1 তখন নবী আল-ইয়াসা এক জন শিষ্য-নবীকে ডেকে বললেন, তুমি কোমর-বন্ধনী পর এবং এই তেলের শিশি হাতে নিয়ে রামোৎ-গিলিয়দে যাও।
2 সেখানে উপস্থিত হয়ে নিমশির পৌত্র যিহোশাফটের পুত্র যেহূর খোঁজ কর এবং কাছে গিয়ে তাঁর ভাইদের মধ্য থেকে তাঁকে ওঠাও এবং ভিতরের এক কুঠরীতে নিয়ে যাও।
3 পরে তেলের শিশিটি নিয়ে তাঁর মাথায় ঢেলে দিয়ে বল, মাবুদ এই কথা বলেন, আমি তোমাকে ইসরাইলের বাদশাহ্র পদে অভিষেক করলাম। পরে তুমি দরজা খুলে পালিয়ে যাবে, বিলম্ব করবে না।
4 তখন সেই যুবক, সেই যুব-নবী, রামোৎ-গিলিয়দে গেলেন।
5 তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, সেনাপতিরা বসে আছেন। তিনি বললেন, হে সেনাপতি, আপনার কাছে আমার কিছু বক্তব্য আছে। যেহূ বললেন, আমাদের সকলের মধ্যে কার কাছে? তিনি বললেন, হে সেনাপতি, আপনার কাছে।
6 তখন যেহূ উঠে বাড়ির মধ্যে গেলেন। তাতে সে তাঁর মাথায় তেল ঢেলে তাঁকে বললেন, ইসরাইলের আল্লাহ্ মাবুদ এই কথা বলেন, আমি মাবুদের লোকবৃন্দের উপরে, ইসরাইলের উপরে, তোমাকে বাদশাহ্র পদে অভিষেক করলাম।
7 তুমি তোমার মালিক আহাবের কুলকে আক্রমণ করবে এবং আমি ঈষেবলের হাত থেকে আমার গোলাম নবীদের রক্তের প্রতিশোধ ও মাবুদের সকল গোলামের রক্তের প্রতিশোধ নেব।
8 বস্তুত আহাব কুলের সমস্ত লোক বিনষ্ট হবে; আমি আহাব-বংশের প্রত্যেক পুরুষ, ইসরাইলের মধ্যে লোককে উচ্ছন্ন করবো— সে কেনা গোলামই হোক বা স্বাধীন মানুষই হোক।
9 আর আহাবের কুলকে নবাটের পুত্র ইয়ারাবিমের কুল ও অহিয়ের পুত্র বাশার কুলের সমান করবো।
10 আর ঈষেবলকে কুকুরেরা যিষ্রিয়েলের ভূমিতে খাবে, কেউ তাকে দাফন করবে না। পরে সেই যুবক দরজা খুলে পালিয়ে গেলেন।
11 তখন যেহূ তাঁর মালিকের গোলামদের কাছে বাইরে আসলেন; এক জন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, সকল মঙ্গল তো? ঐ পাগলটা তোমার কাছে কেন এসেছিল? তিনি বললেন, তোমরা তো ওকে চেন ও কি বলেছে তাও জান।
12 তারা বললো, এ মিথ্যা কথা; আমাদেরকে সত্যি কথা বল। তখন তিনি বললেন, সে আমাকে এ সব কথা বললো, বললো, মাবুদ এই কথা বলেন, আমি তোমাকে ইসরাইলের বাদশাহ্র পদে অভিষেক করলাম।
13 তখন তারা খুব দ্রুত প্রত্যেকে নিজ নিজ কাপড় খুলে সিঁড়ির উপরে তাঁর পদতলে পাতল এবং তূরী বাজিয়ে বললো, যেহূ বাদশাহ্ হলেন।
14 এভাবে নিম্শির পৌত্র যিহোশাফটের পুত্র যেহূ যোয়ামের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করলেন। —সেই সময় যোরাম ও সমস্ত ইসরাইল অরামের বাদশাহ্ হসায়েলের হাত থেকে রামোৎ-গিলিয়দ রক্ষা করছিলেন;
15 কিন্তু অরামের বাদশাহ্ হসায়েলের সঙ্গে যোরাম বাদশাহ্র যুদ্ধকালে অরামীয়েরা তাঁকে যেসব আঘাত করেছিল, তা থেকে সুস্থতা পাবার জন্য তিনি যিষ্রিয়েলে ফিরে গিয়েছিলেন।— পরে যেহূ বললেন, যদি তোমাদের এই অভিমত হয়, তবে যিষ্রিয়েলে সংবাদ দেবার জন্য কাউকেও এই নগর থেকে পালিয়ে বের হতে দিও না।
16 পরে যেহূ রথে চড়ে যিষ্রিয়েলে গমন করলেন, কেননা সেই স্থানে যোরাম বিছানায় শুয়ে ছিলেন। আর এহুদার বাদশাহ্ অহসীয় যোরামকে দেখতে নেমে গিয়েছিলেন।
17 তখন যিষ্রিয়েলের উচ্চগৃহের উপর প্রহরী দাঁড়িয়েছিল; যেহূর আসার সময়ে সে তাঁর দল দেখে বললো, আমি একটি দল দেখছি। যোরাম বললেন, তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য এক জন ঘোড়সওয়ারকে পাঠিয়ে দাও, সে গিয়ে বলুক, মঙ্গল তো?
18 পরে এক জন ঘোড়সওয়ার তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে বললো, বাদশাহ্ জিজ্ঞাসা করছেন, মঙ্গল তো? যেহূ বললেন, মঙ্গলে তোমার কি কাজ? তুমি আমার পিছনে এসো। পরে প্রহরী এই সংবাদ দিল, সেই দূত তাদের কাছে গেল বটে, কিন্তু ফিরে এল না।
19 পরে বাদশাহ্ আর এক জন ঘোড়সওয়ারকে পাঠালেন; সে তাঁদের কাছে উপস্থিত হয়ে বললো, বাদশাহ্ জিজ্ঞাসা করছেন, মঙ্গল তো? যেহূ বললেন, মঙ্গলে তোমার কি কাজ? তুমি আমার পিছনে এসো।
20 পরে প্রহরী সংবাদ দিল, এই ব্যক্তি তাদের কাছে গেল, কিন্তু ফিরে এল না; আর রথ চালানো নিম্শির পুত্র যেহূর চালানোর মত দেখাচ্ছে, কেননা সে উন্মত্তের মত চালায়।
21 তখন যোরাম বললেন, রথ সাজাও। তখন তারা তাঁর রথ সাজাল। আর ইসরাইলের বাদশাহ্ যোরাম ও এহুদার বাদশাহ্ অহসিয় যার যার রথে চড়ে বের হয়ে যেহূর কাছে গেলেন এবং যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের ভূমিতে তাঁর দেখা পেলেন।
22 যেহূকে দেখামাত্র যোরাম বললেন, যেহূ মঙ্গল তো? জবাবে তিনি বললেন, যে পর্যন্ত তোমার মা ঈষেবলের এত জেনা ও মায়াবিত্ব থাকে, সে পর্যন্ত মঙ্গল কোথায়?
23 তখন যোরাম ঘুরে পালিয়ে গেলেন এবং অহসীয়কে বললেন, হে অহসীয়, এটা বেঈমানী!
24 পরে যেহূ তাঁর সমস্ত শক্তিতে ধনুকে টান দিয়ে যোরামের উভয় বাহুমূলের মধ্যে তীর ছুঁড়ে মারলেন, আর তীর তাঁর হৃৎপিণ্ড ভেদ করে বের হল, তাতে তিনি তাঁর রথে নত হয়ে পড়লেন।
25 তখন যেহূ তাঁর সেনানী বিদ্করকে বললেন, তুমি ওকে তুলে নিয়ে যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের ভূমিতে ফেলে দাও; কেননা মনে করে দেখ, তুমি ও আমি উভয়ে ঘোড়ায় চড়ে পাশাপাশি ওর পিতা আহাবের পিছনে চলছিলাম, এমন সময়ে মাবুদ তাঁর বিরুদ্ধে এই দৈববাণী বলেছিলেন,
26 সত্যিই গতকাল আমি নাবোতের রক্ত ও তার পুত্রদের রক্ত দেখেছি, মাবুদ এই কথা বলেন, আর মাবুদ বলেন, এই ভূমিতে আমি তোমাকে প্রতিফল দেব। অতএব এখন তুমি ওকে তুলে নিয়ে মাবুদের কালাম অনুসারে ঐ ভূমিতে ফেলে দাও।
27 তখন এহুদার বাদশাহ্ অহসীয় তা দেখে বাগান বাড়ির পথ ধরে পালিয়ে গেলেন; আর যেহূ তাঁর পেছন পেছন গিয়ে বললেন, ওকেও রথের মধ্যে আক্রমণ কর; তখন তারা যিব্লিয়মের নিকটস্থ গূরের আরোহন পথে তাঁকে আঘাত করলো; পরে তিনি মগিদ্দোতে পালিয়ে গিয়ে সেই স্থানে ইন্তেকাল করলেন।
28 আর তাঁর গোলামেরা তাঁকে রথে করে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে দাউদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁর জন্য ঠিক করে রাখা কবরে তাঁকে দাফন করলো।
29 অহসিয় আহাবের পুত্র যিহোরামের একাদশ বছরে এহুদায় রাজত্ব করতে আরম্ভ করেছিলেন।
30 পরে যেহূ যিষ্রিয়েলে উপস্থিত হলেন; ঈষেবল এই কথা শুনে সে চোখে অঞ্জন দিয়ে ও মাথায় কেশবেশ করে জানালা দিয়ে দেখছিল,
31 এবং যেহূ দ্বারে প্রবেশ করলে সে তাঁকে বললো, রে সিম্রি! রে প্রভুঘাতক! মঙ্গল তো?
32 যেহূ জানালার দিকে মুখ তুলে বললেন, কে আমার পক্ষে? কে? তখন দুই তিন জন নপুংসক তার দিকে চাইল।
33 আর তিনি হুকুম করলেন, ওকে নিচে ফেলে দাও। তারা তাকে নিচে ফেলে দিল, আর তার কতকটা রক্ত দেয়ালে ও ঘোড়াগুলোর গায়ে ছিট্কে পড়লো; আর তিনি তাকে পদতলে দলিত করলেন।
34 পরে ভিতরে গিয়ে যেহূ ভোজন পান করলেন; আর বললেন, তোমরা গিয়ে ঐ বদদোয়াগ্রস্তার খোঁজ নিয়ে তাকে দাফন কর, কেননা সে শাহ্জাদী।
35 তাতে লোকেরা তাকে দাফন করতে গেল, কিন্তু তার মাথার খুলি, পা ও হাত ছাড়া আর কিছুই পাওয়া গেল না।
36 অতএব তারা ফিরে এসে তাঁকে সংবাদ দিল। তিনি বললেন, এই অবস্থা মাবুদের কালাম অনুসারে হল, তিনি তাঁর গোলাম তিশ্বীয় ইলিয়াসের মাধ্যমে এই কথা বলেছিলেন, যিষ্রিয়েলের ভূমিতে কুকুরেরা ঈষেবলের মাংস খাবে;
37 এবং যিষ্রিয়েলের ভূমিতে ঈষেবলের লাশ সারের মত ক্ষেতে পড়ে থাকবে; তাতে কেউ বলতে পারবে না যে, ‘এই-ই ঈষেবল’।