1 রূবেণ ও গাদ-গোষ্ঠীর লোকদের গরু, ছাগল ও ভেড়ার বড় বড় পাল ছিল। তারা দেখতে পেল যাসের ও গিলিয়দ দেশ পশু পালন করবার পক্ষে খুব উপযুক্ত জায়গা।
2 তা দেখে তারা মোশি ও পুরোহিত ইলিয়াসর এবং ইস্রায়েলীয় সমাজের নেতাদের গিয়ে বলল,
3-4 “অটারোৎ, দীবোন, যাসের, নিম্রা, হিষ্বোন, ইলিয়ালী, সেবাম, নবো ও বিয়োন নামে যে সব জায়গা সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের অধীনে এনেছেন সেগুলো পশু পালন করবার পক্ষে খুব উপযুক্ত, আর আপনার এই দাসদেরও পশুপাল রয়েছে।
5 যদি আমাদের উপর আপনার দয়া হয় তবে আপনার এই দাসদের এই জায়গাগুলো সম্পত্তি হিসাবে দিন। যর্দন নদীর ওপারে আমাদের নিয়ে যাবেন না।”
6 এতে মোশি গাদ ও রূবেণ-গোষ্ঠীর লোকদের বললেন, “তোমাদের ভাইয়েরা যুদ্ধ করতে যাবে আর তোমরা এখানে বসে থাকবে?
7 সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের যে দেশ দিয়েছেন তোমরা তাদের সেখানে যাবার উৎসাহ ভেংগে দিচ্ছ কেন?
8 দেশটা দেখে আসবার জন্য যখন আমি তোমাদের বাপ-দাদাদের কাদেশ-বর্ণেয় থেকে পাঠিয়েছিলাম তখন তারাও ঠিক এই রকমই করেছিল।
9 ইষ্কোল উপত্যকা পর্যন্ত গিয়ে দেশটা দেখে আসবার পর তারা সদাপ্রভুর দেওয়া দেশে ইস্রায়েলীয়দের যাওয়ার উৎসাহ ভেংগে দিয়েছিল।
10 সেই দিন সদাপ্রভু ক্রোধে জ্বলে উঠেছিলেন এবং তিনি শপথ করে বলেছিলেন,
11 ‘যে দেশ দেবার কথা আমি অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের কাছে শপথ করে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম মিসর দেশ থেকে বের হয়ে আসা বিশ বা তার বেশী বয়সের লোকদের মধ্যে কেউ তা দেখতে পাবে না, কারণ তারা আমার কথা পুরোপুরি মেনে চলে নি।
12 একমাত্র কনিসীয় যিফূন্নির ছেলে কালেব ও নূনের ছেলে যিহোশূয় সেই দেশ দেখতে পাবে, কারণ তারাই আমার কথা পুরোপুরি মেনে চলেছে।’
13 ইস্রায়েলীয়দের প্রতি সদাপ্রভু ক্রোধে জ্বলে উঠেছিলেন এবং তাঁর চোখে মন্দ কাজ করা সেই সব লোকগুলো শেষ হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত চল্লিশ বছর ধরে তিনি তাদের মরু-এলাকার মধ্যে নানা জায়গায় ঘুরিয়েছেন।
14 “আর তোমরা, পাপীরা, তোমাদের বাপ-দাদাদের জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছ আর ইস্রায়েলীয়দের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধের আগুন আরও বাড়িয়ে তুলছ।
15 তোমরা যদি তাঁর কথামত না চল, তবে তিনি এবারও এই সব লোকদের মরু-এলাকাতেই ফেলে রাখবেন, আর তোমরা হবে তাদের ধ্বংসের কারণ।”
16 তখন তারা মোশির কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল, “আমরা কেবল এখানে আমাদের পশুপালের ঘর ও আমাদের পরিবারের জন্য শহর তৈরী করতে চাইছি।
17 কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের তাদের নিজেদের জায়গায় পৌঁছিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা যুুদ্ধের সাজে তাদের আগে আগে যেতে প্রস্তুত আছি। এর মধ্যে আমাদের পরিবার দেয়াল-ঘেরা শহরে বাস করবে যাতে এই সব দেশের লোকদের হাত থেকে তারা রক্ষা পায়।
18 ইস্রায়েলীয়েরা প্রত্যেকে তার সম্পত্তি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের ঘরে ফিরে আসব না।
19 যর্দন নদীর ওপারে ইস্রায়েলীয়দের সংগে আমরা কোন সম্পত্তি নেব না, কারণ নদীর পূর্ব পারেই তো আমরা তা পেয়ে যাচ্ছি।”
20-21 এই কথা শুনে মোশি তাদের বললেন, “যদি তোমরা তা কর, যদি তোমরা সদাপ্রভুর সামনে যুদ্ধের সাজ পর আর সদাপ্রভু তাঁর শত্রুদের তাঁর সামনে থেকে তাড়িয়ে না দেওয়া পর্যন্ত তোমরা সবাই যুদ্ধের সাজে সদাপ্রভুর সামনে নদীর ওপারে যাও,
22 তবে দেশটা সদাপ্রভুর অধীনে আসলে পর তোমরা ফিরে আসতে পারবে এবং সদাপ্রভু ও ইস্রায়েল জাতির প্রতি তোমাদের কর্তব্য থেকে রেহাই পাবে; আর তখন সদাপ্রভুর ইচ্ছায় এই জায়গাটা তোমাদের সম্পত্তি হবে।
23 কিন্তু যদি তোমরা তা না কর তবে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে তোমরা পাপ করবে। তোমরা এটা জেনে রেখো যে, তোমাদের পাপ তোমাদের রেহাই দেবে না।
24 তোমরা তোমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য শহর তৈরী করতে পার এবং ছাগল-ভেড়ার ঘরও বানাতে পার, কিন্তু যে কাজ করবার প্রতিজ্ঞা তোমরা করেছ তা তোমাদের করতে হবে।”
25 তখন গাদ ও রূবেণ-গোষ্ঠীর লোকেরা মোশিকে বলল, “আপনি আমাদের মনিব, আপনি আমাদের যে আদেশ দিলেন আমরা, আপনার দাসেরা, তা পালন করব।
26 আমাদের ছেলেমেয়ে, স্ত্রী, ছাগল-ভেড়া ও গরুর পাল ওখানে গিলিয়দের শহরগুলোতেই থাকবে।
27 কিন্তু আমরা আমাদের মনিবের কথামত যুদ্ধ করবার জন্য যুদ্ধের সাজে সদাপ্রভুর সামনে নদী পার হয়ে যাব।”
28 তখন মোশি এই লোকদের সম্বন্ধে পুরোহিত ইলিয়াসর, নূনের ছেলে যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলীয় গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন বংশের নেতাদের আদেশ দিলেন।
29 তিনি তাঁদের বললেন, “গাদ ও রূবেণ-গোষ্ঠীর পুরুষেরা যদি সবাই যুদ্ধের সাজে সদাপ্রভুর সামনে যুদ্ধ করবার জন্য তোমাদের সংগে যর্দন নদী পার হয়ে যায়, তবে যখন দেশটা তোমাদের অধীনে আসবে তখন তোমরা সম্পত্তি হিসাবে গিলিয়দ দেশটা তাদের দিয়ে দেবে।
30 কিন্তু যদি তারা তা না করে তবে কনান দেশেই তোমাদের সংগে তাদের সম্পত্তি নিতে হবে।”
31 এই কথা শুনে গাদ ও রূবেণ-গোষ্ঠীর লোকেরা বলল, “সদাপ্রভু যা বলেছেন আপনার দাসেরা তা করবে।
32 আমরা সদাপ্রভুর সামনে যুদ্ধের সাজ পরে নদী পার হয়ে কনান দেশে যাব, কিন্তু নদীর এই পারেই থাকবে আমাদের সম্পত্তি।”
33 মোশি তখন ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের রাজ্য ও বাশনের রাজা ওগের রাজ্য গাদ ও রূবেণ-গোষ্ঠীর লোকদের এবং মনঃশি-গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের ভাগে রাখলেন। এই মনঃশি যোষেফের ছেলে। গ্রাম ও শহর এবং সেগুলোর চারদিকের জায়গা সুদ্ধ সমস্ত দেশটাই তিনি তাদের জন্য রাখলেন।
34 গাদ-গোষ্ঠীর লোকেরা দীবোন, অটারোৎ, অরোয়ের,
35 অট্রোৎ-শোফন, যাসের, যগ্বিহ,
36 বৈৎ-নিম্রা ও বৈৎ-হারণ নামে কতগুলো গ্রাম ও শহর দেয়াল দিয়ে ঘিরে ঠিক করে নিল আর তাদের গরু-ভেড়ার ঘরও তৈরী করল।
37-38 রূবেণ-গোষ্ঠীর লোকেরা হিষ্বোন, ইলিয়ালী ও কিরিয়াথয়িম শহর এবং নবো, বাল্-মিয়োন এবং সিব্মা নামে গ্রামগুলো ঠিক করে নিল। ঠিক করে নেওয়া গ্রামগুলোর নতুন নাম দেওয়া হল। নবো ও বাল্-মিয়োন গ্রামের নাম বদ্লানো হয়েছিল।
39 মনঃশির ছেলে মাখীরের বংশধরেরা গিলিয়দে গিয়ে দেশটা আগেই দখল করে নিয়েছিল এবং যে সব ইমোরীয়েরা সেখানে ছিল তাদের তাড়িয়ে দিয়েছিল।
40 সেইজন্য মোশি মনঃশির বংশধর মাখীরীয়দের ভাগে গিলিয়দ এলাকাটা রাখলেন। তারা সেখানে থাকতে লাগল।
41 যায়ীর নামে মনঃশির এক বংশধর গিয়ে ইমোরীয়দের গ্রামগুলো দখল করে নিয়েছিল এবং সেগুলোর নাম দিয়েছিল হব্বোৎ-যায়ীর।
42 নোবহ গিয়ে কনাৎ ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো দখল করে নিয়ে নিজের নাম অনুসারে জায়গাটার নাম দিয়েছিল নোবহ।