যিরমিয় 3 SBCL

1 সদাপ্রভু বলছেন, “যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে আর সেই স্ত্রী তাকে ছেড়ে অন্য লোককে বিয়ে করে, তাহলে সেই পুরুষের কি আবার সেই স্ত্রীর কাছে ফিরে যাবার নিয়ম আছে? যদি যায় তবে সেই দেশ সম্পূর্ণভাবে অশুচি হয়ে যাবে। কিন্তু তুমি তো অনেকের সংগে থেকে বেশ্যার মত জীবন কাটিয়েছ; এখন তুমি কি করে আমার কাছে ফিরে আসবে?

2 “তুমি চোখ তুলে গাছপালাহীন পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে দেখ। এমন কোন জায়গা আছে কি যেখানে তুমি ব্যভিচার কর নি? যাদের সংগে তুমি ব্যভিচার করেছ তাদের অপেক্ষায় তুমি রাস্তার ধারে বসে থাকতে, মরুভূমির আরবীয়দের মত ওৎ পেতে থাকতে। তোমার বেশ্যাগিরি আর দুষ্টতা দিয়ে তুমি দেশকে অশুচি করেছ।

3 এইজন্য বৃষ্টি বন্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বসন্তের বৃষ্টিও পড়ে নি। তবুও তোমার চোখে আছে বেশ্যার বেহায়া চাহনি; তোমার কোন লজ্জা নেই।

4 তুমি কি এইমাত্র আমাকে ডেকে বল নি, ‘হে আমার পিতা, আমার ছেলেবেলার বন্ধু,

5 তুমি কি সব সময় রাগ করে থাকবে? তোমার রাগ কি চিরকাল পুষে রাখবে?’ তুমি তো এইভাবে কথা বল, কিন্তু তোমার পক্ষে যতখানি মন্দ কাজ করা সম্ভব তুমি ততখানিই করেছ।”

অবিশ্বস্ত ইস্রায়েল

6 রাজা যোশিয়ের রাজত্বের সময়ে সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “বিপথে যাওয়া ইস্রায়েল যা করেছে তা কি তুমি দেখেছ? সে সমস্ত উঁচু পাহাড়ের উপরে ও ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছের নীচে গিয়ে ব্যভিচার করেছে।

7 আমি ভেবেছিলাম এই সব করবার পরে সে আমার কাছে ফিরে আসবে, কিন্তু সে আসে নি আর তার অবিশ্বস্ত বোন যিহূদা তা দেখেছিল।

8 বিপথে যাওয়া ইস্রায়েলকে আমি ত্যাগপত্র দিয়েছিলাম এবং তার সমস্ত ব্যভিচারের জন্য তাকে দূর করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি দেখলাম তার অবিশ্বস্ত বোন যিহূদার কোন ভয় নেই; সে-ও গিয়ে ব্যভিচার করল।

9 তার ব্যভিচারের কাজ তার কাছে কিছুই মনে হয় নি বলে সে পাথর ও কাঠের দেব-দেবতার সংগে ব্যভিচার করে দেশকে অশুচি করল।

10 এই সব হলেও ইস্রায়েলের অবিশ্বস্ত বোন যিহূদা সমস্ত মন দিয়ে নয় কিন্তু কেবল ভান করে আমার কাছে ফিরে এসেছে। আমি সদাপ্রভু এই কথা বলছি।”

11 সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “বিপথে যাওয়া ইস্রায়েল বরং অবিশ্বস্ত যিহূদার চেয়ে নিজেকে সৎ দেখিয়েছে।

12 তুমি গিয়ে এই সব সংবাদ উত্তর দিকে মুখ করে ঘোষণা কর: ‘আমি সদাপ্রভু বলছি, হে বিপথে যাওয়া ইস্রায়েল, ফিরে এস। আমি আর তোমার দিকে ভুরু কুঁচকে থাকব না; আমি দয়াবান, তাই চিরকাল রাগ পুষে রাখব না।

13 তুমি কেবল তোমার দোষ মেনে নাও যে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে তুমি বিদ্রোহ করেছ, ডালপালা ছড়ানো সমস্ত সবুজ গাছের নীচে দেব-দেবতাকে তোমার ভালবাসা দান করেছ এবং আমার কথার বাধ্য হও নি।’

14 “আমি সদাপ্রভু আরও বলছি, ‘হে বিপথে যাওয়া লোকেরা, ফিরে এস, কারণ আমিই তোমাদের স্বামী। আমি তোমাদের মধ্যেকার প্রত্যেক শহর থেকে একজন ও প্রত্যেক বংশ থেকে দু’জনকে বেছে নিয়ে সিয়োনে আনব।

15 তারপর আমি তোমাদের আমার মনের মত পালক দেব; তারা জ্ঞান ও বুদ্ধির সংগে তোমাদের চালাবে।

16 সেই সময় আমি যখন দেশে তোমাদের লোকসংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেব তখন লোকে আর সদাপ্রভুর ব্যবস্থা-সিন্দুক সম্বন্ধে বলবে না। তার কথা কখনও তাদের মনে পড়বে না বা মনেও থাকবে না; তার আর দরকার হবে না কিম্বা অন্য আর একটা তৈরীও করা হবে না।

17 সেই সময় লোকে যিরূশালেমকে বলবে সদাপ্রভুর সিংহাসন, আর সদাপ্রভুর উপাসনা করবার জন্য সমস্ত জাতি যিরূশালেমে জড়ো হবে। তাদের মন্দ অন্তরের একগুঁয়েমিতে আর তারা চলবে না।

18 সেই সময় যিহূদার লোকেরা ইস্রায়েলের লোকদের সংগে যুক্ত হবে আর আমি যে দেশ অধিকার হিসাবে তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছি সেই দেশে তারা একসংগে উত্তর দিকের দেশ থেকে ফিরে আসবে।’

19 “আমি নিজেই বলেছিলাম, ‘আমি ছেলে হিসাবে তোমাদের গ্রহণ করব এবং চাওয়ার মত একটা দেশ, জাতিদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর একটা অধিকার তোমাদের দেব।’ আমি ভেবেছিলাম তোমরা আমাকে পিতা বলে ডাকবে এবং আমার পিছনে চলা থেকে ফিরে যাবে না।

20 কিন্তু হে ইস্রায়েলীয়েরা, স্বামীর প্রতি অবিশ্বস্ত স্ত্রীর মত তোমরা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছ। আমি সদাপ্রভু এই কথা বলছি।”

21 গাছপালাহীন পাহাড়গুলোর উপরে ইস্রায়েলীয়দের কান্না ও মিনতির শব্দ শোনা যাচ্ছে, কারণ তাদের পথ তারা বাঁকা করেছে এবং তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তারা ভুলে গেছে।

22 সদাপ্র্রভু বলছেন, “হে বিপথে যাওয়া সন্তানেরা, ফিরে এস; তোমাদের বিপথে যাওয়া রোগ আমি ভাল করে দেব।”তখন ইস্রায়েলীয়েরা বলবে, “হ্যাঁ, আমরা তোমার কাছে আসব, কারণ তুমিই আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।

23 সত্যিই পাহাড়-পর্বতগুলোর উপরকার পূজার হৈ চৈ ছলনা ছাড়া আর কিছু নয়। সত্যিই আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মধ্যেই আছে ইস্রায়েলের উদ্ধার।

24 আমাদের ছেলেবেলা থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের পরিশ্রমের ফল, অর্থাৎ তাঁদের গরু-ভেড়ার পাল ও তাঁদের ছেলেমেয়েদের এই লজ্জাজনক দেব-দেবতারা গ্রাস করেছে।

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52