1 সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, যে কেউ দ্বার দিয়ে মেষদের খোঁয়াড়ে প্রবেশ না করে, কিন্তু আর কোন দিক দিয়ে প্রবেশ করে, সে চোর ও দস্যু।
2 কিন্তু যে দ্বার দিয়ে প্রবেশ করে, সে মেষদের পালক।
3 তাকেই দারোয়ান দ্বার খুলে দেয় এবং মেষেরা তার গলার আওয়াজ শুনে; আর সে নাম ধরে তার নিজের মেষগুলোকে ডাকে ও বাইরে নিয়ে যায়।
4 যখন সে নিজের মেষগুলোকে বের করে, তখন তাদের আগে আগে গমন করে; আর মেষেরা তার পিছনে পিছনে চলে, কারণ তারা তার কণ্ঠস্বর জানে।
5 কিন্তু তারা কোন মতে অপর লোকের পিছনে যাবে না, বরং তার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে; কারণ অপর লোকদের গলার আওয়াজ তারা চেনে না।
6 এই দৃষ্টান্তটি ঈসা তাদেরকে বললেন, কিন্তু তিনি তাদেরকে যে কি বললেন, তা তারা বুঝলো না।
7 অতএব ঈসা পুনর্বার তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, আমিই মেষদের দ্বার।
8 যারা আমার আগে এসেছিল, তারা সকলে চোর ও দস্যু, কিন্তু মেষেরা তাদের কথা শুনে নি।
9 আমিই দ্বার, আমার মধ্য দিয়ে যদি কেউ প্রবেশ করে, সে নাজাত পাবে এবং ভিতরে আসবে ও বাইরে যাবে ও চরানি পাবে।
10 চোর আসে, কেবল যেন চুরি, খুন ও বিনাশ করতে পারে; আমি এসেছি, যেন তারা জীবন পায় ও জীবনের উপচয় পায়।
11 আমিই উত্তম মেষপালক; উত্তম মেষপালক মেষদের জন্য আপন প্রাণ সমর্পণ করে।
12 যে বেতনজীবী, মেষপালক নয়, মেষগুলো যার নিজের নয়, সে নেকড়ে বাঘ আসতে দেখলে মেষগুলো ফেলে পালিয়ে যায়; তাতে নেকড়ে বাঘ মেষগুলোকে ধরে নিয়ে যায় ও তারা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে;
13 সে পালিয়ে যায়, কারণ সে বেতনজীবী, মেষগুলোর জন্য চিন্তা করে না।
14 আমিই উত্তম মেষপালক; আমার নিজের সকলকে আমি জানি এবং আমার নিজের সকলে আমাকে জানে,
15 যেমন পিতা আমাকে জনেন ও আমি পিতাকে জানি; এবং মেষদের জন্য আমি আপন প্রাণ সমর্পণ করি।
16 আমার আরও মেষ আছে, সেসব এই খোঁয়াড়ের নয়; তাদেরকেও আমার আনতে হবে এবং তারা আমার কণ্ঠস্বর শুনবে, তাতে এক পাল ও এক পালক হবে।
17 পিতা আমাকে এজন্য মহব্বত করেন, কারণ আমি আপন প্রাণ সমর্পণ করি, যেন পুনরায় তা গ্রহণ করি।
18 কেউ আমার কাছ থেকে তা হরণ করে না, বরং আমি নিজে থেকেই তা সমর্পণ করি। তা সমর্পণ করতে আমার ক্ষমতা আছে এবং পুনরায় তা গ্রহণ করতেও আমার ক্ষমতা আছে; এই হুকুম আমি আমার পিতার কাছ থেকে পেয়েছি।
19 এসব কথার জন্য ইহুদীদের মধ্যে পুনরায় মতভেদ দেখা দিল।
20 তাদের মধ্যে অনেকে বললো, একে বদ-রূহে পেয়েছে ও সে পাগল, এর কথা কেন শুনছো?
21 অন্যেরা বললো, এসব তো বদ-রূহে পাওয়া লোকের কথা নয়; বদ-রূহ্ কি অন্ধদের চোখ খুলে দিতে পারে?
22 সেই সময়ে জেরুশালেমে এবাদতখানা-প্রতিষ্ঠার ঈদ উপস্থিত হল;
23 তখন শীতকাল আর ঈসা বায়তুল-মোকাদ্দসে সোলায়মানের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।
24 তাতে ইহুদীরা তাঁকে ঘিরে বলতে লাগল, আর কত কাল আমাদের সন্দেহের মধ্যে রাখবে? তুমি যদি মসীহ্ হও তবে স্পষ্ট করে আমাদেরকে বল।
25 ঈসা জবাবে বললেন, আমি তোমাদেরকে বলেছি, তবুও তোমরা বিশ্বাস কর না। আমি যেসব কাজ আমার পিতার নামে করছি, সেসব আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
26 কিন্তু তোমরা বিশ্বাস কর না, কারণ তোমরা আমার মেষদের মধ্যে নও।
27 আমার মেষেরা আমার কণ্ঠস্বর শোনে, আর আমি তাদেরকে জানি এবং তারা আমার পিছনে পিছনে চলে;
28 আর আমি তাদেরকে অনন্ত জীবন দিই, তারা কখনই বিনষ্ট হবে না এবং কেউই আমার হাত থেকে তাদেরকে কেড়ে নেবে না।
29 আমার পিতা, যিনি তাদের আমাকে দিয়েছেন, তিনি সবচেয়ে মহান; এবং কেউই পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারে না।
30 আমি ও পিতা, আমরা এক।
31 ইহুদীরা আবার তাঁকে মারবার জন্য পাথর তুললো।
32 ঈসা তাদেরকে জবাবে বললেন, পিতা থেকে তোমাদেরকে অনেক উত্তম কাজ দেখিয়েছি, তার কোন্ কাজের জন্য আমাকে পাথর মারতে চাও?
33 ইহুদীরা তাঁকে এই জবাব দিল, উত্তম কাজের জন্য তোমাকে পাথর মারতে চাই না, কিন্তু কুফরী করার জন্য পাথর মারি, কারণ তুমি মানুষ হয়ে নিজেকে আল্লাহ্ বলে দাবী করছো।
34 ঈসা তাদেরকে জবাবে বললেন, তোমাদের শরীয়তে কি লেখা নেই, “আমি বললাম, তোমরা আল্লাহ্”?
35 যাদের কাছে আল্লাহ্র কালাম উপস্থিত হয়েছিল, তিনি যদি তাদেরকে আল্লাহ্ বলেন— আর
36 পাক-কিতাবের কথা তো খণ্ডন হতে পারে না— তবে যাঁকে পিতা পবিত্র করলেন ও দুনিয়াতে প্রেরণ করলেন, তোমরা কি তাঁকে বল যে, তুমি কুফরী করছো, কেননা আমি বললাম যে, আমি ইবনুল্লাহ্?
37 আমার পিতার কাজ যদি না করি, তবে আমাকে বিশ্বাস করো না।
38 কিন্তু যদি করি, আমাকে বিশ্বাস না করলেও, সেই কাজে বিশ্বাস কর; যেন তোমরা জানতে পার ও বুঝতে পার যে, পিতা আমার মধ্যে আছেন এবং আমি পিতার মধ্যে আছি।
39 তারা আবার তাঁকে ধরতে চেষ্টা করলো, কিন্তু তিনি তাদের হাত এড়িয়ে বের হয়ে গেলেন।
40 পরে তিনি আবার জর্ডান নদীর অন্য পারে, যেখানে ইয়াহিয়া প্রথমে বাপ্তিস্ম দিতেন, সেই স্থানে গেলেন; আর সেখানে থাকতে লাগলেন।
41 তাতে অনেকে তাঁর কাছে আসল এবং বললো, ইয়াহিয়া কোন চিহ্ন-কাজ করেন নি, কিন্তু এই ব্যক্তির বিষয়ে ইয়াহিয়া যেসব কথা বলেছিলেন, সে সবই সত্যি।
42 আর সেখানে অনেকে তাঁর উপর ঈমান আনলো।