হিজরত 29 MBCL

ইমামদের পাক-পবিত্র করবার নিয়ম

1 “ইমাম হয়ে যাতে তারা আমার এবাদত-কাজ করতে পারে সেইজন্য তুমি তাদের এইভাবে পাক-পবিত্র করে নেবে। তুমি একটা ষাঁড় ও দু‘টা ভেড়া নেবে। সেগুলোর গায়ে যেন কোন খুঁত না থাকে।

2 তারপর মিহি ময়দা দিয়ে রুটি, তেলের ময়ান দেওয়া পিঠা আর তেল লাগানো চাপাটি তৈরী করবে। এর কোনটাতেই খামি দেবে না।

3 সেগুলো একটা টুকরির মধ্যে রাখবে এবং সেই ষাঁড় ও ভেড়া দু’টার সংগে টুকরিটা আমার সামনে রাখবে।

4 তারপর হারুন ও তার ছেলেদের মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে নিয়ে যাবে এবং পানি দিয়ে তাদের শরীর ধুয়ে দেবে।

5 পরে সেই বিশেষ পোশাকগুলো নিয়ে হারুনকে ভিতরের কোর্তা, এফোদের নীচে পরবার লম্বা কোর্তা, এফোদ এবং বুক-ঢাকনটা পরিয়ে দেবে। পাকা হাতে বোনা কোমরের পটির সংগে এফোদটা বেঁধে দেবে।

6 তারপর তার মাথার উপর পাগড়ি পরিয়ে দিয়ে তার উপর সেই সোনার পাতের পবিত্র তাজটা লাগিয়ে দেবে।

7 এর পর অভিষেকের তেল নিয়ে তার মাথায় ঢেলে দিয়ে তাকে অভিষেক করবে।

8-9 তার ছেলেদের এনে তাদেরও কোর্তা পরাবে এবং হারুন ও তার ছেলেদের কোমর-বাঁধনি পরিয়ে দেবে। তারপর ছেলেদের মাথায় টুপি দেবে। এই ভাবে তুমি হারুন ও তার ছেলেদের ইমামের পদে বহাল করবে। একটা স্থায়ী নিয়ম হিসাবে এই ইমাম-পদ তাদের বংশেই থাকবে।

10 “পরে সেই ষাঁড়টাকে তুমি মিলন-তাম্বুর সামনে আনবে, আর হারুন ও তার ছেলেরা ওটার মাথার উপর তাদের হাত রাখবে।

11 তারপর মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে মাবুদের সামনে তুমি ষাঁড়টা জবাই করবে।

12 পরে কিছুটা রক্ত নিয়ে তুমি আংগুল দিয়ে কোরবানগাহের শিংগুলোতে লাগিয়ে দেবে আর বাকী রক্ত কোরবানগাহের গোড়ায় ঢেলে দেবে।

13 তারপর পেটের ভিতরের অংশগুলোর উপরকার চর্বি, কলিজার উপরের অংশ এবং চর্বিসুদ্ধকিড্‌নি দু’টা নিয়ে কোরবানগাহের উপর পুড়িয়ে ফেলবে।

14 ষাঁড়টার গোশ্‌ত, চামড়া এবং গোবর সুদ্ধ নাড়ীভুঁড়ি বনি-ইসরাইলদের ছাউনি থেকে দূরে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলবে। এটা একটা গুনাহের জন্য কোরবানী।

15 “তারপর সেই ভেড়া দু’টার একটা নিয়ে আসবে। হারুন ও তার ছেলেরা সেই ভেড়াটার মাথার উপর তাদের হাত রাখবে।

16 এর পর ভেড়াটা জবাই করে তার রক্ত নিয়ে কোরবানগাহের চারপাশের গায়ে ছিটিয়ে দেবে।

17 পরে ভেড়াটা কেটে টুকরা টুকরা করে তার পা এবং পেটের ভিতরকার অংশগুলো ধুয়ে নিয়ে মাথা ও অন্যান্য টুকরাগুলোর সংগে রাখবে।

18 তারপর তার সবটাই কোরবানগাহের উপর পুড়িয়ে ফেলবে। এটা মাবুদের উদ্দেশে পোড়ানো-কোরবানী, অর্থাৎ মাবুদের উদ্দেশে আগুনে করা কোরবানী, যার গন্ধে তিনি খুশী হন।

19 “তারপর অন্য ভেড়াটাও নেবে এবং হারুন ও তার ছেলেরা তার মাথার উপরে তাদের হাত রাখবে।

20 পরে ভেড়াটা জবাই করে তার কিছু রক্ত নিয়ে হারুন ও তার ছেলেদের ডান কানের লতিতে এবং ডান হাত ও পায়ের বুড়ো আংগুলে লাগিয়ে দেবে। এছাড়া আরও কিছু রক্ত নিয়ে কোরবানগাহের চারপাশের গায়ে ছিটিয়ে দেবে।

21 তারপর কিছু অভিষেকের তেল এবং কোরবানগাহ্‌ থেকে কিছু রক্ত নিয়ে হারুন ও তার ছেলেদের শরীরে এবং পোশাকের উপর ছিটিয়ে দেবে। এতে পোশাকসুদ্ধ তাকে ও তার ছেলেদের পাক-পবিত্র করা হবে।

22 “তারপর তুমি সেই ভেড়াটার চর্বি, চর্বিভরা লেজ, পেটের ভিতরের অংশগুলোর উপরকার চর্বি, কলিজার উপরের অংশ, চর্বি-জড়ানো কিড্‌নি দু’টা এবং ডান দিকের রানটা নেবে। এটা হল পদে বহাল করবার কাজের ভেড়া।

23 তারপর মাবুদের সামনে রাখা খামিহীন রুটির টুকরি থেকে একটা রুটি, একটা তেলে ময়ান দেওয়া পিঠা ও চাপাটি নেবে।

24 এগুলো সব হারুন ও তার ছেলেদের হাতে দিয়ে দোলন-কোরবানী হিসাবে মাবুদের সামনে তা দোলাবে।

25 তারপর সেগুলো তাদের হাত থেকে নিয়ে কোরবানগাহের উপর পোড়ানো-কোরবানীর সংগে পুড়িয়ে ফেলবে। এটা মাবুদের উদ্দেশে আগুনে করা কোরবানী যার গন্ধে তিনি খুশী হন।

26 হারুনের ইমাম-পদে বহাল করবার কাজের এই ভেড়াটার বুকের অংশ নিয়ে দোলন-কোরবানী হিসাবে মাবুদের সামনে তা দোলাবে। এটা তোমার ভাগে পড়বে।

27 “হারুন ও তার ছেলেদের ইমাম-পদে বহাল করবার ভেড়াটা থেকে নেওয়া দোলন-কোরবানীর গোশ্‌ত এবং কোরবানী দেওয়া রানের গোশ্‌ত পাক-পবিত্র করবে।

28 এইভাবে বনি-ইসরাইলদের দেওয়া সব যোগাযোগ-কোরবানীর এই অংশগুলো সব সময় হারুন ও তার ছেলেদের দেওয়া হবে। এই অংশগুলোই হবে মাবুদের উদ্দেশে বনি-ইসরাইলদের দান।

29 “হারুনের পবিত্র পোশাকগুলো তার বংশধরেরা পাবে। এগুলো পরিয়েই তাদের অভিষেক ও ইমামের পদে বহাল করতে হবে।

30 হারুনের পরে তার যে ছেলে ইমাম হয়ে মিলন-তাম্বুর পবিত্র স্থানে এবাদত-কাজ করতে যাবে তাকে সাত দিন পর্যন্ত এই পোশাক গায়ে রাখতে হবে।

31 “বহাল করবার কাজের এই ভেড়াটার গোশ্‌ত নিয়ে একটা পবিত্র জায়গায় সিদ্ধ করতে হবে।

32 মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে হারুন ও তার ছেলেরা টুকরিতে রাখা রুটির সংগে এই গোশ্‌ত খাবে।

33 তাদের ইমামের কাজে বহাল করবার জন্য এবং পাক-পবিত্র করবার জন্য যে সব কোরবানী দেওয়া খাবার গুনাহ্‌ ঢাকবার কাজে ব্যবহার করা হবে তা হারুন ও তার ছেলেদের খেতে হবে। অন্য কেউ তা খেতে পারবে না, কারণ তা পবিত্র খাবার।

34 এই বহাল করবার কাজের ভেড়ার কোন গোশ্‌ত বা রুটি যদি সকাল পর্যন্ত থেকে যায় তবে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। তা যেন কেউ না খায়, কারণ সেটা পবিত্র খাবার।

35 “হারুন ও তার ছেলেদের প্রতি আমি যা যা তোমাকে করতে বললাম তা সবই তুমি করবে। এই বহাল করবার কাজটা তুমি সাত দিন ধরে করবে।

36 গুনাহ্‌ ঢাকা দেবার জন্য গুনাহের কোরবানী হিসাবে তুমি সেই সাত দিনের প্রত্যেক দিন একটা করে ষাঁড় কোরবানী দেবে। গুনাহ্‌ ঢাকা দেবার কোরবানী দ্বারা কোরবানগাহ্‌টা পাক-সাফ করবে এবং তেল ঢেলে সেটা পাক-পবিত্র করে নেবে।

37 কোরবানগাহ্‌টা পাক-সাফ করে নেবার জন্য সাত দিন পর্যন্ত প্রতিদিন গুনাহ্‌ ঢাকা দেবার কোরবানী দ্বারা সেটা পাক-পবিত্র করে নিতে হবে। তাতে সেই কোরবানগাহ্‌টা একটা মহাপবিত্র জিনিস হবে। তার ছোঁয়ায় যা কিছু আসবে তা পাক-পবিত্র হতে হবে।

38 “এর পর থেকে সেই কোরবানগাহের উপর প্রত্যেক দিন নিয়মিত ভাবে দু’টা করে ভেড়ার বাচ্চা কোরবানী দিতে হবে; তার প্রত্যেকটার বয়স হবে এক বছর।

39 একটা কোরবানী দিতে হবে সকালবেলায় আর অন্যটি সন্ধ্যাবেলায়।

40 প্রথম ভেড়াটার সংগে এক কেজি আটশো গ্রাম মিহি ময়দা প্রায় এক লিটার ছেঁচা জলপাইয়ের তেলের সংগে মিশিয়ে কোরবানী করতে হবে। এছাড়া ঢালন-কোরবানী হিসাবে প্রায় এক লিটার আংগুর-রসও কোরবানী করতে হবে।

41 সন্ধ্যাবেলায় যে ভেড়াটা কোরবানী দেওয়া হবে তার সংগে সকালবেলার মত সেই একই রকমের শস্য-কোরবানী এবং ঢালন-কোরবানী করতে হবে। এটা হবে মাবুদের উদ্দেশে আগুনে করা কোরবানী যার গন্ধে তিনি খুশী হন।

42 “বংশের পর বংশ ধরে মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে মাবুদের, অর্থাৎ আমার সামনে নিয়মিত ভাবে এই পোড়ানো-কোরবানী দিতে হবে। সেখানেই আমি তোমাদের সংগে দেখা করব এবং তোমার সংগে কথা বলব।

43 বনি-ইসরাইলদের সংগে আমি সেখানে দেখা করব এবং আমার মহিমা সেই জায়গাটাকে পবিত্র করবে।

44 “আমি মিলন-তাম্বু ও কোরবানগাহ্‌ পাক-পবিত্র করব এবং আমার ইমাম হবার জন্য হারুন ও তার ছেলেদেরও পাক-পবিত্র করব।

45 আমি বনি-ইসরাইলদের মাবুদ হয়ে তাদের মধ্যে বাস করব।

46 তখন তারা জানতে পারবে যে, আমি আল্লাহ্‌ই তাদের মাবুদ। আমি তাদের মধ্যে বাস করব বলেই মিসর দেশ থেকে তাদের বের করে এনেছি। আমি আল্লাহ্‌ই তাদের মাবুদ।

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40