1 আর কর-আদায়কারী ও গুনাহ্গারেরা সকলে তাঁর কথা শুনবার জন্য তাঁর কাছে আসছিল।
2 তাতে ফরীশীরা ও তাদের আলেমরা বচসা করে বলতে লাগল, এই ব্যক্তি গুনাহ্গারদেরকে গ্রহণ করে ও তাদের সঙ্গে ভোজন-পান করে।
3 তখন তিনি তাদেরকে এই দৃষ্টান্তটি বললেন।
4 তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তির একশত ভেড়া আছে ও সেসব ভেড়ার মধ্য থেকে একটি ভেড়া হারিয়ে যায় তবে কি সে নিরানব্বইটা মরুভূমিতে ছেড়ে দিয়ে যে পর্যন্ত সেই হারানোটি না পায়, সেই পর্যন্ত তার খোঁজ করতে যায় না?
5 আর তা পেলে পর সে আনন্দপূর্বক কাঁধে তুলে নেয়।
6 পরে ঘরে এসে বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদেরকে ডেকে বলে, আমার সঙ্গে আনন্দ কর, কারণ আমার যে ভেড়াটি হারিয়ে গিয়েছিল তা খুঁজে পেয়েছি।
7 আমি তোমাদেরকে বলছি, তেমনি এক জন গুনাহ্গার মন ফিরালে বেহেশতে আনন্দ হবে; যাদের মন ফিরানো আবশ্যক নয়, এমন নিরানব্বই জন ধার্মিকের বিষয়ে তত আনন্দ হবে না।
8 অথবা কোন স্ত্রীলোক যার দশটি সিকি আছে, সে যদি একটি হারিয়ে ফেলে, তবে প্রদীপ জ্বেলে ঘর ঝাড় দিয়ে যে পর্যন্ত তা না পায়, ভাল করে খুঁজে দেখে না?
9 আর পেলে পর সে বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদেরকে ডেকে বলে, আমার সঙ্গে আনন্দ কর, কারণ আমি যে সিকিটি হারিয়ে ফেলেছিলাম তা পেয়েছি।
10 তেমনি আমি তোমাদেরকে বলছি, এক জন গুনাহ্গার মন ফিরালে আল্লাহ্র ফেরেশতাদের মধ্যে আনন্দ হয়।
11 আর তিনি বললেন, এক ব্যক্তির দু’টি পুত্র ছিল;
12 তাদের মধ্যে কনিষ্ঠ জন তার পিতাকে বললো, আব্বা, সম্পত্তির যে অংশ আমার ভাগে পড়ে, তা আমাকে দাও। তাতে তিনি তাদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দিলেন।
13 অল্প দিন পরে সেই কনিষ্ঠ পুত্র সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা নিয়ে দূরদেশে চলে গেল, আর সেখানে সে অনাচারে নিজের টাকা উড়িয়ে দিল।
14 সে সব ব্যয় করে ফেললে পর সেই দেশে ভারী দুর্ভিক্ষ হল, তাতে সে কষ্টে পড়তে লাগল।
15 তখন সে গিয়ে সেই দেশের এক জন গৃহস্থের আশ্রয় নিল; আর সে তাকে শূকর চরাবার জন্য তার মাঠে পাঠিয়ে দিল;
16 তখন শূকরে যে শুঁটি খেত, তা দিয়ে সে উদর পূর্ণ করতে বাঞ্ছা করতো, আর কেউই তাকে তাও দিত না।
17 কিন্তু চেতনা পেলে সে বললো, আমার পিতার কত মজুর বেশি বেশি খাদ্য পাচ্ছে, কিন্তু আমি এখানে ক্ষুধায় মরছি।
18 আমি উঠে আমার পিতার কাছে যাব, তাঁকে বলবো, আব্বা, বেহেশতের বিরুদ্ধে এবং তোমার সাক্ষাতে আমি গুনাহ্ করেছি;
19 আমি আর তোমার পুত্র নামের যোগ্য নই; তোমার এক জন মজুরের মত আমাকে রাখ।
20 পরে সে উঠে তার পিতার কাছে আসল। সে দূরে থাকতেই তার পিতা তাকে দেখতে পেলেন ও করুণাবিষ্ট হলেন, আর দৌড়ে গিয়ে তার গলা ধরে তাকে চুম্বন করতে থাকলেন।
21 তখন পুত্র তাঁকে বললো, আব্বা, বেহেশতের বিরুদ্ধে ও তোমার সাক্ষাতে আমি গুনাহ্ করেছি, আমি আর তোমার পুত্র নামের যোগ্য নই।
22 কিন্তু পিতা তার গোলামদেরকে বললেন, শীঘ্র করে সর্বপেক্ষা উত্তম কোর্তাটি আন, আর একে পরিয়ে দাও। এর হাতে আংটি দাও ও পায়ে জুতা পরাও;
23 আর হৃষ্টপুষ্ট বাছুরটি এনে জবেহ্ কর; আমরা ভোজন করে আমোদ প্রমোদ করি;
24 কারণ আমার এই পুত্র মারা গিয়েছিল, এখন বেঁচে উঠেছে; হারিয়ে গিয়েছিল, এখন পাওয়া গিয়েছে। তাতে তারা আমোদ প্রমোদ করতে লাগল।
25 তখন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ক্ষেতে ছিল, পরে সে আসতে আসতে যখন বাড়ির কাছে পৌঁছালো, তখন বাদ্য ও নৃত্যের আওয়াজ শুনতে পেল।
26 আর সে এক জন গোলামকে কাছে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো, এসব কি হচ্ছে?
27 সে তাকে বললো, তোমার ভাই ফিরে এসেছে এবং তোমার পিতা হৃষ্টপুষ্ট বাছুরটি মেরেছেন, কেননা তিনি তাকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেয়েছেন।
28 তাতে সে ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলো, ভিতরে যেতে চাইল না; তখন তার পিতা সাধ্য সাধনা করতে লাগলেন।
29 কিন্তু সে জবাবে পিতাকে বললো, দেখ, এত বছর আমি তোমার সেবা করে আসছি, কখনও তোমার হুকুম লঙ্ঘন করি নি, তবুও আমাকে কখনও একটি ছাগলের বাচ্চা দাও নি, যেন আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে আমোদ প্রমোদ করতে পারি।
30 কিন্তু তোমার এই যে পুত্র পতিতাদের সঙ্গে তোমার ধন খেয়ে ফেলেছে, সে যখন আসল, তারই জন্য হৃষ্টপুষ্ট বাছুরটি জবেহ্ করলে।
31 তিনি তাকে বললেন, বৎস, তুমি সব সময়ই আমার সঙ্গে আছ, আর যা যা আমার, সকলই তোমার।
32 কিন্তু আমাদের আমোদ প্রমোদ ও আনন্দ করা উচিত, কারণ তোমার এই ভাই মারা গিয়েছিল, এখন বেঁচে উঠেছে; হারিয়ে গিয়েছিল, এখন পাওয়া গেছে।