1 “সাবধান, লোককে দেখাবার জন্য ধর্মকর্ম কোরো না; যদি কর তবে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছ থেকে কোন পুরস্কার পাবে না।
2 “এইজন্য যখন তুমি গরীবদের কিছু দাও তখন ভণ্ডদের মত কোরো না। তারা তো লোকদের প্রশংসা পাবার জন্য সমাজ-ঘরে এবং পথে পথে ঢাক- ঢোল বাজিয়ে ভিক্ষা দেয়। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
3 কিন্তু তুমি যখন গরীবদের কিছু দাও তখন তোমার ডান হাত কি করছে তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিয়ো না,
4 যেন তোমার দান করা গোপনে হয়। তাহলে তোমার পিতা, যিনি গোপনে সব কিছু দেখেন, তিনিই তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
5 “তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন ভণ্ডদের মত কোরো না, কারণ তারা লোকদের কাছে নিজেদের দেখাবার জন্য সমাজ-ঘরে ও রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে ভালবাসে। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর তখন ভিতরের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ কোরো এবং তোমার পিতা, যাঁকে দেখা না গেলেও উপস্থিত আছেন, তাঁর কাছে প্রার্থনা কোরো। তোমার পিতা, যিনি গোপন সব কিছু দেখেন, তিনিই তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
7 “যখন তোমরা প্রার্থনা কর তখন অযিহূদীদের মত অর্থহীন কথা বার বার বোলো না। অযিহূদীরা মনে করে, বেশী কথা বললেই ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন।
8 তাদের মত কোরো না, কারণ তোমাদের পিতার কাছে চাইবার আগেই তিনি জানেন তোমাদের কি দরকার।
9 এইজন্য তোমরা এইভাবে প্রার্থনা কোরো:হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা,তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক।
10 তোমার রাজ্য আসুক।তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গেতেমনি পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক।
11 যে খাবার আমাদের দরকারতা আজ আমাদের দাও।
12 যারা আমাদের উপর অন্যায় করে,আমরা যেমন তাদের ক্ষমা করেছিতেমনি তুমিও আমাদের সমস্ত অন্যায় ক্ষমা কর।
13 আমাদের তুমি পরীক্ষায় পড়তে দিয়ো না,বরং শয়তানের হাত থেকে রক্ষা কর।
14 তোমরা যদি অন্যদের দোষ ক্ষমা কর তবে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তোমাদেরও ক্ষমা করবেন।
15 কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের ক্ষমা না কর তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও ক্ষমা করবেন না।
16 “তোমরা যখন উপবাস কর তখন ভণ্ডদের মত মুখ কালো করে রেখো না। তারা যে উপবাস করছে তা লোকদের দেখাবার জন্য তারা মাথায় ও মুখে ছাই মেখে বেড়ায়। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
17 কিন্তু তুমি যখন উপবাস কর তখন মাথায় তেল দিয়ো ও মুখ ধুয়ো,
18 যেন অন্যেরা জানতে না পারে যে, তুমি উপবাস করছ। তাহলে তোমার পিতা, যিনি দেখা না গেলেও উপস্থিত আছেন, কেবল তিনিই তা দেখতে পাবেন। তোমার পিতা, যিনি গোপন সব কিছু দেখেন, তিনিই তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
19 “এই পৃথিবীতে তোমরা নিজেদের জন্য ধন-সম্পদ জমা কোরো না। এখানে মরচে ধরে ও পোকায় নষ্ট করে এবং চোর সিঁদ কেটে চুরি করে।
20 কিন্তু স্বর্গে মরচেও ধরে না, পোকায় নষ্টও করে না এবং চোর সিঁদ কেটে চুরিও করে না। তাই স্বর্গে নিজেদের জন্য ধন জমা কর,
21 কারণ তোমার ধন যেখানে থাকবে তোমার মনও সেখানে থাকবে।
22 “চোখ দেহের প্রদীপ। সেইজন্য তোমার চোখ যদি ভাল হয় তবে তোমার সমস্ত দেহই আলোতে পূর্ণ হবে।
23 কিন্তু তোমার চোখ যদি মন্দ হয় তবে তোমার সমস্ত দেহ অন্ধকারে পূর্ণ হবে। তোমার মধ্যে যে আলো আছে তা যদি আসলে অন্ধকারই হয় তবে সেই অন্ধকার কি ভীষণ!
24 “কেউই দুই কর্তার সেবা করতে পারে না, কারণ সে একজনকে ঘৃণা করবে ও অন্যজনকে ভালবাসবে। সে একজনের উপরে মনোযোগ দেবে ও অন্যজনকে তুচ্ছ করবে। ঈশ্বর এবং ধন-সম্পত্তি এই দু’য়ের সেবা তোমরা একসংগে করতে পার না।
25 “এইজন্য আমি তোমাদের বলছি, কি খাবে বলে বেঁচে থাকবার বিষয়ে কিম্বা কি পরবে বলে দেহের বিষয়ে চিন্তা কোরো না। প্রাণটা কেবল খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপার নয়, আর দেহটা কেবল কাপড়- চোপড়ের ব্যাপার নয়।
26 “আকাশের পাখীদের দিকে তাকিয়ে দেখ; তারা বীজ বোনে না, কাটে না, গোলাঘরে জমাও করে না, আর তবুও তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তাদের খাইয়ে থাকেন। তোমরা কি তাদের থেকে আরও মূল্যবান নও?
27 তোমাদের মধ্যে কে চিন্তা-ভাবনা করে নিজের আয়ু এক ঘণ্টা বাড়াতে পারে?
28 “কাপড়-চোপড়ের জন্য কেন চিন্তা কর? মাঠের ফুলগুলোর কথা ভেবে দেখ সেগুলো কেমন করে বেড়ে ওঠে। তারা পরিশ্রম করে না, সুতাও কাটে না।
29 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, শলোমন রাজা এত জাঁকজমকের মধ্যে থেকেও এগুলোর একটারও মত তিনি নিজেকে সাজাতে পারেন নি।
30 মাঠের যে ঘাস আজ আছে আর কাল চুলায় ফেলে দেওয়া হবে, তা যখন ঈশ্বর এইভাবে সাজান তখন ওহে অল্প বিশ্বাসীরা, তিনি যে তোমাদের নিশ্চয়ই সাজাবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই।
31 এইজন্য ‘কি খাব’ বা ‘কি পরব’ বলে চিন্তা কোরো না। অযিহূদীরাই এই সব বিষয়ের জন্য ব্যস্ত হয়;
32 তা ছাড়া তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তো জানেন যে, এই সব জিনিস তোমাদের দরকার আছে।
33 কিন্তু তোমরা প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে ও তাঁর ইচ্ছামত চলবার জন্য ব্যস্ত হও। তাহলে ঐ সব জিনিসও তোমরা পাবে। কালকের বিষয় চিন্তা কোরো না;
34 কালকের চিন্তা কালকের উপর ছেড়ে দাও। দিনের কষ্ট দিনের জন্য যথেষ্ট।