1 এর পর মূসা ও বনি-ইসরাইলরা মাবুদের উদ্দেশে এই কাওয়ালী গাইলেন:“আমি মাবুদের উদ্দেশে কাওয়ালী গাইব,কারণ লোকের চোখে তাঁর মহিমা বেড়ে গেল।ঘোড়া আর ঘোড়সওয়ারের দলগুলোকেতিনিই সাগরের পানিতে ফেলে দিলেন।
2 মাবুদই আমার শক্তি, তিনিই আমার কাওয়ালী;আমার উদ্ধার তাঁরই মধ্যে রয়েছে।মাবুদই আমার আল্লাহ্;আমি তাঁরই প্রশংসা-কাওয়ালী গাইব।তিনি আমার পিতার আল্লাহ্;আমি তাঁর মহিমা কাওয়ালী গাইব।
3 তাঁর নাম ‘মাবুদ’, তিনি বীর যোদ্ধা।
4 ফেরাউনের রথ আর সৈন্যদলগুলোকেতিনিই সাগরের পানিতে ফেলে দিলেন;ফেরাউনের বাছাই করা কর্মচারীর দললোহিত সাগরে ডুবে মরল।
5 তারা গভীর পানিতে ঢাকা পড়লআর পাথরের মত করে সাগরের তলায় ডুবে গেল।
6 “হে মাবুদ, ক্ষমতায় মহান তোমার ঐ ডান হাতখানা,হ্যাঁ, ঐ ডান হাতখানা শত্রুকে চুরমার করল।
7 যারা তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়ালতোমার মহান মহিমায়তুমি তাদের নীচে ফেলে দিলে;তোমার পাঠানো জ্বলন্ত গজবখড়কুটার মত তাদের পুড়িয়ে ফেলল।
8 তোমার নিঃশ্বাসের ঝাপটায়পানি জড়ো হয়ে উঠল।ঢেউ ভরা সব পানিঢিবির মত হয়ে দাঁড়িয়ে গেল,আর অথৈ পানি জমাট বাঁধল সাগরের বুকে।
9 “শত্রু বলল, ‘আমি ওদের তাড়া করব, ধরে ফেলবআর ওদের জিনিস ভাগ করে নেব;আমি নিজেকে পূর্ণ করে নেব ঐ সব জিনিস দিয়ে।আমি তলোয়ার হাতে ওদের তাড়া করব।’
10 কিন্তু তুমি ফুঁ দিয়ে বাতাস বহালে,আর সাগরও তাদের ঢেকে ফেলল।তারা গভীর পানির তলায় সীসার মত করে ডুবে গেল।
11 “হে মাবুদ,দেবতাদের মধ্যে কে আছে তোমার মত?কে আছে তোমার মত এমন পবিত্রতায় মহানআর মহিমায় ভয়ংকর?এমন কুদরতি কাজের শক্তি কার আছে?
12 তোমার ডান হাতখানা তুমি বাড়িয়ে দিলে,আর দুনিয়া তাদের গিলে ফেলল।
13 তোমার অটল মহব্বতে তুমি যাদের ছাড়িয়ে আনলেতাদের তুমিই চালিয়ে নেবে।তোমার নিজের শক্তিতে তোমার পবিত্র বাসস্থানেতুমি তাদের চালিয়ে আনবে।
14 সেই কথা শুনে অন্য জাতিরা ভীষণ ভয়ে কাঁপবে,আর ফিলিস্তিনীদের মন দারুণ ব্যথায় কাতর হবে।
15-16 ইদোমীয় সর্দারেরা ভয়ে দিশেহারা হবে;মোয়াবীয় নেতারা কাঁপতে থাকবে,আর ভীষণ ভয়ের সামনে পড়েকেনানীয়রা সাহস হারাবে।হে মাবুদ, তোমার বান্দাদের যাওয়াশেষ না হওয়া পর্যন্ত,তোমার ছাড়িয়ে নেওয়া বান্দাদের যাওয়াশেষ না হওয়া পর্যন্ততোমার মহা শক্তির সামনেঐ সব জাতি পাথরের মত পড়ে থাকবে।
17 তুমিই তোমার বান্দাদের এনে চারার মত করেলাগিয়ে দেবে তোমার নিজের পাহাড়ে।হে মাবুদ, তোমার নিজের হাতে করাওটাই তোমার বাসস্থান;হে মালিক, তোমার নিজের হাতে গড়াওটাই সেই পবিত্র স্থান;
18 হে মাবুদ, যুগ যুগ ধরে তুমিই রাজত্ব করবে।”
19 ফেরাউনের সমস্ত ঘোড়া, রথ আর ঘোড়সওয়ার যখন সমুদ্রের মধ্যে ঢুকল তখন মাবুদ সমুদ্রের পানি তাদের উপর ফিরিয়ে আনলেন। কিন্তু বনি-ইসরাইলরা সমুদ্রের মাঝখানে শুকনা জমির উপর দিয়ে হেঁটে চলে গিয়েছিল।
20 হারুনের বোন মরিয়ম ছিলেন একজন মহিলা-নবী। তিনি খঞ্জনি হাতে নিলেন, আর তাঁর পিছনে পিছনে অন্যান্য স্ত্রীলোকেরাও খঞ্জনি হাতে নাচতে নাচতে বের হয়ে আসল।
21 মূসার কাওয়ালীর জবাবে মরিয়ম এই কাওয়ালী গাইলেন:“তোমরা মাবুদের উদ্দেশে কাওয়ালী গাও,কারণ লোকের চোখে তাঁর মহিমা বেড়ে গেল।ঘোড়া আর ঘোড়সওয়ারের দলগুলোকেতিনিই ফেলে দিলেন সাগরের পানিতে।”
22 পরে মূসা লোহিত সাগর থেকে বনি-ইসরাইলদের নিয়ে চললেন। তারা প্রথমে শূর নামে এক মরুভূমিতে গেল। সেই মরুভূমিতে তিন দিন পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে তারা কোথাও পানি পেল না।
23 পরে তারা মারা নামে একটা মরুদ্যানের কাছে উপস্থিত হল, কিন্তু তেতো বলে সেখানকার পানি তারা খেতে পারল না। সেইজন্য সেই জায়গার নাম হয়েছিল মারা (যার মানে “তেতো”)।
24 এতে লোকেরা বিরক্তির সংগে মূসাকে বলল, “এখন আমরা খাবার পানি পাব কোথায়?”
25 এই কথা শুনে মূসা গিয়ে মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জানাতে লাগলেন। তিনি মূসাকে একটা গাছ দেখিয়ে দিলেন। মূসা সেটা পানিতে ফেলে দিলেন আর সেই পানি খাবার উপযুক্ত হল।মাবুদ সেখানে তাদের পরীক্ষায় ফেলেছিলেন এবং তাদের জন্য একটা নিয়ম ও আইন স্থাপন করেছিলেন।
26 তিনি বলেছিলেন, “তোমরা যদি তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্র কথা মেনে তাঁর চোখে যা উচিত তা-ই কর এবং তাঁর হুকুমে কান দাও ও তাঁর দেওয়া সমস্ত নিয়ম পালন কর, তাহলে মিসরীয়দের উপর আমি যে সব রোগ এনেছিলাম তা তোমাদের উপর আনব না। আমি মাবুদই তোমাদের সুস্থতা দান করি।”
27 এর পর তারা এলীম নামে একটা মরুদ্যানের কাছে উপস্থিত হল। সেখানে বারোটা ঝর্ণা এবং সত্তরটা খেজুর গাছ ছিল। সেই ঝর্ণার পানির কাছেই তারা ছাউনি ফেলল।