1 সদাপ্রভু বলছেন, “হে ইস্রায়েল, তুমি যদি ফিরে আসতে চাও তবে আমার কাছেই ফিরে এস। যদি তুমি আমার চোখের সামনে থেকে তোমার জঘন্য প্রতিমাগুলো সরিয়ে দাও এবং আর বিপথে না যাও,
2 যদি তুমি সত্যে, ন্যায়ে ও সততায় ‘জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য’ বলে শপথ কর, তাহলে আমি অন্যান্য জাতিদের আশীর্বাদ করব আর তারা আমাকে নিয়েই গৌরব বোধ করবে।”
3 সদাপ্রভু যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের বলছেন, “তোমরা পতিত জমি চাষ কর এবং কাঁটাবনের মধ্যে বীজ বুনো না।
4 হে যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকেরা, সদাপ্রভুর বাধ্য হবার জন্য তোমাদের নিজেদের সুন্নত কর, অর্থাৎ তোমাদের অন্তরের ময়লা দূর কর; তা না হলে তোমাদের মন্দ কাজের জন্য আমার ক্রোধ বের হয়ে আগুনের মত জ্বলে উঠবে, কেউ তা নিভাতে পারবে না।
5 “তোমরা যিহূদা দেশে ও যিরূশালেমে ঘোষণা করে বল, ‘সারা দেশে তূরী বাজাও।’ জোরে চিৎকার করে বল, ‘তোমরা একসংগে জড়ো হও। চল, আমরা দেয়াল-ঘেরা শহরগুলোতে যাই।’
6 সিয়োনে যাবার পথ দেখাবার জন্য চিহ্ন স্থাপন কর। দেরি না করে নিরাপদ হবার জন্য পালাও, কারণ আমি উত্তর দিক থেকে বিপদ এবং ভয়ংকর ধ্বংস আনতে যাচ্ছি।
7 একটা সিংহ তার ঝোপ ছেড়ে উঠে এসেছে; জাতিদের ধ্বংসকারী একজন রওনা হয়েছে। তোমার দেশ ধ্বংস করবার জন্য সে তার জায়গা ছেড়ে আসছে। তোমার শহরগুলো জনশূন্য ও ধ্বংস হয়ে পড়ে থাকবে।
8 কাজেই চট পরে বিলাপ ও হাহাকার কর, কারণ সদাপ্রভুর জ্বলন্ত ক্রোধ আমাদের দিক থেকে ফিরে যায় নি।”
9 সদাপ্রভু বলছেন, “সেই দিন রাজা ও উঁচু পদের কর্মচারীরা সাহস হারাবে, আর পুরোহিতেরা ও নবীরা হতভম্ব হবে।”
10 তখন আমি বললাম, “হায়, হায়! হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি এই লোকদের ও যিরূশালেমকে পুরোপুরি ছলনা করে বলেছ, ‘তোমাদের শান্তি হবে,’ অথচ আমাদের গলার কাছে তলোয়ার ধরা রয়েছে।”
11 সেই সময় সদাপ্রভু এই লোকদের ও যিরূশালেমকে বলবেন, “মরু-এলাকার গাছপালাহীন পাহাড়গুলো থেকে গরম বাতাস আমার লোকদের দিকে আসছে, কিন্তু তা শস্য ঝাড়বার বা পরিষ্কার করবার বাতাস নয়;
12 আমার আদেশে আসা সেই বাতাসের জোর খুব বেশী। এইভাবে আমি এখন তাদের বিরুদ্ধে আমার বিচারের রায় দেব।”
13 দেখ, তিনি মেঘের মত করে এগিয়ে আসছেন। তাঁর রথগুলো ঘূর্ণিবাতাসের মত আসছে আর তাঁর ঘোড়াগুলো ঈগল পাখীর চেয়েও জোরে দৌড়ায়। হায়, হায়, আমরা ধ্বংস হয়ে গেলাম!
14 হে যিরূশালেম, তোমার অন্তর থেকে মন্দতা ধুয়ে ফেল যাতে তুমি উদ্ধার পাও। আর কত দিন তুমি মন্দ চিন্তা মনে পুষে রাখবে?
15 দান শহর থেকে ও ইফ্রয়িমের পাহাড়গুলো থেকে বিপদের কথা ঘোষণা করা হচ্ছে।
16 জাতিগুলোর কাছে এবং যিরূশালেমের কাছে এই কথা ঘোষণা কর, “ঘেরাও করবার জন্য সৈন্যেরা দূর দেশ থেকে আসছে; তারা যিহূদার শহরগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধের হাঁক দিচ্ছে।
17 ক্ষেতের পাহারাদারদের মত তারা যিরূশালেমকে ঘেরাও করবে, কারণ সে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। আমি সদাপ্রভু এই কথা বলছি।
18 তোমার আচার-ব্যবহার ও তোমার সমস্ত কাজের জন্য এই সব তোমার উপর এসেছে। এ তোমার দুষ্টতার শাস্তি। এ ভীষণ তেতো; এ তোমার অন্তরকে বিঁধেছে।”
19 হায়, আমার অন্তর, আমার অন্তর! আমি যন্ত্রণায় মোচড় খাচ্ছি। হায়, আমার অন্তর! আমার ভিতরে আমার অন্তর ধুক্ ধুক্ করছে। আমি চুপ করে থাকতে পারছি না, কারণ আমি তূরীর শব্দ শুনেছি, আমি যুদ্ধের হাঁক শুনেছি।
20 বিপদের পর বিপদ আসছে; সমস্ত দেশ যেন ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে। অল্পক্ষণের মধ্যে আমার তাম্বুগুলো, এক মুহূর্তের মধ্যে আমার তাম্বুর পর্দাগুলো যেন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
21 কত দিন আমাকে যুদ্ধের নিশান দেখতে হবে আর শুনতে হবে তূরীর শব্দ?
22 সদাপ্রভু বলছেন, “আমার লোকেরা বোকা; তারা আমাকে জানে না। তারা বুদ্ধিহীন ছেলেমেয়ে; তাদের বুঝবার শক্তি নেই। মন্দ কাজ করতে তারা ওস্তাদ, কিন্তু কেমন করে ভাল কাজ করতে হয় তা তারা জানে না।”
23 আমি পৃথিবীর দিকে তাকালাম; সেটা আকারহীন ও খালি; আকাশের দিকে তাকালাম, সেখানে আলো নেই।
24 বড় বড় পাহাড়ের দিকে তাকালাম, সেগুলো কাঁপছে; সমস্ত ছোট ছোট পাহাড়গুলো দুলছে।
25 আমি তাকিয়ে দেখলাম, সেখানে কোন লোক নেই; আকাশের সব পাখী উড়ে চলে গেছে।
26 আমি তাকিয়ে দেখলাম সদাপ্রভুর সামনে, তাঁর ভয়ংকর ক্রোধের সামনে উর্বর দেশটা মরুভূমি হয়ে গেছে; তার সমস্ত শহরগুলো ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে।
27 সদাপ্রভু বলছেন, “গোটা দেশটা ধ্বংস হয়ে যাবে, যদিও আমি তা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হতে দেব না।
28 পৃথিবী শোক করবে আর আকাশ অন্ধকার হয়ে যাবে, কারণ আমি এই কথা বলেছি। আমিই এটা স্থির করেছি; তা থেকে ফিরব না, তা করবই করব।”
29 ঘোড়সওয়ার আর ধনুকধারীদের আওয়াজেই সমস্ত শহরের লোকেরা পালিয়ে যাবে। কিছু লোক যাবে ঘন ঝোপের মধ্যে আর কিছু লোক উঠবে বড় বড় পাথরের উপরে। প্রত্যেকটি শহর খালি হয়ে পড়ে থাকবে; সেখানে কোন লোক বাস করবে না।
30 হে ধ্বংস হওয়া সেই শহর, তুমি কি করবে? কেন লাল রংয়ের কাপড় আর সোনার গহনা পরছ? কেন চোখে কাজলের রেখা টানছ? তুমি অনর্থক নিজেকে সাজাচ্ছ। তোমার প্রেমিকেরা তোমাকে ঘৃণা করে, তারা তোমার প্রাণ নেবার চেষ্টা করে।
31 একজন স্ত্রীলোকের প্রসব-বেদনার কান্নার মত, প্রথম সন্তান প্রসবের যন্ত্রণার কান্নার মত সিয়োন-কন্যার কান্না আমি শুনেছি। সে নিঃশ্বাস নেবার জন্য হাঁপাচ্ছে আর হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলছে, “হায়! আমি অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছি, খুনীরা আমাকে শেষ করে দিচ্ছে।”