1 পরে বাদশাহ্ লোক পাঠালে তারা এহুদা ও জেরুশালেমের সমস্ত প্রধান ব্যক্তিবর্গকে তাঁর কাছে একত্র করলো।
2 বাদশাহ্ মাবুদের গৃহে গেলেন এবং এহুদার সমস্ত লোক, সমস্ত জেরুশালেম-নিবাসী, ইমাম ও নবীদের এবং ক্ষুদ্র ও মহান সমস্ত লোক তাঁর সঙ্গে গমন করলো, পরে তিনি মাবুদের গৃহে পাওয়া নিয়ম-কিতাবের সমস্ত কথা তাদের শুনিয়ে পাঠ করলেন।
3 পরে বাদশাহ্ মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে মাবুদের অনুগামী হবার এবং সমস্ত অন্তঃকরণ ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তাঁর হুকুম, নির্দেশ ও বিধি পালন করার জন্য, এই কিতাবে লেখা এই নিয়মের সমস্ত কালাম অটল রাখার জন্য মাবুদের সাক্ষাতে নিয়ম স্থির করলেন এবং সমস্ত লোক সেই নিয়মে সায় দিল।
4 আর বাদশাহ্ বাল ও আশেরার জন্য এবং আসমানের সমস্ত বাহিনীর জন্য তৈরি সমস্ত সামগ্রী মাবুদের বায়তুল-মোকাদ্দস থেকে বের করতে হিল্কিয় মহা-ইমাম, দ্বিতীয় শ্রেণীর ইমামদের ও দ্বারপালদের হুকুম করলেন; পরে তিনি জেরুশালেমের বাইরে কিদ্রোণের ক্ষেতে সেই সকল পুড়িয়ে তাদের ভস্ম বেথেলে নিয়ে গেলেন।
5 আর এহুদার বাদশাহ্দের কর্তৃক নিযুক্ত যে ইমামেরা এহুদা দেশের নগরে নগরে উচ্চস্থলীতে ও জেরুশালেমের চারদিকে নানা স্থানে ধূপ জ্বালাত এবং যারা বালের, সূর্যের ও চন্দ্রের এবং গ্রহগুলোর ও আসমানের সমস্ত বাহিনীর উদ্দেশে ধূপ জ্বালাত তাদেরকে তিনি নিবৃত্ত করলেন।
6 আর তিনি মাবুদের গৃহ থেকে আশেরা-মূর্তি বের করে জেরুশালেমের বাইরে কিদ্রোণ স্রোতের কাছে এনে স্রোতের ধারে পুড়িয়ে দিলেন এবং তা পিষে গুঁড়া করে তার ধূলি সাধারণ লোকদের কবরের উপরে ফেলে দিলেন।
7 আর তিনি মাবুদের গৃহে স্থাপিত পুংগামীদের সেসব কুঠরী ভেঙ্গে ফেললেন, যেখানে স্ত্রীলোকেরা আশেরার জন্য কাপড় বুনত।
8 আর তিনি এহুদার সমস্ত নগর থেকে সমস্ত ইমামকে আনলেন এবং সেবা থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত যেসব উচ্চস্থলীতে ইমামেরা ধূপ জ্বালাত, সেসব নাপাক করলেন; আর নগর-দ্বারের যেসব উচ্চস্থলী নগরাধ্যক্ষ ইউসা-ফটকের প্রবেশদ্বারের কাছে ছিল এবং নগর-দ্বারে প্রবেশকারীর বামদিকে থাকতো সেসব ভেঙ্গে ফেললেন।
9 কিন্তু উচ্চস্থলীর ইমামেরা মাবুদের জেরুশালেমের কোরবানগাহে কোরবানী করতে গেল না, তারা কেবল তাদের ভাইদের মধ্যে থেকে খামিহীন রুটি ভোজন করতো।
10 আর কেউ যেন মোলকের উদ্দেশে তার পুত্র কিংবা কন্যাকে আগুনের মধ্য দিয়ে গমন না করায়, এজন্য তিনি হিন্নোম সন্তানদের উপত্যকাস্থিত তোফৎ নাপাক করলেন।
11 আর এহুদার বাদশাহ্রা যে ঘোড়াগুলোকে সূর্যের উদ্দেশে দিয়ে মাবুদের গৃহের প্রবেশ-স্থানের কাছে, উপপুরীতে অবস্থিত, নথন-মেলক নামক নপুংসকের কুঠরীর কাছে রাখতেন, সেগুলোকে তিনি দূর করলেন এবং সূর্যের রথগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিলেন।
12 আর এহুদার বাদশাহ্রা আহসের উপরিস্থ কুঠরীর ছাদে যেসব কোরবানগাহ্ তৈরি করেছিলেন এবং মানশা মাবুদের গৃহের দুই প্রাঙ্গণে যে যে কোরবানগাহ্ করেছিলেন, বাদশাহ্ সেসব কোরবানগাহ্ ভেঙ্গে ফেললেন, সেই স্থান থেকে শীঘ্র চলে গেলেন এবং তাদের ধূলি কিদ্রোণ স্রোতে নিক্ষেপ করলেন।
13 আর বিনাশ-পর্বতের দক্ষিণে জেরুশালেমের সম্মুখে ইসরাইলের বাদশাহ্ সোলায়মান সীদোনীয়দের ঘৃণ্য দেবী অষ্টোরতের জন্য এবং মোয়াবের ঘৃণ্য দেবতা কমোশের জন্য এবং অম্মোনের ঘৃণ্য দেবতা মিল্কমের জন্য যেসব উচ্চস্থলী করেছিলেন, সেসব বাদশাহ্ নাপাক করলেন।
14 আর তিনি সমস্ত স্তম্ভ ভেঙ্গে ফেললেন ও সমস্ত আশেরা-মূর্তি কেটে ফেলে তাদের স্থান মানুষের অস্থিতে পরিপূর্ণ করলেন।
15 এছাড়া, বেথেলে যে কোরবানগাহ্ ছিল এবং নবাটের পুত্র ইয়ারাবিম, যিনি ইসরাইলকে গুনাহ্ করিয়েছিলেন, তিনি যে উচ্চস্থলী নির্মাণ করেন, ইউসিয়া সেই কোরবানগাহ্ ও সেই উচ্চস্থলীও ভেঙ্গে ফেললেন, আর সেই উচ্চস্থলী আগুনে পুড়িয়ে দিলেন ও পিষে গুঁড়া করলেন এবং আশেরা পুড়িয়ে দিলেন।
16 আর ইউসিয়া মুখ ফিরিয়ে সেখানকার পর্বতস্থ সমস্ত কবর দেখলেন এবং লোক পাঠিয়ে সেসব কবর থেকে অস্থি আনালেন এবং আল্লাহ্র যে লোক আগে এসব ঘটনার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর বলা মাবুদের কালাম অনুসারে সেই কোরবানগাহ্র উপরে সেসব অস্থি পুড়িয়ে কোরবানগাহ্ নাপাক করলেন।
17 পরে তিনি বললেন, আমি ওটা কোন স্তম্ভ দেখছি? নগরের লোকেরা তাঁকে বললো, আল্লাহ্র যে লোক এহুদা থেকে এসে বৈথেলস্থ কোরবানগাহ্র বিরুদ্ধে তার করা এসব কাজের কথা ঘোষণা করেছিলেন ওটা তাঁরই কবর।
18 বাদশাহ্ বললেন, তাঁকে থাকতে দাও; তাঁর অস্থি কেউ স্থানান্তর না করুক; অতএব তারা তাঁর অস্থি এবং সামেরিয়া থেকে আগত নবীর অস্থি রক্ষা করলো।
19 আর ইসরাইলের বাদশাহ্রা সামেরিয়ার নানা নগরে যেসব উচ্চস্থলীতে মন্দির নির্মাণ করে মাবুদকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন, সেসব ইউসিয়া দূর করলেন এবং বেথেলে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন, সেই অনুসারে সেই সবের প্রতিও করলেন।
20 আর সেখানকার উচ্চস্থলীগুলোর সমস্ত ইমামকে কোরবানগাহে জবেহ্ করলেন এবং তার উপরে মানুষের অস্থি পুড়িয়ে দিলেন, পরে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।
21 পরে বাদশাহ্ সমস্ত লোককে এই হুকুম করলেন, এই নিয়ম-কিতাবে যেমন লেখা আছে, সেই অনুসারে তোমরা তোমাদের আল্লাহ্ মাবুদের উদ্দেশে ঈদুল ফেসাখ পালন কর।
22 বাস্তবিক ইসরাইলের বিচারকারী বিচারকর্তাদের সময় থেকে ইসরাইলের বাদশাহ্ ও এহুদা-বাদশাহ্দের আমলে এরকম ঈদুল ফেসাখ পালন করা হয় নি;
23 কিন্তু ইউসিয়া বাদশাহ্র অষ্টাদশ বছরে জেরুশালেমে মাবুদের উদ্দেশে এই ঈদুল ফেসাখ পালন করা হল।
24 আর ইউসিয়া যেন মাবুদের গৃহে হিল্কিয় ইমামের পাওয়া কিতাবে লেখা শরীয়তের সমস্ত কালাম অটল রাখতে পারেন, সেজন্য তিনি এহুদা দেশে ও জেরুশালেমে যেসব ভুতড়িয়া, গুনিন, ঠাকুর, মূর্তি ও ঘৃণার বস্তু দেখতে পেলেন, সেসব দূর করলেন।
25 তাঁর মত সমস্ত অন্তঃকরণ, সমস্ত প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দ্বারা মূসার সমস্ত শরীয়ত অনুসারে মাবুদের প্রতি ফিরলেন, এমন কোন বাদশাহ্ তাঁর আগে ছিলেন না এবং তাঁর পরেও তাঁর মত কেউ নেই।
26 তবুও মানশা যেসব অসন্তোষজনক কাজ দ্বারা মাবুদকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন, তার দরুন এহুদার বিরুদ্ধে মাবুদের যে প্রচণ্ড ক্রোধ প্রজ্বলিত হয়েছিল, সেই ক্রোধ থেকে তিনি ফিরলেন না।
27 আর মাবুদ বললেন, আমি যেমন ইসরাইলকে দূর করেছি, তেমনি আমার সম্মুখ থেকে এহুদাকেও দূর করবো এবং এই যে জেরুশালেম নগর মনোনীত করেছি; এবং ‘এই স্থানে আমার নাম থাকবে;’ এই কথা যে গৃহের বিষয়ে বলেছি; তাও অগ্রাহ্য করবো।
28 ইউসিয়ার অবশিষ্ট কাজের বৃত্তান্ত ও সমস্ত কাজের বিবরণ এহুদা-বাদশাহ্দের ইতিহাস-পুস্তকে কি লেখা নেই?
29 তাঁর সময়ে মিসরের বাদশাহ্ ফেরাউন-নখো আসেরিয়ার বাদশাহ্র বিরুদ্ধে ফোরাত নদীর দিকে যাত্রা করলেন, আর ইউসিয়া বাদশাহ্ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করলেন, তাতে ফেরাউন-নখো তাঁর দেখা পাওয়ামাত্র মগিদ্দোতে তাঁকে হত্যা করলেন।
30 পরে ইউসিয়ার গোলামেরা তাঁর লাশ রথে করে মগিদ্দো থেকে জেরুশালেমে এনে তাঁর নিজের কবরে দাফন করলো; পরে দেশের লোকেরা ইউসিয়ার পুত্র যিহোয়াহসকে নিয়ে অভিষেক করে পিতার পদে বাদশাহ্ করলো।
31 যিহোয়াহস তেইশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন এবং জেরুশালেমে তিন মাস রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম হমূটল, তিনি লিব্না-নিবাসী ইয়ারমিয়ার কন্যা।
32 এই বাদশাহ্ তাঁর পূর্বপুরুষদের মতই মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতেন।
33 আর ফেরাউন-নখো জেরুশালেমে তাঁর রাজত্বপ্রাপ্তির পরে হমাৎ দেশস্থ রিব্লাতে তাঁকে বন্দী করলেন এবং দেশের এক শত তালন্ত রূপা ও এক তালন্ত সোনা দণ্ড স্থির করলেন।
34 পরে ফেরাউন-নখো ইউসিয়ার পুত্র ইলিয়াকীমকে তাঁর পিতা ইউসিয়ার পদে বাদশাহ্ করে তাঁর নাম পরিবর্তন-পূর্বক যিহোয়াকীম রাখলেন, কিন্তু যিহোয়াহসকে নিয়ে গেলেন, তাতে তিনি মিসর দেশে গিয়ে সেই স্থানে ইন্তেকাল করলেন।
35 পরে যিহোয়াকীম ফেরাউনকে সেসব রূপা ও সোনা দিলেন, কিন্তু ফেরাউনের হুকুম অনুসারে সেই রূপা দেবার জন্য তিনি দেশে কর নির্ধারণ করলেন; ফেরাউন-নখোকে দেবার জন্য তিনি প্রত্যেক জনের উপর কর ধার্য করে সেই অনুসারে দেশের লোকদের কাছ থেকে ঐ রূপা ও সোনা আদায় করলেন।
36 যিহোয়াকীম পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন এবং জেরুশালেমে এগার বছর রাজত্ব করেন, তাঁর মায়ের নাম সবীদা, তিনি রূমা-নিবাসী পদায়ের কন্যা।
37 যিহোয়াকীম তাঁর পূর্বপুরুষদের সমস্ত কর্মানুসারে মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতেন।