1 আমাদের বন্দীদশার পঁচিশ বছরের শুরুতে, মাসের দশ দিনের দিন, যিরূশালেম শহরের পতনের চৌদ্দ বছর পরে সদাপ্রভুর হাত আমার উপরে ছিল।
2 ঈশ্বরের দেওয়া দর্শনের মধ্যে তিনি আমাকে ইস্রায়েল দেশে নিয়ে গিয়ে একটা খুব উঁচু পাহাড়ের উপরে রাখলেন। সেই পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে কতগুলো দালান ছিল যেগুলো দেখতে শহরের মত।
3 তিনি আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন আর আমি একটা মানুষকে দেখলাম যার দেহ ব্রোঞ্জের মত ঝক্মক করছিল। হাতে মসীনার দড়ি ও মাপের কাঠি নিয়ে তিনি ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
4 লোকটি আমাকে বললেন, “হে মানুষের সন্তান, তুমি চোখ দিয়ে দেখ ও কান দিয়ে শোন এবং আমি তোমাকে যা দেখাব তার সব কিছুতে মনোযোগ দাও, কারণ সেইজন্যই তোমাকে এখানে আনা হয়েছে। তুমি যা কিছু দেখবে সবই ইস্রায়েলীয়দের বলবে।”
5 আমি দেখলাম একটা দেয়াল দিয়ে উপাসনা-ঘরের চারপাশটা ঘেরা রয়েছে। লোকটির হাতের মাপকাঠিটা লম্বায় ছয় হাত; প্রত্যেক হাত এক হাত চার আংগুল করে লম্বা। তিনি দেয়ালটা মাপলেন; সেটা এক মাপকাঠি মোটা আর এক মাপকাঠি উঁচু।
6 তারপর তিনি পূর্বমুখী ফটকের কাছে গেলেন। তিনি সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে ফটকে ঢুকবার মুখটা মাপলেন; সেটা লম্বায় ছিল এক মাপকাঠি।
7 ফটকে পাহারাদারদের কামরাগুলো এক মাপকাঠি লম্বা ও এক মাপকাঠি চওড়া এবং এক কামরা থেকে আর এক কামরার মধ্যেকার দেয়াল পাঁচ হাত মোটা ছিল। ফটকের শেষ অংশে উপাসনা-ঘরমুখী কামরায় ঢুকবার মুখটা ছিল এক মাপকাঠি লম্বা।
8 তারপর তিনি সেই কামরাটা মাপলেন; সেটা চওড়ায় ছিল সেই কামরায় ঢুকবার মুখের চওড়ার চেয়ে দু’পাশে এক মাপকাঠি করে বেশী।
9 সেই কামরাটা লম্বায় ছিল আট হাত এবং তা থেকে বের হবার পথের দু’পাশের থাম দু’টা ছিল দুই হাত করে চওড়া। ফটকের শেষে সেই কামরাটার মুখ ছিল উপাসনা-ঘরের দিকে।
10 পূর্ব দিকের ফটকের ভিতরের দু’পাশে তিনটা করে মোট ছয়টা কামরা ছিল; সেগুলোর প্রত্যেকটির মাপ সমান এবং সেগুলোর মধ্যেকার দেয়ালগুলোর প্রত্যেকটির মাপ একই ছিল।
11 তারপর তিনি ফটকের মাপ নিলেন; তার ঢুকবার পথ লম্বায় ছিল তেরো হাত এবং ঢুকবার মুখটা চওড়ায় ছিল দশ হাত।
12 পাহারাদারদের প্রত্যেকটি কামরার সামনে ছিল এক হাত উঁচু ও এক হাত চওড়া দেয়াল এবং কামরাগুলো লম্বা ও চওড়ায় ছিল ছয় হাত।
13 তারপর তিনি ফটকের ছাদের চওড়ার মাপ নিলেন; তিনি একটা কামরার বাইরের দিক থেকে তার সামনের কামরার বাইরের দিক পর্যন্ত মাপলেন- একটা কামরার দেয়ালের খোলা জায়গা থেকে তার সামনের কামরার দেয়ালের খোলা জায়গার দূরত্ব ছিল পঁচিশ হাত।
14 তিনি ফটকের থাম দু’টার উচ্চতা ষাট হাত করে ধরলেন। থাম দু’টা থেকে ফটকের উঠান শুরু হয়েছে।
15 ফটকে ঢুকবার মুখ থেকে ফটকের শেষ সীমার কামরা পর্যন্ত দূরত্ব ছিল পঞ্চাশ হাত।
16 কামরাগুলোর বাইরের দেয়ালে এবং থাম দু’টার পাশের দেয়ালে জালি দেওয়া জানলা ছিল, আর ফটকের শেষে যে কামরা ছিল তার দেয়ালেও তা-ই ছিল; এইভাবে ফটকের দেয়ালগুলোতে ঐ রকম জানলা ছিল। এছাড়া থাম দু’টার গায়ে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল।
17 তারপর তিনি আমাকে বাইরের উঠানে নিয়ে গেলেন। উঠানের সব দিকে আমি মোট ত্রিশটা এক দিক খোলা কামরা দেখলাম; সেগুলোর সামনে বাঁধানো জায়গা ছিল।
18 সেই বাঁধানো জায়গা প্রত্যেকটি ফটকের দু’পাশেও ছিল এবং ফটকের লম্বার সমান ছিল; এটা ছিল নীচের বাঁধানো জায়গা।
19 তারপর তিনি পূর্ব দিকের বাইরের উঠানের ফটকের শেষ সীমা থেকে ভিতরের উঠানের ফটকে ঢুকবার মুখ পর্যন্ত মাপলেন; তার দূরত্ব ছিল একশো হাত। সেইভাবে উত্তর দিকের দূরত্বও ছিল একশো হাত।
20 তারপর তিনি বাইরের উঠানের উত্তরমুখী ফটকের লম্বা ও চওড়া মাপলেন।
21 তার দু’পাশের তিনটা করে কামরার মাপ ও তার থামগুলো এবং তার শেষের কামরার মাপ প্রথম ফটকের সব কিছুর মাপের মতই ছিল। সেটা ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া।
22 তার জানলাগুলো, শেষের কামরা ও থামগুলোর খোদাই করা খেজুর গাছ পূর্বমুখী ফটকের মতই ছিল। সেখানে উঠবার সিঁড়ির সাতটা ধাপ ছিল এবং ফটকের শেষ সীমায় তার কামরা ছিল।
23 ভিতরের উঠানের পূর্বমুখী ফটকের মতই তার উত্তরমুখী একটা ফটক ছিল। তিনি বাইরের উঠানের ফটক থেকে ভিতরের উঠানের ফটক পর্যন্ত মাপলেন; তা একশো হাত হল।
24 তারপর তিনি আমাকে দক্ষিণ দিকে নিয়ে গেলেন। আমি বাইরের উঠানের দক্ষিণমুখী একটা ফটক দেখলাম। তিনি সেই ফটকের থামগুলো ও শেষের কামরা মাপলেন। অন্য ফটকগুলোর মত তার একই মাপ হল।
25 অন্যান্য ফটকের মতই এই ফটকেও জানলা ছিল। ফটকটা ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া।
26 সেখানে উঠবার সিঁড়ির সাতটা ধাপ ছিল এবং ফটকের শেষ সীমায় তার কামরা ছিল। ফটকের ভিতরের দু’পাশের থামগুলোতে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল।
27 ভিতরের উঠানেরও একটা দক্ষিণমুখী ফটক ছিল। তিনি সেই ফটক থেকে বাইরের উঠানের দক্ষিণমুখী ফটক পর্যন্ত মাপলেন; তা একশো হাত হল।
28 তারপর তিনি ভিতরের উঠানের দক্ষিণমুখী ফটকের মধ্য দিয়ে আমাকে ভিতরের উঠানে নিয়ে গেলেন এবং ফটকটা মাপলেন; সেটা অন্যগুলোর মত একই মাপের হল।
29 সেই ফটকের পাহারাদারদের কামরাগুলো, থাম দু’টা ও শেষের কামরাটা অন্যগুলোর মত একই মাপের ছিল। অন্যান্য ফটকের মতই এই ফটকেও জানলা ছিল। ফটকটা ছিল পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া।
30 ভিতরের উঠানের বিভিন্ন স্থানে থামের উপরে ছাদ দেওয়া জায়গা ছিল। সেগুলো ছিল পঁচিশ হাত লম্বা ও পাঁচ হাত চওড়া।
31 ভিতরের উঠানের দক্ষিণমুখী ফটকে ঢুকবার কামরার মুখ ছিল বাইরের উঠানের দিকে। ফটকে ঢুকবার পথের দু’পাশের থামগুলোতে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। সেখানে উঠবার সিঁড়ির আটটা ধাপ ছিল।
32 তারপর তিনি আমাকে ভিতরের উঠানের পূর্ব দিকে নিয়ে আসলেন এবং সেখানকার ফটকটা মাপলেন; সেটার মাপ অন্যগুলোর মতই ছিল।
33 তার পাহারাদারদের কামরাগুলো, থাম দু’টা ও ঢুকবার কামরাটা অন্যগুলোর মত একই মাপের ছিল। অন্যান্য ফটকের মত এই ফটকেও জানলা ছিল। ফটকটা পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া ছিল।
34 তার ঢুকবার কামরার মুখ ছিল বাইরের উঠানের দিকে। ফটকে ঢুকবার পথের দু’পাশের থামগুলোতে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। সেখানে উঠবার সিঁড়ির আটটা ধাপ ছিল।
35 তারপর তিনি আমাকে উত্তর-ফটকের কাছে এনে সেটা মাপলেন। সেটা অন্যগুলোর মত একই মাপের ছিল।
36 তার পাহারাদারদের কামরাগুলো, থাম দু’টা ও ঢুকবার কামরাটা অন্যগুলোর মত একই মাপের ছিল। অন্যান্য ফটকের মত এই ফটকেও জানলা ছিল। ফটকটা পঞ্চাশ হাত লম্বা ও পঁচিশ হাত চওড়া ছিল।
37 তার থাম দু’টা ছিল বাইরের উঠানের দিকে; সেগুলোতে খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। সেখানে উঠবার সিঁড়ির আটটা ধাপ ছিল।
38 বাইরের উঠানের মধ্যে ভিতরের ফটকের থামের পাশে এক দিক খোলা একটা কামরা ছিল; সেটা ছিল পোড়ানো-উৎসর্গের পশুর মাংস ধোবার জায়গা।
39 ফটকে ঢুকবার কামরার দু’পাশে দু’টা করে টেবিল ছিল। সেগুলোর উপরে পোড়ানো-উৎসর্গ, পাপ-উৎসর্গ ও দোষ-উৎসর্গের পশুর মাংস টুকরা করা হয়।
40 উত্তরমুখী ফটকে ঢুকবার পথের এক পাশে সিঁড়ির কাছে দু’টা টেবিল এবং সিঁড়ির অন্য পাশে দু’টা টেবিল ছিল।
41 এইভাবে ফটকের একপাশে চারটা ও অন্য পাশে চারটা মোট আটটা টেবিল ছিল যার উপর উৎসর্গের পশুর মাংস টুকরা করা হয়।
42 পোড়ানো-উৎসর্গের জন্য যে চারটা টেবিল ছিল সেগুলো পাথর কেটে তৈরী করা; প্রত্যেকটা টেবিল ছিল দেড় হাত লম্বা, দেড় হাত চওড়া ও এক হাত উঁচু। সেখানে উৎসর্গের যন্ত্রপাতি রাখা হয়।
43 চার আংগুল লম্বা দু’কাঁটার আঁকড়া দেয়ালের গায়ে লাগানো ছিল। টেবিলগুলোর উপরে উৎসর্গের মাংস রাখা হয়।
44 ভিতরের উঠানের মধ্যে ফটকের পাশে গায়কদের জন্য তিনটা এক দিক খোলা কামরা ছিল; দু’টা উত্তর-ফটকের পাশে দক্ষিণমুখী আর একটা পূর্ব-ফটকের পাশে উত্তরমুখী।
45-46 তিনি আমাকে বললেন, “দক্ষিণমুখী কামরাটা উপাসনা-ঘরের দেখাশোনার ভার-পাওয়া পুরোহিতদের জন্য আর উত্তরমুখী কামরাটা বেদীর দেখাশোনার ভার-পাওয়া পুরোহিতদের জন্য। সেই পুরোহিতেরা হল সাদোকের ছেলেরা; লেবীয়দের মধ্যে কেবল তারাই সদাপ্রভুর সামনে তাঁর সেবা-কাজের জন্য যেতে পারে।”
47 তারপর তিনি উঠানটা মাপলেন। সেটা ছিল একশো হাত লম্বা ও একশো হাত চওড়া একটা চারকোণা জায়গা। আর বেদীটা উপাসনা-ঘরের সামনে ছিল।
48 তারপর তিনি আমাকে উপাসনা-ঘরের বারান্দায় আনলেন এবং বারান্দার সামনের থাম দু’টা ও ঢুকবার পথের দু’পাশের বাজু মাপলেন। প্রত্যেকটা বাজু পাঁচ হাত চওড়া ও তিন হাত মোটা ছিল।