1 আল-ইয়াসা যে স্ত্রীলোকটির পুত্রকে মৃত্যু থেকে জীবিতি করে তুলেছিলেন, তাকে বলেছিলেন, তুমি পরিবারের সঙ্গে যে স্থানে প্রবাস করতে পার, সেই স্থানে গিয়ে প্রবাস কর; কেননা মাবুদ দুর্ভিক্ষ ডেকেছেন, আর তা এসে সাত বছর পর্যন্ত এই দেশে থাকবে।
2 তাতে সেই স্ত্রীলোকটি আল্লাহ্র লোকের কালাম অনুসারে কাজ করলেন; তিনি ও তার পরিবার গিয়ে সাত বছর ফিলিস্তিনীদের দেশে প্রবাস করলেন।
3 সাত বছরের শেষে সেই স্ত্রীলোকটি ফিলিস্তিনীদের দেশ থেকে ফিরে আসলেন, আর তার বাড়ি ও ভূমির জন্য বাদশাহ্র কাছে নিবেদন করতে গেলেন।
4 ঐ সময়ে বাদশাহ্ আল্লাহ্র লোকের ভৃত্য গেহসির সঙ্গে কথা বলছিলেন; তিনি বললেন, আল-ইয়াসা যেসব মহৎ কাজ করেছেন, সেই সমস্তের বৃত্তান্ত আমাকে বল।
5 তাতে আল-ইয়াসা কিভাবে মৃতকে আবার জীবিত করেছিলেন, তার বিবরণ সে বাদশাহ্কে বলছে, আর দেখ, যার পুত্রকে তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত করেছিলেন, সেই স্ত্রীলোকটি তার বাড়ি ও ভূমির জন্য বাদশাহ্র কাছে এসে নিবেদন করতে লাগলেন। তখন গেহসি বললো, হে আমার মালিক বাদশাহ্, এই সেই স্ত্রীলোক এবং এই তার পুত্র, যাকে আল-ইয়াসা পুনর্জীবিত করেছিলেন।
6 আর বাদশাহ্ স্ত্রীলোকটিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাকে সকল বৃত্তান্ত বললেন। আর বাদশাহ্ তাঁর পক্ষে এক জন কর্মকর্তাকে নিযুক্ত করে বললেন, এর সর্বস্ব এবং এ যেদিন দেশ ত্যাগ করেছে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত উৎপন্ন এর ক্ষেতের সমস্ত আয় একে ফিরিয়ে দাও।
7 একদিন আল-ইয়াসা দামেস্কে উপস্থিত হন। তখন অরামের বাদশাহ্ বিন্হদদ অসুস্থ ছিলেন; তিনি সংবাদ পেলেন যে, আল্লাহ্র লোক এই স্থান পর্যন্ত এসেছেন।
8 তখন বাদশাহ্ হসায়েলকে বললেন, তুমি উপহার সঙ্গে নিয়ে আল্লাহ্র লোকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাও এবং তাঁর দ্বারা মাবুদকে জিজ্ঞাসা কর, এই অসুস্থতা থেকে আমি কি বাঁচবো?
9 পরে হসায়েল আল-ইয়াসার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন। তিনি উপহার সঙ্গে নিয়ে, এমন কি, সমস্ত রকম উত্তম বস্তু চল্লিশটি উটের পিঠে বোঝাই করে দামেস্কে এসে তাঁর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বললেন, আপনার পুত্র অরামের বাদশাহ্ বিন্হদদ আপনার কাছে আমাকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন, এই অসুস্থতা থেকে আমি কি বাঁচবো?
10 আল-ইয়াসা তাঁকে বললেন, আপনি গিয়ে তাঁকে বলুন, অবশ্য বাঁচতে পারেন; তবুও মাবুদ আমাকে এটা জানিয়েছেন যে, তিনি অবশ্য ইন্তেকাল করবেন।
11 আর হসায়েল যে পর্যন্ত লজ্জা না পেলেন, সেই পর্যন্ত তিনি তাঁর প্রতি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন; পরে আল্লাহ্র লোক কাঁদতে লাগলেন।
12 হসায়েল জিজ্ঞাসা করলেন, আমার মালিক কেন কাঁদছেন? তিনি জবাবে বললেন, কারণ হচ্ছে, আপনি বনি-ইসরাইলদের যে অনিষ্ট করবেন, তা আমি জানি; আপনি তাদের দৃঢ় সমস্ত দুর্গ আগুনে পুড়িয়ে দেবেন, তাদের যুবকদেরকে তলোয়ার দ্বারা হত্যা করবেন, তাদের শিশুদেরকে ধরে আছাড় মারবেন ও তাদের গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের উদর বিদীর্ণ করবেন।
13 হসায়েল বললেন, আপনার এই কুকুরের মত গোলাম কে যে, এমন মহৎ কাজ করবে? আল-ইয়াসা বললেন, মাবুদ আমাকে দেখিয়েছেন যে, আপনি অরামের বাদশাহ্ হবেন।
14 তখন তিনি আল-ইয়াসার কাছ থেকে প্রস্থান করে তাঁর মালিকের কাছে গেলেন; বাদশাহ্ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল-ইয়াসা তোমাকে কি বললেন? হসায়েল বললেন, তিনি আমাকে বললেন, আপনি অবশ্য বাঁচবেন।
15 কিন্তু পর দিনে হসায়েল কম্বল পানিতে ডুবিয়ে বাদশাহ্র মুখের উপরে চাপা দিলেন, তাতে তাঁর মৃত্যু হল এবং হসায়েল তাঁর পদে বাদশাহ্ হলেন।
16 ইসরাইলের বাদশাহ্ আহাবের পুত্র যোরামের পঞ্চম বছরে, যখন যিহোশাফট এহুদার বাদশাহ্ ছিলেন, তখন এহুদার বাদশাহ্ যিহোশাফটের পুত্র যিহোরাম রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন।
17 তিনি বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে আরম্ভ করে জেরুশালেমে আট বছর রাজত্ব করেন।
18 আহাবের কুল যেমন করতো, তিনিও তেমনি ইসরাইলের বাদশাহ্দের পথে চলতেন, কারণ তিনি আহাবের কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন; ফলে মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই তিনি করতেন।
19 তবুও তাঁর গোলাম দাউদের জন্য মাবুদ এহুদাকে বিনষ্ট করতে চাইলেন না, তিনি তো দাউদের কাছে ওয়াদা করেছিলেন, যে, তাঁকে তাঁর সন্তানদের জন্য নিয়ত একটি প্রদীপ দেবেন।
20 তাঁর সময়ে ইদোম এহুদার অধীনতা অস্বীকার করে তাদের নিজেদের জন্য এক জনকে বাদশাহ্ করলো।
21 অতএব যোরাম তাঁর সমস্ত রথ সঙ্গে নিয়ে সায়ীরে যাত্রা করলেন; আর রাতের বেলায় তিনি উঠে, যারা তাঁকে বেষ্টন করেছিল, সেই ইদোমীয়দের ও তাদের রথের নেতাদেরকে আঘাত করলেন, আর সেই লোকেরা যার যার তাঁবুতে পালিয়ে গেল।
22 এভাবে ইদোম আজ পর্যন্ত এহুদার অধীনতা অস্বীকার করে রয়েছে। আর ঐ সময়ে লিব্নাও অধীনতা অস্বীকার করলো।
23 যোরামের অবশিষ্ট কাজের বৃত্তান্ত ও সমস্ত কাজের বিবরণ কি এহুদা-বাদশাহ্দের ইতিহাস-পুস্তকে লেখা নেই?
24 পরে যোরাম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং দাউদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ হলেন; আর তাঁর পুত্র অহসিয় তাঁর পদে বাদশাহ্ হলেন।
25 ইসরাইলের বাদশাহ্ আহাবের পুত্র যোরামের বারো বছরের রাজত্বের সময় এহুদার বাদশাহ্ যিহোরামের পুত্র অহসিয় রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন।
26 অহসিয় বাইশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে আরম্ভ করে জেরুশালেমে এক বছর রাজত্ব করেন। তাঁর মায়ের নাম অথলিয়া, তিনি ইসরাইলের বাদশাহ্ অম্রির পৌত্রী।
27 অহসিয় আহাব কুলের পথে চলতেন, মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, আহাব কুলের মত তা-ই করতেন, কেননা তিনি আহাব কুলের জামাতা ছিলেন।
28 তিনি আহাবের পুত্র যোরামের সঙ্গে অরামের বাদশাহ্ হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য রামোৎ-গিলিয়দে গেলেন; তাতে অরামীয়েরা যোরামকে ক্ষতবিক্ষত করলো।
29 অতএব বাদশাহ্ যোরাম অরামের বাদশাহ্ হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়ে রামাতে অরামীয়েরা তাঁকে যেভাবে আক্রমণ করেছিল তা থেকে সুস্থ হবার জন্য যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন; আর আহাবের পুত্র যোরামের অসুস্থতার দরুন এহুদার বাদশাহ্ যিহোরামের পুত্র অহসিয় তাঁকে দেখতে যিষ্রিয়েলে গেলেন।