হিজরত 7 MBCL

1 তখন মাবুদ মূসাকে বললেন, “দেখ, ফেরাউনের কাছে আমি তোমাকে আল্লাহ্‌র মত করব, আর তোমার ভাই হারুন হবে তোমার নবী।

2 আমি তোমাকে যে সব হুকুম দিচ্ছি তা সবই তুমি প্রকাশ করবে। তোমার ভাই হারুন ফেরাউনকে বলবে, যেন সে তার দেশ থেকে বনি-ইসরাইলদের যেতে দেয়।

3-4 কিন্তু আমি ফেরাউনের মন কঠিন করব যাতে আমি মিসর দেশে অনেক অলৌকিক চিহ্ন ও কুদরতি দেখাতে পারি। সে কিছুতেই তোমাদের কথা শুনবে না। সেইজন্য আমি মিসর দেশের উপরে আমার হাত তুলব এবং ভীষণ শাস্তি দিয়ে আমি আমার সৈন্যদের, অর্থাৎ আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের সেই দেশ থেকে বের করে আনব।

5 আমি যখন আমার কুদরত ব্যবহার করে মিসর দেশের মধ্য থেকে বনি-ইসরাইলদের বের করে আনব তখন মিসরীয়রা বুঝতে পারবে যে, আমি মাবুদ।”

6 মাবুদ মূসা ও হারুনকে যেমন হুকুম দিয়েছিলেন তাঁরা ঠিক তেমনই করলেন।

7 ফেরাউনের সংগে কথা বলবার সময়ে মূসার বয়স ছিল আশি আর হারুনের তিরাশি।

হযরত হারুন (আঃ)-এর অলৌকিক কাজের লাঠি

8 মাবুদ মূসা ও হারুনকে আরও বললেন,

9 “ফেরাউন যখন তোমাদের কোন অলৌকিক চিহ্ন-কাজ করে দেখাতে বলবে, তখন তুমি হারুনকে বোলো, ‘ফেরাউনের সামনে তোমার লাঠিটা ফেল,’ আর তাতে সেটা সাপ হয়ে যাবে।”

10 মাবুদ তাঁদের যা বলেছিলেন মূসা ও হারুন ফেরাউনের কাছে গিয়ে ঠিক তা-ই করলেন। হারুন তাঁর লাঠিটা ফেরাউন ও তাঁর কর্মচারীদের সামনে ফেললেন, আর সেটা সাপ হয়ে গেল।

11 ফেরাউন গুণিনদের এবং নেশার জিনিস কাজে লাগানো কুহকীদের, অর্থাৎ তাঁর জাদুকরদের ডেকে পাঠালেন। তারাও তাদের জাদুমন্ত্রের জোরে সেই একই কাজ করল।

12 তারা প্রত্যেকেই তাদের লাঠি মাটিতে ফেলল এবং সেগুলো সাপ হয়ে গেল, কিন্তু হারুনের লাঠিটা তাদের লাঠিগুলোকে গিলে ফেলল।

13 তবে মাবুদ তাঁদের যা বলেছিলেন তা-ই হল। ফেরাউনের মন কঠিন হয়ে রইল; তিনি মূসা ও হারুনের কথা শুনলেন না।

মিসরের উপর প্রথম গজব- রক্ত

14 তখন মাবুদ মূসাকে বললেন, “ফেরাউনের মন শক্ত হয়ে আছে, তাই সে লোকদের যেতে দিচ্ছে না।

15 কাল সকালে ফেরাউন যখন বাইরে নদীর ঘাটে যাবে, তখন তুমি তার সংগে দেখা করবার জন্য নীল নদের ধারে দাঁড়িয়ে থেকো। যে লাঠিটা সাপ হয়ে গিয়েছিল সেটাও হাতে রেখো।

16 তাকে বোলো, ‘ইবরানীদের মাবুদ আল্লাহ্‌ আমাকে এই কথা বলতে আপনার কাছে পাঠিয়েছেন যে, তাঁর লোকেরা যাতে মরুভূমিতে তাঁর এবাদত করতে পারে সেইজন্য আপনি যেন তাদের যেতে দেন। কিন্তু এই পর্যন্ত আপনি তাঁর কথায় কান দেন নি।

17 সেইজন্য মাবুদ বলছেন, তিনিই যে মাবুদ তা আপনি এই চিহ্ন দেখে বুঝতে পারবেন।’ তুমি বলবে, ‘আমি এখন আমার হাতের এই লাঠিটা দিয়ে নীল নদের পানিতে আঘাত করতে যাচ্ছি আর তাতে নদীর পানি রক্ত হয়ে যাবে।

18 এর ফলে সব মাছ মরে যাবে আর এমন পচা দুর্গন্ধ বের হবে যে, পানি খেতে গিয়ে মিসরীয়রা ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেবে।’ ”

19 পরে মাবুদ মূসাকে বললেন, “হারুনকে বল যেন সে তার লাঠিটা হাতে নেয় এবং মিসরের সমস্ত নদী, খাল, পুকুর ও জমা করে রাখা পানির দিকে তার হাতখানা বাড়িয়ে ঘুরিয়ে আনে। তাতে সমস্ত পানি রক্ত হয়ে যাবে। মিসর দেশের সব জায়গাতেই রক্ত দেখা যাবে; এমন কি, কাঠ ও পাথরের পাত্রের পানিও বাদ যাবে না।”

20 মূসা ও হারুন মাবুদের হুকুম মত সব কিছু করলেন। ফেরাউন ও তাঁর কর্মচারীদের সামনে হারুন তাঁর লাঠিটা তুলে নীল নদের পানিতে আঘাত করলেন। তাতে নীল নদের সমস্ত পানি রক্ত হয়ে গেল।

21 নদীর সব মাছ মরে গিয়ে এমন দুর্গন্ধ বের হতে লাগল যে, মিসরীয়রা সেই পানি খেতে পারল না। মিসর দেশের সব জায়গাতেই রক্ত দেখা গেল।

22 তখন মিসরীয় জাদুকরেরা তাদের জাদুমন্ত্রের জোরে সেই একই কাজ করল। তাই ফেরাউনের মন আরও কঠিন হয়ে উঠল। মাবুদ যা বলেছিলেন তা-ই হল; মূসা ও হারুনের কথা ফেরাউন শুনলেন না,

23 বরং পিছন ফিরে নিজের বাড়ীতে গিয়ে ঢুকলেন। তিনি সেই দিকে খেয়ালই করলেন না।

24 নদীর পানি খাওয়া গেল না দেখে মিসরীয়রা পানির জন্য নদীর আশেপাশে মাটি খুঁড়ল।

25 নীল নদের উপর মাবুদের এই গজব নেমে আসবার পর সাত দিন কেটে গেল।

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40