1 তাঁরা লোকদের কাছে কথা বলছেন, এমন সময়ে ইমামেরা ও বায়তুল-মোকাদ্দসের সেনাপতি এবং সদ্দূকীরা হঠাৎ তাঁদের কাছে এসে উপস্থিত হল।
2 তারা অতিশয় বিরক্ত হয়েছিল, কারণ তাঁরা লোকদেরকে উপদেশ দিচ্ছিলেন এবং ঈসার মধ্য দিয়ে মৃতদের আবার পুনরুত্থিত হয়ে উঠবার বিষয় তবলিগ করছিলেন।
3 তখন সন্ধ্যা হয়েছিল বলে তারা তাঁদেরকে ধরে পর দিন পর্যন্ত আটক করে রাখল।
4 কিন্তু যেসব লোক কালাম শুনেছিল, তাদের মধ্যে অনেকে ঈমান আনল; তাতে পুরুষদের সংখ্যা কমবেশ পাঁচ হাজার হল।
5 পরের দিন লোকদের নেতৃবর্গরা, প্রাচীন-বর্গরা ও আলেমরা জেরুশালেমে একত্র হলেন,
6 এবং মহা-ইমাম হানন, কাইয়াফা, যোহন, আলেক্সান্দর, আর মহা-ইমামের আত্মীয় স্বজন সকলে উপস্থিত ছিলেন।
7 তাঁরা পিতর ও ইউহোন্নাকে মধ্যস্থানে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, কি ক্ষমতায় অথবা কি নামে তোমরা এই কাজ করেছ?
8 তখন পিতর পাক-রূহে পূর্ণ হয়ে তাঁদেরকে বললেন, হে লোকদের নেতৃবর্গ ও প্রাচীন-বর্গরা,
9 এক জন দুর্বল মানুষের উপকার সাধন করেছি বলে যদি আজ আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কিভাবে এ লোক সুস্থ হয়েছে,
10 তবে আপনারা সকলে ও সমস্ত ইসরাইল লোক এই কথা জানুন যে, আপনারা যাঁকে ক্রুশে দিয়েছিলেন এবং যাঁকে আল্লাহ্ মৃতদের মধ্য থেকে উঠালেন, সেই নাসরতীয় ঈসা মসীহের নামে, তাঁরই গুণে এই ব্যক্তি আপনাদের সম্মুখে সুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে আছে।
11 তিনিই সেই পাথর, যা রাজমিস্ত্রিদের অর্থাৎ আপনাদের,আপনাদেরই দ্বারা অবজ্ঞাত হয়েছিল,তা কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠলো।
12 আর অন্য কারো কাছে নাজাত নেই; কেননা আসমানের নিচে মানুষের মধ্যে এমন আর কোন নাম দেওয়া হয় নি, যে নামে আমরা নাজাত পেতে পারি।
13 তখন পিতরের ও ইউহোন্নার সাহস দেখে এবং এরা যে অশিক্ষিত ও সামান্য লোক তা বুঝে, তাঁরা আশ্চর্য জ্ঞান করলেন এবং চিনতে পারলেন যে, এঁরা ঈসার সঙ্গে ছিলেন।
14 আর ঐ সুস্থতা লাভ করা ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে দেখে তাঁদের বিরুদ্ধে কিছুই বলতে পারলেন না।
15 পরে তাঁদেরকে সভা থেকে বাইরে যেতে হুকুম দিয়ে তাঁরা পরস্পর এই পরামর্শ করতে লাগলেন,
16 এই লোকদের প্রতি কি করি? কেননা জেরুশালেম-নিবাসী সকলেই জানে যে, ওদের দ্বারা একটা প্রসিদ্ধ চিহ্ন-কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং আমরাও তা অস্বীকার করতে পারি না।
17 কিন্তু কথাটা যেন লোকদের মধ্যে আরও রটে না যায়, এজন্য ওদেরকে ভয় দেখানো যাক, যেন কোন লোককেই আর এই নামে কিছু না বলে।
18 পরে তাঁরা ওঁদেরকে ডেকে এই হুকুম দিলেন, তোমরা ঈসার নামে একেবারেই কোন কথা বলো না, কোন শিক্ষাও দিও না।
19 কিন্তু পিতর ও ইউহোন্না জবাবে তাঁদেরকে বললেন, আল্লাহ্র চোখে কোনটা ঠিক, আপনাদের কথা শোনা নাকি আল্লাহ্র হুকুম পালন করা? আপনারা বিচার করে দেখুন।
20 কারণ আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি তা না বলে থাকতে পারি না।
21 পরে তাঁরা ওঁদেরকে আরও ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দিলেন। লোকদের ভয়ে তাঁরা স্থির করতে পারছিলেন না, কিভাবে ওঁদেরকে শাস্তি দেওয়া যায়, কারণ যা ঘটেছিল, সেজন্য সকল লোক আল্লাহ্র গৌরব করছিল।
22 কেননা সেই সুস্থতা-দানরূপ চিহ্ন-কাজ যে ব্যক্তিতে সাধিত হয়েছিল, তার বয়স চল্লিশ বছরের বেশি হয়েছিল।
23 তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হলে পর তাঁরা তাঁদের সঙ্গীদের কাছে গেলেন এবং প্রধান ইমামেরা ও প্রাচীনবর্গরা তাঁদেরকে যা যা বলেছিলেন সেই সমস্তই জানালেন।
24 তা শুনে সকলে এক চিত্তে আল্লাহ্র উদ্দেশে উচ্চৈঃস্বরে বলতে লাগল, হে সার্বভৌম প্রভু, তুমি আসমান, দুনিয়া, সমুদ্র এবং এই সকলের মধ্যে যা কিছু আছে, সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা;
25 তুমি পাক-রূহ্ দ্বারা তোমার গোলাম আমাদের পিতা দাউদের মুখ দিয়ে এই কথা বলেছিলে, যথা,“জাতিরা কেন কলহ করলো?লোকবৃন্দ কেন অনর্থক বিষয় ধ্যান করলো?
26 দুনিয়ার বাদশাহ্রা দণ্ডায়মান হল, শাসনকর্তারা একত্র হল,প্রভুর বিরুদ্ধে এবং তাঁর অভিষিক্তের বিরুদ্ধে।”
27 কেননা সত্যিই তোমার পবিত্র গোলাম ঈসা, যাঁকে তুমি অভিষিক্ত করেছ, তাঁর বিরুদ্ধে হেরোদ ও পন্তীয় পীলাত জাতিদের ও ইসরাইল লোকদের সঙ্গে এই নগরে একত্র হয়েছিল,
28 যেন তোমার হাত ও তোমার পরামর্শ দ্বারা আগে থেকে যেসব বিষয় নির্ধারিত হয়েছিল, তা সম্পন্ন করে।
29 আর এখন, হে প্রভু, ওদের ভয় প্রদর্শনের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; এবং তোমার এই গোলামদেরকে সমপূর্ণ সাহসের সঙ্গে তোমার কালাম বলবার ক্ষমতা দাও,
30 সুস্থতা দান করবার জন্য তোমার হাত বাড়িয়ে দাও; আর তোমার পবিত্র গোলাম ঈসার নামে যেন চিহ্ন-কাজ ও অদ্ভুত লক্ষণ সাধিত হয়।
31 যে স্থানে তাঁরা সমবেত হয়েছিলেন, তাঁরা মুনাজাত করলে পর সেই স্থান কেঁপে উঠলো; এবং তাঁরা সকলেই পাক-রূহে পরিপূর্ণ হলেন ও সাহসপূর্বক আল্লাহ্র কালাম বলতে থাকলেন।
32 আর যে বহুসংখ্যক লোক ঈমান এনেছিল, তারা একচিত্ত ও একপ্রাণ ছিল। তাদের এক জনও নিজের সম্পত্তির মধ্যে কিছুই নিজের বলে দাবী করতো না, কিন্তু তাদের সকল বিষয় সাধারণে থাকতো।
33 আর প্রেরিতেরা মহাপরাক্রমে প্রভু ঈসার পুনরুত্থানের বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেন এবং তাদের সকলের উপরে মহা রহমত ছিল।
34 এমন কি, তাদের মধ্যে কেউই দীনহীন ছিল না; কারণ যারা ভূমির অথবা বাড়ির মালিক ছিল, তারা তা বিক্রি করে, বিক্রি করা সম্পত্তির মূল্য এনে প্রেরিতদের পায়ের কাছে রাখত।
35 পরে যার যেমন প্রয়োজন তাকে তেমনি দেওয়া হত।
36 আর ইউসুফ নামে এক জন লেবীয় লোক সাইপ্রাস দ্বীপের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁকে প্রেরিতেরা বার্নাবাস নাম দিয়েছিলেন, অনুবাদ করলে এই নামের অর্থ ‘উৎসাহের সন্তান’।
37 তাঁর একখণ্ড ভূমি থাকাতে তিনি তা বিক্রি করে তার মূল্য এনে প্রেরিতদের পায়ের কাছে রাখলেন।