদ অরৌণার কাছে আসলে অরৌণা চোখ তুলে দাউদকে দেখে খামার থেকে বাইরে এসে ভূমিতে উবুড় হয়ে দাউদকে সালাম করলো।
22 তখন দাউদ অরৌণাকে বললেন, তুমি এই খামারের স্থানটি আমাকে দাও, আমি এই স্থানে মাবুদের উদ্দেশে একটি কোরবানগাহ্ তৈরি করি; তুমি সমপূর্ণ মূল্য নিয়ে এটা আমাকে দাও; তা হলে লোকদের মধ্যে মহামারী নিবৃত্ত হবে।
23 তখন অরৌণা দাউদকে বললো আপনি এটি গ্রহণ করুন, আমার মালিক বাদশাহ্র দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয়, তা-ই করুন; দেখুন আমি পোড়ানো-কোরবানীর জন্য এই ষাঁড়গুলো, কাঠের জন্য এই মাড়াই-যন্ত্র ও শস্য-উৎসর্গের জন্য এই গম দিচ্ছি, সমস্তই দিচ্ছি।
24 বাদশাহ্ দাউদ অরৌণাকে বললেন, তা নয়, আমি অবশ্য সমপূর্ণ মূল্য দিয়ে এগুলো ক্রয় করবো; কেননা তোমার যা, আমি মাবুদের জন্য তা নেব না, বিনামূল্যে পোড়ানো-কোরবানী করবো না।
25 পরে দাউদ সেই স্থানের জন্য ছয় শত শেকল সোনা ওজন করে অরৌণাকে দিলেন।
26 আর দাউদ সেই স্থানে মাবুদের উদ্দেশে একটি কোরবানগাহ্ তৈরি করে পোড়ানো-কোরবানী ও মঙ্গল-কোরবানী করলেন, আর মাবুদকে ডাকলেন, তাতে তিনি আসমান থেকে কোরবানগাহ্র উপরে আগুন বর্ষণ করে তাঁকে জবাব দিলেন।
27 পরে মাবুদ তাঁর ফেরেশতাকে হুকুম করলে তিনি তাঁর তলোয়ার পুনরায় কোষে রাখলেন।
28 সেই সময়ে যখন দাউদ দেখলেন, মাবুদ যিবূষীয় অরৌণার খামারে তাঁকে মুনাজাতের উত্তর দিলেন, তখন তিনি সেই স্থানে কোরবানী করলেন।
29 কেননা মাবুদের শরীয়ত-তাঁবু, যা মূসা মরুভূমিতে নির্মাণ করেছিলেন, সেটি এবং পোড়ানো-কোরবানীর কোরবানগাহ্টি সেই সময়ে গিবিয়োনস্থ উচ্চস্থলীতে ছিল।
30 কিন্তু আল্লাহ্র কাছে জিজ্ঞাসা করার জন্য সেই স্থানের সম্মুখে গমন করা দাউদের পক্ষে সম্ভব হল না, কারণ মাবুদের ফেরেশতার তলোয়ারকে তিনি ভয় পেয়েছিলেন।
31 তখন দাউদ বললেন, এটিই মাবুদ আল্লাহ্র গৃহের স্থান, এটিই ইসরাইলের কোরবানগাহ্র স্থান।