1 তারপর তিনি আমাকে পূর্বমুখী ফটকের কাছে আনলেন,
2 আর আমি পূর্ব দিক থেকে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা আসতে দেখলাম। তাঁর গলার স্বর ছিল জোরে বয়ে যাওয়া জলের গর্জনের মত এবং তাঁর মহিমায় পৃথিবী উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
3 এই দর্শন দেখে আমি উবুড় হয়ে পড়লাম; আমি শহর-ধ্বংসের যে দর্শন কবার নদীর ধারে দেখেছিলাম এই দর্শনটা ছিল তারই মত।
4 সদাপ্রভুর মহিমা পূর্বমুখী ফটকের মধ্য দিয়ে উপাসনা-ঘরে ঢুকল।
5 তখন সদাপ্রভুর আত্মা আমাকে তুলে ভিতরের উঠানে নিয়ে গেলেন, আর সদাপ্রভুর মহিমায় উপাসনা-ঘরটা ভরে গেল।
6 সেই মানুষটি তখন আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, আর আমি উপাসনা-ঘরের মধ্য থেকে কাউকে আমার সংগে কথা বলতে শুনলাম।
7 তিনি বললেন, “হে মানুষের সন্তান, এটাই আমার সিংহাসনের স্থান ও আমার পা রাখবার জায়গা। আমি এখানেই ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে চিরকাল বাস করব। ইস্রায়েলীয়েরা আর কখনও আমার পবিত্র নাম কলংকিত করবে না। তাদের কিম্বা তাদের রাজাদের প্রতিমাপূজা দ্বারা এবং পূজার উঁচু স্থানে তাদের রাজাদের মৃতদেহ নিয়ে যাবার দ্বারা আমার নাম কলংকিত করবে না।
8 তারা আমার ঘরের পাশেই তাদের ঘর তৈরী করেছিল; তাদের ঘর ও আমার ঘরের মধ্যে কেবল একটা দেয়াল ছিল। তাদের জঘন্য কাজ দ্বারা তারা আমার পবিত্র নাম কলংকিত করেছিল। কাজেই আমি ক্রোধে তাদের ধ্বংস করেছিলাম।
9 এখন তারা আমার কাছ থেকে তাদের প্রতিমাপূজা ও তাদের রাজাদের মৃতদেহ দূর করুক; তাতে আমি চিরকাল তাদের মধ্যে বাস করব।
10 “হে মানুষের সন্তান, তুমি ইস্রায়েলীয়দের কাছে এই উপাসনা-ঘরের বিষয় বল এবং এর নক্শাটার বিষয় চিন্তা করে দেখতে বল, যাতে তারা তাদের পাপের জন্য লজ্জিত হয়।
11 তারা যদি তাদের সব কাজের জন্য লজ্জিত হয় তবে উপাসনা-ঘরের নক্শাটার খুঁটিনাটি তাদের জানাও; তার কাঠামো, তার বাইরে যাবার ও ভিতরে ঢুকবার পথ, অর্থাৎ তার পুরো নক্শা ও তার সব নিয়ম ও আইন-কানুন তাদের কাছে প্রকাশ কর। তার সব কিছু তাদের সামনে লেখ যাতে তারা তার নক্শা অনুসারে কাজ করতে পারে এবং তার সব নিয়ম মেনে চলতে পারে।
12 “এই হল উপাসনা-ঘরের আইন- পাহাড়ের উপরকার চারদিকের সব এলাকা হবে মহা পবিত্র। উপাসনা-ঘরের আইন এই রকমই।
13 “উপাসনা-ঘরের বেদীর মাপ হাতের মাপ অনুসারে করা হয়েছিল; প্রত্যেক হাত ছিল এক হাত চার আংগুল করে। এই হল বেদীর মাপ: বেদীর ভিত্তিটা এক হাত উঁচু ও তার চারদিক বেদী থেকে এক হাত করে বাড়ানো এবং ভিত্তির চারদিকের কিনারা আধ হাত উঁচু। বেদীটা এই রকম উঁচু হবে-
14-16 নীচের অংশটা ভিত্তি থেকে দু’হাত উঁচু; তার উপরের অংশটা চার হাত উঁচু কিন্তু নীচের অংশ থেকে চারদিকে এক হাত করে ছোট এবং তার উপরের অংশটা তার নীচের অংশ থেকে চার হাত উঁচু, কিন্তু নীচের অংশ থেকে চারদিকে এক হাত করে ছোট। বেদীর উপরের অংশটা হবে চৌকো, বারো হাত লম্বা ও বারো হাত চওড়া। তার চারকোণা থেকে চারটা শিং উপর দিকে বেরিয়ে থাকবে।
17 মাঝখানের অংশটাও চৌকো, চৌদ্দ হাত লম্বা ও চৌদ্দ হাত চওড়া। কাজেই সেই অংশটা তার উপরের অংশ থেকে চারদিকে এক হাত বাড়ানো থাকবে; তার কিনারা আধা হাত উঁচু থাকবে। বেদীর সিঁড়িগুলো পূর্বমুখী।”
18 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানুষের সন্তান, প্রভু সদাপ্রভু বলছেন যে, বেদীটা তৈরী হলে পর যেদিন সেটি সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে যাতে তার উপর পোড়ানো-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করা ও রক্ত ছিটানো যায় সেই দিন এই নিয়ম পালন করতে হবে:
19 সাদোকের বংশের যে পুরোহিতেরা আমার সেবা করবার জন্য আমার কাছে আসে তুমি পাপ-উৎসর্গের জন্য তাদের একটা যুবা ষাঁড় দেবে।
20 তুমি তার কিছু রক্ত নিয়ে বেদীর চারটা শিংয়ে, মাঝখানের অংশের চার কোণায় ও কিনারার সব দিকে লাগাবে; এইভাবে পাপ ঢাকবার অনুষ্ঠান করে বেদীটা শুচি করবে।
21 তুমি পাপ-উৎসর্গের জন্য জবাই করা ষাঁড়টা নিয়ে উপাসনা-ঘরের এলাকার বাইরে পবিত্র জায়গার নির্দিষ্ট স্থানে সেটা পোড়াবে।
22 “দ্বিতীয় দিনে তুমি একটা খুঁতহীন পাঁঠা নিয়ে আসবে, আর পুরোহিতেরা পাপ-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবে এবং বেদীটা ষাঁড়ের রক্ত দিয়ে যেমন শুচি করা হয়েছিল তেমনিভাবে শুচি করবে।
23-24 বেদীটা শুচি করা হলে পর তুমি একটা খুঁতহীন যুবা ষাঁড় ও পাল থেকে একটা খুঁতহীন ভেড়া নিয়ে সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত করবে; পুরোহিতেরা তার উপর নুন ছিটিয়ে দিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে পোড়ানো-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবে।
25 “সাত দিন ধরে তোমাকে প্রতিদিন পাপ-উৎসর্গের জন্য একটা করে পাঁঠা দিতে হবে। এছাড়াও একটা যুবা ষাঁড় ও পাল থেকে একটা ভেড়া দিতে হবে; সবগুলোই যেন খুঁতহীন হয়।
26 পুরোহিতেরা সাত দিন ধরে বেদীর পাপ ঢাকবার অনুষ্ঠান করে সেটা শুচি করবে; এইভাবে তারা বেদীটা সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করবে।
27 এই দিনগুলো শেষ হলে পর আট দিনের দিন থেকে পুরোহিতেরা সেই বেদীর উপর তোমাদের পোড়ানো ও যোগাযোগ-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবে। তখন আমি তোমাদের গ্রহণ করব। আমি প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলছি।”