1 বছরের প্রথম মাসে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সীন মরু-এলাকায় পৌঁছে কাদেশের কাছে গিয়ে রইল। মরিয়ম সেখানে মারা গেলেন এবং তাঁকে কবর দেওয়া হল।
2 সেখানে জল না থাকায় ইস্রায়েলীয়েরা মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে দল পাকালো।
3 তারা মোশির সংগে ঝগড়া করে বলল, “আমাদের ভাইয়েরা যখন সদাপ্রভুর সামনে মারা গেল তখন যদি আমরাও মরতাম তবে ভাল হত।
4 কেন তুমি সদাপ্রভুর লোকদের এই মরু-এলাকায় নিয়ে আসলে যাতে পশুপাল সুদ্ধ আমরা মারা যাই?
5 মিসর দেশ থেকে কেন তুমি আমাদের এই ভীষণ জায়গায় নিয়ে আসলে? এই জায়গায় না আছে কোন শস্য বা ডুমুর ফল, না আছে আংগুর লতা বা ডালিম ফল; তার উপর খাবার জলও এখানে নেই।”
6 এতে মোশি ও হারোণ তাদের কাছ থেকে মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে গিয়ে উবুড় হয়ে পড়লেন। তখন সদাপ্রভুর মহিমা তাঁদের সামনে প্রকাশ পেল।
7 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
8 “তুমি সেই লাঠিটা নাও আর তুমি ও তোমার ভাই হারোণ ইস্রায়েলীয়দের এক জায়গায় জড়ো কর। ঐ যে বিরাট পাথরটা রয়েছে তুমি ইস্রায়েলীয়দের সামনে ওটাকে বল আর তাতে ওটা জল দেবে। ইস্রায়েলীয়েরা এবং তাদের পশুপাল যাতে খেতে পারে সেইজন্য তুমি তাদের জন্য পাথর থেকে জল বের করে আনবে।”
9 সদাপ্রভুর আদেশ মতই তাঁর সামনে থেকে মোশি সেই লাঠিটা তুলে নিলেন।
10 মোশি ও হারোণ সেই পাথরটার কাছে লোকদের একসংগে জড়ো করলেন। তারপর মোশি তাদের বললেন, “বিদ্রোহীরা শোন, আমরা কি তোমাদের জন্য এই পাথরটা থেকে জল বের করে আনব?”
11 এই কথা বলে মোশি হাত উঠিয়ে তাঁর লাঠি দিয়ে সেই পাথরটাকে দু’বার আঘাত করলেন; তাতে সেখান থেকে জোরে অনেক জল বের হয়ে আসতে লাগল আর ইস্রায়েলীয়েরা ও তাদের পশুপাল তা খেল।
12 কিন্তু সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “তোমরা আমার উপর নির্ভর কর নি এবং ইস্রায়েলীয়দের সামনে আমাকে পবিত্র বলে মান্য কর নি। তাই যে দেশ আমি ইস্রায়েলীয়দের দেব তোমরা তাদের সেখানে নিয়ে যেতে পারবে না।”
13 সেই জলকে বলা হল মরীবা (যার মানে “ঝগড়া”)। এখানে ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর সংগে ঝগড়া করেছিল আর সদাপ্রভু এখানেই তাদের মধ্যে নিজের পবিত্রতা প্রকাশ করেছিলেন।
14 পরে মোশি কাদেশ থেকে লোক পাঠিয়ে ইদোম দেশের রাজাকে বলে পাঠালেন, “আমরা, আপনার ইস্রায়েলীয় ভাইয়েরা, আপনাকে একটা কথা বলতে চাই। আপনি আমাদের দুঃখ-কষ্টের কথা জানেন।
15-16 আমাদের পূর্বপুরুষেরা মিসর দেশে গিয়েছিলেন আর আমরা অনেক বছর সেখানে বাস করেছি। মিসরীয়েরা আমাদের ও আমাদের পূর্বপুরুষদের উপর খারাপ ব্যবহার করায় আমরা সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করেছিলাম। তিনি আমাদের কান্নাকাটি শুনে তাঁর দূত পাঠিয়ে মিসর থেকে আমাদের বের করে এনেছেন।“আমরা এখন আপনার রাজ্যের সীমানার কাছে কাদেশে আছি।
17 আপনি আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন। আমরা কোন শস্য ক্ষেত কিম্বা আংগুর ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাব না, কিম্বা কোন কূয়া থেকে জলও খাব না। আমরা রাজপথ দিয়ে চলে যাব এবং আপনার রাজ্য পার হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত ডানে কি বাঁয়ে পা বাড়াব না।”
18 কিন্তু উত্তরে ইদোমের রাজা বললেন, “না, তোমরা এখান দিয়ে যেতে পারবে না। যদি তোমরা যাওয়ার চেষ্টা কর তবে আমরা যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়ে তোমাদের আক্রমণ করব।”
19 ইস্রায়েলীয়েরা তাঁর উত্তরে বলে পাঠাল, “আমরা সদর রাস্তা ধরে যাব। আমাদের পশুপাল কিম্বা আমরা যদি আপনার দেশ থেকে কোন জল খাই তবে আমরা তার দাম দিয়ে দেব। আমরা কেবল পায়ে হেঁটে পার হয়ে যেতে চাই, আর কিছু নয়।”
20 ইদোমীয়েরা আবার বলে পাঠাল, “না, এখান দিয়ে তোমাদের যাওয়া চলবে না।”এর পর ইদোমীয়েরা অনেক সৈন্য নিয়ে তাদের ক্ষমতা জাহির করে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে বের হয়ে আসল।
21 ইদোমীয়েরা তাদের দেশের মধ্য দিয়ে যেতে দিতে অস্বীকার করল বলে ইস্রায়েলীয়েরা তাদের কাছ থেকে ফিরে চলে গেল।
22 এর পর ইস্রায়েলীয়েরা কাদেশ থেকে রওনা হয়ে হোর পাহাড়ের কাছে গিয়ে উপস্থিত হল।
23 সেখানে ইদোমের সীমানার কাছে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,
24 “হারোণকে তার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যেতে হবে। যে দেশ আমি ইস্রায়েলীয়দের দেব তার সেখানে যাওয়া হবে না, কারণ মরীবাতে সেই জলের ব্যাপারে তোমরা আমার আদেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলে।
25 হারোণ ও তার ছেলে ইলীয়াসরকে নিয়ে তুমি হোর পাহাড়ের উপরে যাও।
26 সেখানে হারোণের গা থেকে পুরোহিতের পোশাক খুলে নিয়ে সেটা তার ছেলে ইলীয়াসরকে পরিয়ে দাও, কারণ হারোণ তার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে; সে সেখানেই মারা যাবে।”
27 মোশি সদাপ্রভুর আদেশ মত কাজ করলেন। তাঁরা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের সামনে হোর পাহাড়ে উঠে গেলেন।
28 তারপর মোশি হারোণের গা থেকে পুরোহিতের পোশাক খুলে নিয়ে সেটা তাঁর ছেলে ইলীয়াসরকে পরিয়ে দিলেন। হারোণ সেই পাহাড়ের চূড়ায় মারা গেলেন। তারপর মোশি ও ইলীয়াসর পাহাড় থেকে নেমে আসলেন।
29 ইস্রায়েলীয়েরা সবাই যখন জানতে পারল যে, হারোণ মারা গেছেন তখন গোটা ইস্রায়েল জাতি ত্রিশ দিন পর্যন্ত তাঁর জন্য শোক করল।