1 তিনি আমাকে বললেন, “হে মানুষের সন্তান, তোমার সামনে যা আছে তা তুমি খাও; এই গুটিয়ে রাখা বইটা খেয়ে ফেল, তারপর ইস্রায়েলীয়দের কাছে গিয়ে কথা বল।”
2 তখন আমি মুখ খুললাম, আর তিনি আমাকে সেই বইটা খাইয়ে দিলেন।
3 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানুষের সন্তান, আমার দেওয়া এই বইটা খেয়ে তোমার পেট ভর।” কাজেই আমি তা খেয়ে ফেললাম, আর তা আমার মুখে মধুর মত মিষ্টি লাগল।
4 তিনি তারপর আমাকে বললেন, “হে মানুষের সন্তান, তুমি এখন ইস্রায়েলীয়দের কাছে গিয়ে আমার কথাগুলো বল।
5 তোমাকে তো এমন লোকদের কাছে পাঠানো হচ্ছে না যাদের ভাষা তোমার অজানা এবং কঠিন, কিন্তু পাঠানো হচ্ছে ইস্রায়েলীয়দের কাছে।
6 যাদের কথা তুমি বোঝ না সেই রকম অজানা ও কঠিন ভাষা বলা অনেক জাতির কাছে তোমাকে পাঠানো হচ্ছে না। যদি তাদের কাছে আমি তোমাকে পাঠাতাম তাহলে নিশ্চয়ই তারা তোমার কথা শুনত।
7 কিন্তু ইস্রায়েলীয়েরা তোমার কথা শুনতে চাইবে না, কারণ তারা আমার কথা শুনতে চায় না; এর কারণ হল, গোটা ইস্রায়েল জাতি কঠিন-মনা ও একগুঁয়ে।
8 কিন্তু আমি তোমাকে তাদেরই মত একরোখা ও কঠিন-মনা করে দেব।
9 আমি তোমার কপাল হীরার মত শক্ত, চক্মকি পাথরের চেয়েও শক্ত করে দিলাম। যদিও তারা একটা বিদ্রোহী জাতি তবুও তুমি তাদের ভয় কোরো না বা তাদের দেখে ভয় পেয়ো না।”
10 তিনি আমাকে আরও বললেন, “হে মানুষের সন্তান, আমি তোমাকে যে সব কথা বলব তা তুমি মন দিয়ে শোনো ও অন্তরে জমা রাখ।
11 তুমি এখন বন্দীদশায় থাকা তোমার দেশের লোকদের কাছে গিয়ে কথা বল। তারা শুনুক বা না শুনুক, তুমি তাদের কাছে প্রভু সদাপ্রভুর বাক্য বলবে।”
12 তারপর ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে নিলেন, আর আমি আমার পিছনে জোরে বলা এই কথা শুনলাম, “সদাপ্রভুর বাসস্থানে তাঁর মহিমার গৌরব হোক।”
13 আমি সেই জীবন্ত প্রাণীদের একে অন্যের সংগে ডানা ঘষার শব্দ ও তাঁদের পাশের চাকার শব্দ খুব জোরে শুনতে পেলাম।
14 ঈশ্বরের আত্মা আমাকে তুলে নিয়ে যাবার সময় আমি মনে বিরক্তি ও রাগ নিয়ে গেলাম, আর সদাপ্রভুর কঠিন হাত আমার উপরে ছিল।
15 যে বন্দীরা কবার নদীর কাছে তেল-আবীবে ছিল আমি তাদের কাছে গেলাম। তারা যেখানে বাস করছিল আমি সেখানে তাদের মধ্যে সাত দিন হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম।
16 সাত দিন কেটে গেলে পর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে প্রকাশিত হল,
17 “হে মানুষের সন্তান, ইস্রায়েলীয়দের জন্য আমি তোমাকে পাহারাদার বানিয়েছি; কাজেই আমি যা বলি তা তুমি শোন এবং আমার হয়ে তাদের সতর্ক কর।
18 আমি যখন একজন দুষ্ট লোককে বলি, ‘তুমি নিশ্চয়ই মরবে,’ তখন তুমি যদি তাকে সাবধান না কর, কিম্বা তার প্রাণ বাঁচাতে মন্দ পথ থেকে ফিরাবার জন্য কিছু না বল, তবে সেই দুষ্ট লোক তার পাপের জন্য মরবে, কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব।
19 কিন্তু সেই দুষ্ট লোককে তুমি সাবধান করবার পরেও যদি সে তার দুষ্টতা থেকে কিম্বা তার মন্দ পথ থেকে না ফেরে, তবে তার পাপের জন্য সে মরবে; কিন্তু তুমি নিজে রক্ষা পাবে।
20 “আবার, যদি কোন সৎ লোক তার ঠিক পথ থেকে ফিরে মন্দ কাজ করে আর আমি তার সামনে একটা বিপদ রাখি, তবে সে মরবে। তুমি তাকে সাবধান কর নি বলে সে তার পাপের জন্য মরবে। যে সব সৎ কাজ সে করেছে তা আর মনে করা হবে না; আমি তোমাকে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করব।
21 কিন্তু পাপ না করবার জন্য যদি তুমি সেই সৎ লোককে সাবধান কর আর সে পাপ না করে তবে সাবধান হবার কথা শুনবার ফলে সে নিশ্চয়ই বাঁচবে এবং তুমিও নিজেকে রক্ষা করবে।”
22 সেখানে সদাপ্রভুর শক্তিশালী হাত আমার উপরে ছিল এবং তিনি আমাকে বললেন, “তুমি উঠে সমভূমিতে যাও, সেখানে আমি তোমার সংগে কথা বলব।”
23 কাজেই আমি উঠে সমভূমিতে গেলাম। কবার নদীর ধারে সদাপ্রভুর যে মহিমা দেখেছিলাম সেই রকম মহিমাই সেখানে দেখলাম; আর আমি উবুড় হয়ে পড়লাম।
24 তখন ঈশ্বরের আত্মা আমার মধ্যে এসে আমাকে তুলে পায়ের উপর দাঁড় করালেন। তিনি আমাকে বললেন, “তুমি তোমার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ভিতরে থাক।
25 হে মানুষের সন্তান, তোমাকে দড়ি দিয়ে বাঁধা হবে; তাতে তুমি বাইরে লোকজনের মধ্যে যেতে পারবে না।
26 তুমি যাতে চুপ করে থাক ও তাদের বকাবকি করতে না পার সেইজন্য আমি তোমার জিভ্ তোমার মুখের তালুতে আট্কে দেব। ইস্রায়েলীয়েরা তো একটা বিদ্রোহী জাতি।
27 কিন্তু আমি তোমার সংগে কথা বলবার সময় তোমার মুখ খুলে দেব এবং তুমি তাদের কাছে প্রভু সদাপ্রভুর বাক্য বলবে। তাদের মধ্যে যে শুনতে চায় সে শুনুক ও যে শুনতে না চায় সে না শুনুক; তারা তো একটা বিদ্রোহী জাতি।”