1 ঈসা তাঁর সাহাবীদেরকে আরও বললেন, গুনাহের পথে নিয়ে যাবার জন্য উসকানি উপস্থিত হবে না এমন হতে পারে না; কিন্তু ধিক্ তাকে, যার দ্বারা উসকানি উপস্থিত হবে!
2 যে এই ক্ষুদ্রদের মধ্যে এক জনের সম্মুখে এমন কোন বাধা স্থাপন করে যাতে সে উচোট খায়, তবে তাকে বরং গলায় যাঁতা বেঁধে সাগরে ফেলে দেওয়া তার পক্ষে ভাল। তোমরা তোমাদের নিজেদের বিষয়ে সাবধান থাক।
3 তোমার ভাই যদি গুনাহ্ করে, তাকে অনুযোগ করো; আর সে যদি তওবা করে, তাকে মাফ করো।
4 আর যদি সে এক দিনের মধ্যে সাত বার তোমার বিরুদ্ধে গুনাহ্ করে, আর সাত বার তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, অনুতাপ করলাম, তবে তাকে মাফ করো।
5 আর প্রেরিতেরা প্রভুকে বললেন, আমাদের ঈমান বাড়িয়ে দিন।
6 প্রভু বললেন, একটি সর্ষেদানার মত ঈমান যদি তোমাদের থাকে, তবে ‘তুমি সমূলে উপড়ে গিয়ে সাগরে রোপিত হও’ এই কথা তুঁত গাছটিকে বললে গাছটি তোমাদের কথা মানবে।
7 আর তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যার গোলাম হাল বেয়ে কিংবা ভেড়া চরিয়ে ক্ষেত থেকে ভিতরে আসলে সে তাকে বলবে, ‘তুমি এখনই এসে খেতে বস’?
8 বরং তাকে কি বলবে না, ‘আমি কি খাব, তার আয়োজন কর এবং আমি যতক্ষণ ভোজন পান করি, ততক্ষণ কোমর বেঁধে আমার সেবা কর, তারপর তুমি ভোজন পান করবে’?
9 সেই গোলাম হুকুম পালন করলো বলে সে কি তাকে শুকরিয়া জানাবে?
10 সেইভাবে সমস্ত হুকুম পালন করলে পর তোমরাও বলো আমরা অযোগ্য গোলাম, যা করতে বাধ্য ছিলাম, তা-ই করলাম।
11 জেরুশালেমে যাবার সময়ে তিনি সামেরিয়া ও গালীল দেশের মধ্য দিয়ে গমন করলেন।
12 তিনি কোন গ্রামে প্রবেশ করছেন, এমন সময়ে দশ জন কুষ্ঠ রোগী তাঁর সম্মুখে পড়লো, তারা দূরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল,
13 ঈসা, প্রভু, আমাদেরকে করুণা করুন!
14 তাদেরকে দেখে তিনি বললেন, যাও, ইমামদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও। যেতে যেতে তারা পাক-পবিত্র হয়ে গেল।
15 তখন তাদের এক জন নিজেকে সুস্থ দেখে উচ্চরবে আল্লাহ্র গৌরব করতে করতে ফিরে আসল,
16 এবং ঈসার পায়ে উবুড় হয়ে পড়ে তাঁকে শুকরিয়া জানাতে লাগল; সেই ব্যক্তি এক জন সামেরীয়।
17 জবাবে ঈসা বললেন, দশ জন কি পাক-পবিত্র হয় নি? তবে সেই নয় জন কোথায়?
18 আল্লাহ্র গৌরব করার জন্য ফিরে এসেছে, এই বিদেশী লোকটি ভিন্ন এমন কাউকেও কি পাওয়া গেল না?
19 পরে তিনি তাকে বললেন, উঠে চলে যাও, তোমার ঈমান তোমাকে সুস্থ করেছে।
20 ফরীশীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, আল্লাহ্র রাজ্য কখন আসবে? জবাবে তিনি তাদেরকে বললেন, আল্লাহ্র রাজ্য জাঁক-জমকের সঙ্গে আসে না;
21 আর লোকে বলবে না, দেখ, এই স্থানে! কিংবা ঐ স্থানে! কারণ দেখ, আল্লাহ্র রাজ্য তোমাদের মধ্যেই আছে।
22 আর তিনি সাহাবীদেরকে বললেন, এমন সময় আসবে, যখন তোমরা ইবনুল-ইনসানের সময়ের একটি দিন দেখতে ইচ্ছা করবে, কিন্তু দেখতে পাবে না।
23 তখন লোকেরা তোমাদেরকে বলবে, দেখ ঐ স্থানে! দেখ, এই স্থানে! যেও না, তাদের পিছনে যেও না।
24 কেননা বিদ্যুৎ যেমন আসমানের নিচে এক দিক থেকে চমকালে আসমানের নিচে অন্যদিক পর্যন্ত আলোকিত হয়, ইবনুল-ইনসান তাঁর দিনে ঠিক তেমনি হবেন।
25 কিন্তু প্রথমে তাঁকে অনেক দুঃখ-ভোগ করতে এবং এই কালের লোকদের কাছে অগ্রাহ্য হতে হবে।
26 আর নূহের সময়ে যেমন হয়েছিল, ইবনুল-ইনসানের সময়েও তেমনি হবে।
27 লোকে ভোজন পান করতো, বিয়ে করতো, বিবাহিতা হত, যে পর্যন্ত না নূহ্ জাহাজে প্রবেশ করলেন, আর বন্যা এসে সকলকে বিনষ্ট করলো।
28 আবার লূতের সময়ে যেমন হয়েছিল— লোকে ভোজন পান, ক্রয়-বিক্রয়, গাছ লাগানো ও বাড়ি-ঘর নির্মাণ করতো;
29 কিন্তু যেদিন লূত সাদুম থেকে বের হলেন, সেদিন আসমান থেকে আগুন ও গন্ধক বর্ষিয়ে সকলকে বিনষ্ট করলো—
30 ইবনুল-ইনসান যেদিন প্রকাশিত হবেন, সেই দিনেও ঠিক তেমনি হবে।
31 সেদিন যে কেউ ছাদের উপরে থাকবে, আর তার জিনিসপত্র ঘরে থাকবে, সে তা নেবার জন্য নিচে না নামুক; আর তেমনি যে কেউ ক্ষেতে থাকবে, সেও পিছনে ফিরে না আসুক।
32 লূতের স্ত্রীকে স্মরণ করো।
33 যে কেউ আপন প্রাণ লাভ করতে চেষ্টা করে, সে তা হারাবে; আর যে কেউ প্রাণ হারায়, সে তা বাঁচাবে।
34 আমি তোমাদেরকে বলছি, সেই রাতে দু’জন এক বিছানায় থাকবে, তাদের এক জনকে নেওয়া যাবে এবং অন্য জনকে ছেড়ে যাওয়া হবে।
35 দু’জন স্ত্রীলোক একত্রে যাঁতা পিষবে; তাদের এক জনকে নেওয়া যাবে এবং অন্য জনকে ছেড়ে যাওয়া হবে।
36 তখন তাঁরা জবাবে তাঁকে বললেন, হে প্রভু, কোথায়?
37 তিনি তাঁদেরকে বললেন, যেখানে লাশ, সেখানেই শকুন জুটবে।