1 এসব কথা তোমাদেরকে বললাম, যেন তোমরা মনে বাধা না পাও।
2 লোকে তোমাদেরকে সমাজ থেকে বের করে দেবে; এমন কি, সময় আসছে, যখন যে কেউ তোমাদেরকে হত্যা করে, সে মনে করবে, আমি আল্লাহ্র উদ্দেশে এবাদতরূপ কোরবানী করলাম।
3 তারা এসব করবে, কারণ তারা না পিতাকে, না আমাকে জানতে পেরেছে।
4 কিন্তু আমি তোমাদেরকে এসব বললাম, যেন এই সকলের সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন তোমরা স্মরণ করতে পার যে, আমি তোমাদেরকে এসব বলেছি। প্রথম থেকে এসব তোমাদেরকে বলি নি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম।
5 কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁর কাছে এখন যাচ্ছি, আর তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করে না, কোথায় যাচ্ছেন?
6 কিন্তু তোমাদেরকে এসব বললাম, সেজন্য তোমাদের অন্তর দুঃখে পরিপূর্ণ হয়েছে।
7 তবুও আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি না গেলে সেই সহায় তোমাদের কাছে আসবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই, তবে তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠিয়ে দেব।
8 আর তিনি এসে গুনাহ্র সম্বন্ধে, ধার্মিকতার সম্বন্ধে ও বিচারের সম্বন্ধে, জগৎকে দোষী করবেন।
9 গুনাহ্র সম্বন্ধে, কেননা তারা আমার উপর ঈমান আনে না;
10 ধার্মিকতার সম্বন্ধে, কেননা আমি পিতার কাছে যাচ্ছি ও তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না;
11 বিচারের সম্বন্ধে, কেননা এই দুনিয়ার অধিপতিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
12 তোমাদেরকে বলবার আমার আরও অনেক কথা আছে, কিন্তু তোমরা এখন সেসব সহ্য করতে পার না।
13 যখন তিনি, সত্যের রূহ্ আসবেন তখন পথ দেখিয়ে তোমাদেরকে পূর্ণ সত্যে নিয়ে যাবেন; কারণ তিনি নিজের থেকে কিছু বলবেন না, কিন্তু যা যা শোনেন, তা-ই বলবেন এবং আগামী ঘটনাও তোমাদেরকে জানাবেন।
14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন; কেননা যা আমার, তা-ই নিয়ে তোমাদেরকে জানাবেন।
15 পিতার যা যা আছে, সকলই আমার; এজন্য বললাম, যা আমার, তিনি তা-ই নিয়ে তোমাদেরকে জানাবেন।
16 অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; এবং আবার অল্পকাল পরে আমাকে দেখতে পাবে।
17 এতে সাহাবীদের মধ্যে কয়েক জন পরস্পর বলাবলি করতে লাগলেন, উনি আমাদেরকে এ কি বলছেন, ‘অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে না এবং আবার অল্পকাল পরে আমাকে দেখতে পাবে,’ আর, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি’।
18 অতএব তাঁরা বললেন, ইনি ‘অল্পকাল’ বলতে কি বুঝাচ্ছেন? ইনি কি বলেন, আমরা বুঝতে পারি না।
19 ঈসা জানলেন যে, তাঁরা তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাচ্ছেন; তাই তিনি তাঁদেরকে বললেন, আমি যে বলেছি, অল্পকাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাচ্ছ না এবং আবার অল্পকাল পরে আমাকে দেখতে পাবে, এই বিষয়ে কি পরস্পর জিজ্ঞাসা করছো?
20 সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা কান্নাকাটি করবে ও মাতম করবে, কিন্তু দুনিয়া আনন্দ করবে; তোমরা দুঃখার্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে।
21 প্রসবকালে নারী দুঃখ পায়, কারণ তার সময় উপস্থিত, কিন্তু সন্তান প্রসব করলে পর দুনিয়াতে একটি মানুষ জন্মগ্রহণ করলো, এই আনন্দে তার কষ্টের কথা আর মনে থাকে না।
22 ভাল, তোমরাও এখন দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদেরকে আবার দেখতে পাবো তাতে তোমাদের অন্তর আনন্দিত হবে এবং তোমাদের সেই আনন্দ কেউ তোমাদের থেকে কেড়ে নেবে না।
23 আর সেই দিনে তোমরা আমাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করবে না। সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, পিতার কাছে যদি তোমরা কিছু যাচ্ঞা কর, তিনি আমার নামে তোমাদেরকে তা দেবেন।
24 এই পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু যাচ্ঞা কর নি; যাচ্ঞা কর, তাতে পাবে, যেন তোমাদের আনন্দ সমপূর্ণ হয়।
25 আমি উপমা দ্বারা এসব বিষয় তোমাদেরকে বললাম; এমন সময় আসছে, যখন তোমাদেরকে আর উপমা দ্বারা বলবো না, কিন্তু স্পষ্টভাবে পিতার বিষয় জানাবো।
26 সেদিন তোমরা আমার নামেই যাচ্ঞা করবে, আর আমি তোমাদেরকে বলছি না যে, আমিই তোমাদের জন্য পিতার কাছে নিবেদন করবো;
27 কারণ পিতা নিজে তোমাদেরকে মহব্বত করেন, কেননা তোমরা আমাকে মহব্বত করেছ এবং ঈমান এনেছো যে, আমি আল্লাহ্র কাছ থেকে বের হয়ে এসেছি।
28 আমি পিতা থেকে বের হয়েছি এবং দুনিয়াতে এসেছি; আবার এই দুনিয়া পরিত্যাগ করে পিতার কাছে যাচ্ছি।
29 তাঁর সাহাবীরা বললেন, দেখুন, এখন আপনি স্পষ্টভাবে বলছেন, কোন উপমার মধ্য দিয়ে কথা বলছেন না।
30 এখন আমরা জানি, আপনি সকলই জানেন, কেউ যে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, তা আপনার দরকার নেই; এতে আমরা বিশ্বাস করছি যে, আপনি আল্লাহ্র কাছ থেকে বের হয়ে এসেছেন।
31 ঈসা জবাবে তাঁদেরকে বললেন, এখন বিশ্বাস করছো?
32 দেখ, এমন সময় আসছে, বরং এসেছে, যখন তোমরা ছিন্নভিন্ন হয়ে প্রত্যেকে নিজ নিজ স্থানে যাবে এবং আমাকে একাকী পরিত্যাগ করবে; তবুও আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন।
33 এ সব তোমাদেরকে বললাম, যেন তোমরা আমার মধ্যে শান্তি পাও। দুনিয়াতে তোমরা কষ্ট পাচ্ছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই দুনিয়াকে জয় করেছি।