1 তিনি এক বিশ্রামবারে প্রধান ফরীশীদের এক জন আলেমের বাড়িতে আহার করতে গেলেন, আর তারা তাঁর উপরে দৃষ্টি রাখল।
2 আর দেখ, এক জন শোথ-রোগী তাঁর সম্মুখে ছিল।
3 জবাবে ঈসা আলেমদের ও ফরীশীদেরকে বললেন, বিশ্রামবারে সুস্থ করা উচিত কিনা?
4 কিন্তু তারা চুপ করে রইলো। তখন তিনি তাকে ধরে সুস্থ করলেন, পরে বিদায় দিলেন।
5 আর তিনি তাদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আছে, যার সন্তান কিংবা বলদ কূপে পড়লে সে বিশ্রামবারে তৎক্ষণাৎ তাকে তুলবে না?
6 তারা এসব কথার উত্তর দিতে পারল না।
7 আর দাওয়াতপ্রাপ্ত লোকেরা কিভাবে প্রধান প্রধান আসন মনোনীত করছে, তা লক্ষ্য করে তিনি তাদেরকে একটি দৃষ্টান্ত বললেন; তিনি তাদেরকে বললেন,
8 যখন কেউ তোমাকে বিয়ে ভোজে দাওয়াত করে, তখন প্রধান আসনে বসবে না; কি জানি, তোমার চেয়ে বেশি সম্মানিত আর কোন লোককে তিনি দাওয়াত দিয়েছেন,
9 আর যে ব্যক্তি তোমাকে ও তাকে দাওয়াত করেছে, সে এসে তোমাকে বলবে, এই স্থানটি ওনাকে ছেড়ে দাও; আর তখন তুমি লজ্জিত হয়ে নিম্নতম স্থান গ্রহণ করতে যাবে।
10 কিন্তু তুমি যখন দাওয়াতপ্রাপ্ত হও, তখন নিম্নতম স্থানে গিয়ে বসবে; তাতে যে ব্যক্তি তোমাকে দাওয়াত করেছে, সে যখন আসবে, তোমাকে বলবে, বন্ধু, উচ্চতর স্থানে গিয়ে বস; তখন যারা তোমার সঙ্গে বসে আছে, সেই সবের সাক্ষাতে তোমার গৌরব হবে।
11 কেননা যে কেউ নিজেকে উঁচু করে, তাকে নত করা যাবে, আর যে কেউ নিজেকে নত করে, তাকে উঁচু করা যাবে।
12 আবার যে ব্যক্তি তাঁকে দাওয়াত করেছিল, তাকেও তিনি বললেন, তুমি যখন মধ্যাহ্ন ভোজ কিংবা রাত্রিকালীন ভোজ প্রস্তুত কর, তখন তোমার বন্ধুদেরকে, বা তোমার ভাইদেরকে, বা তোমার জ্ঞাতিদেরকে কিংবা ধনী প্রতিবেশীদেরকে ডেকো না; কি জানি, তারাও তোমাকে পাল্টা দাওয়াত করবে, আর তুমি প্রতিদান পাবে।
13 কিন্তু তুমি যখন ভোজ প্রস্তুত কর, তখন দরিদ্র, নুলা, খঞ্জ ও অন্ধদেরকে দাওয়াত করো;
14 তাতে তুমি ধন্য হবে, কেননা তোমাকে প্রতিদান দিতে তাদের কিছু নেই, তাই ধার্মিকদের পুনরুত্থানের সময়ে তুমি প্রতিদান পাবে।
15 এসব কথা শুনে যারা বসেছিল, তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি তাঁকে বললো, ধন্য সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহ্র রাজ্যে ভোজন করবে।
16 তিনি তাকে বললেন, কোন ব্যক্তি বড় একটি ভোজ প্রস্তুত করে অনেককে দাওয়াত করলেন।
17 পরে ভোজনের সময়ে তাঁর গোলাম দ্বারা দাওয়াতীদেরকে বলে পাঠালেন, এসো, এখন সকলই প্রস্তুত।
18 তখন তারা সকলেই একমত হয়ে অজুহাত দিতে লাগল। প্রথম জন তাকে বললো, আমি একখানি ক্ষেত ক্রয় করলাম, তা দেখতে না গেলে নয়; ফরিয়াদ করি, আমাকে ছেড়ে দিতে হবে।
19 আর এক জন বললো, আমি পাঁচ জোড়া বলদ কিনলাম, তাদের পরীক্ষা করতে যাচ্ছি; ফরিয়াদ করি, আমাকে ছেড়ে দিতে হবে।
20 আর এক জন বললো, আমি বিয়ে করলাম, এজন্য যেতে পারছি না।
21 পরে সে গোলাম এসে তার মালিককে এ সব বৃত্তান্ত জানালো। তখন সেই গৃহকর্তা ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁর গোলামকে বললেন, শীঘ্র বের হয়ে নগরের পথে পথে ও গলিতে গলিতে যাও, দরিদ্র, নুলা, খঞ্জ ও অন্ধদেরকে এখানে আন।
22 পরে সেই গোলাম বললো, মালিক, আপনি যা হুকুম করেছিলেন, তা করা হয়েছে, আর এখনও স্থান আছে।
23 তখন মালিক সেই গোলামকে বললেন, বের হয়ে রাজপথে রাজপথে ও সরু পথগুলোতে যাও এবং আসার জন্য লোকদেরকে পীড়াপীড়ি কর, যেন আমার বাড়ি পরিপূর্ণ হয়।
24 কেননা আমি তোমাদেরকে বলছি, ঐ দাওয়াতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এক জনও আমার ভোজের আস্বাদ পাবে না।
25 একবার অনেক লোক তার সঙ্গে যাচ্ছিল; তখন তিনি মুখ ফিরিয়ে তাদেরকে বললেন,
26 যদি কেউ আমার কাছে আসে, আর আপন পিতা-মাতা, স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে, ভাই-বোন, এমন কি নিজের প্রাণকেও অপ্রিয় জ্ঞান না করে, তবে সে আমার সাহাবী হতে পারে না।
27 যে কেউ নিজের ক্রুশ বহন না করে ও আমার পিছনে পিছনে না আসে, সে আমার সাহাবী হতে পারে না।
28 বাস্তবিক উচ্চগৃহ নির্মাণ করতে ইচ্ছা হলে কে তোমাদের মধ্যে আগে বসে ব্যয় হিসাব করে না দেখবে, সমাপ্ত করার সঙ্গতি তার আছে কি না?
29 কি জানি ভিত্তিমূল বসালে পর যদি সে সমাপ্ত করতে না পারে, তবে যত লোক তা দেখবে, সকলে তাকে বিদ্রূপ করতে আরম্ভ করবে,
30 বলবে, এই ব্যক্তি নির্মাণ করতে আরম্ভ করেছিল, কিন্তু সমাপ্ত করতে পারল না।
31 অথবা কোন্ বাদশাহ্ অন্য বাদশাহ্র সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবার সময়ে আগে বসে বিবেচনা করবে না, যিনি বিশ হাজার সৈন্য নিয়ে আমার বিরুদ্ধে আসছেন, আমি দশ হাজার নিয়ে কি তার মুখামুখি হতে পারি?
32 যদি না পারেন, তবে দুশমন দূরে থাকতে তিনি দূত প্রেরণ করে সন্ধি স্থাপন করতে চাইবেন।
33 ভাল, তেমনি তোমাদের মধ্যে যে কেউ নিজের সর্বস্ব ত্যাগ না করে, সে আমার সাহাবী হতে পারে না।
34 লবণ তো উত্তম; কিন্তু সেই লবণেরও যদি স্বাদ চলে গিয়ে থাকে, তবে তা কিসে আস্বাদযুক্ত করা যাবে?
35 তা না ভূমির, না সারের ঢিবির উপযোগী; লোকে তা বাইরে ফেলে দেয়। যার শুনবার কান আছে সে শুনুক।