ইহিস্কেল 12 MBCL

চিহ্নের মধ্য দিয়ে বন্দীদশার বর্ণনা

1 পরে মাবুদের এই কালাম আমার উপর নাজেল হল,

2 “হে মানুষের সন্তান, তুমি একটা বিদ্রোহী জাতির মধ্যে বাস করছ। তাদের চোখ আছে কিন্তু তারা দেখে না, কান আছে শোনে না, কারণ তারা একটা বিদ্রোহী জাতি।

3 “কাজেই হে মানুষের সন্তান, তুমি যেন দূরে বন্দী হয়ে যাচ্ছ সেইভাবে তোমার জিনিসপত্র বেঁধে নাও এবং তাদের চোখের সামনে দিনের বেলাতেই রওনা হও; তুমি যেখানে আছ সেখান থেকে অন্য জায়গায় যাও। তারা যে বিদ্রোহী জাতি হয়তো তারা তা বুঝতে পারবে।

4 দূরে বন্দী হয়ে যাবার জন্য তোমার গুছিয়ে নেওয়া জিনিসপত্র দিনের বেলাতেই তাদের চোখের সামনে বাইরে বের করবে। তারপর সন্ধ্যা বেলায় দূরে বন্দী হয়ে যাবার মত করে তাদের চোখের সামনে রওনা হবে।

5 তাদের চোখের সামনেই দেয়ালে গর্ত খুঁড়ে তোমার জিনিসপত্র তার মধ্য দিয়ে বের করে নেবে।

6 জিনিসপত্রগুলো তাদের চোখের সামনে কাঁধে তুলে নেবে এবং অন্ধকারের মধ্যে সেগুলো বের করে নিয়ে যাবে। তোমার চোখ ঢেকে রাখবে যাতে তুমি তোমার দেশের মাটি দেখতে না পাও, কারণ ইসরাইল জাতির জন্য আমি তোমাকে একটা নিশানার মত করেছি।”

7 আমাকে যা হুকুম করা হল সেইমতই আমি কাজ করলাম। দূরে বন্দী হয়ে যাবার মত করে আমি আমার জিনিসপত্র দিনের বেলাতেই বের করে আনলাম। তারপর সন্ধ্যা বেলায় হাত দিয়ে দেয়ালে গর্ত খুঁড়লাম। তাদের চোখের সামনেই অন্ধকারে আমার জিনিসপত্র আমি কাঁধের উপরে নিয়ে রওনা হলাম।

8 সকাল বেলায় মাবুদ আমাকে বললেন,

9 “হে মানুষের সন্তান, বিদ্রোহী ইসরাইল জাতি কি তোমাকে জিজ্ঞাসা করে নি, ‘তুমি কি করছ?’

10 তুমি তাদের বল, আল্লাহ্‌ মালিক বলছেন, ‘এই চিহ্ন জেরুজালেমের শাসনকর্তা এবং সেখানকার বনি-ইসরাইলদের জন্য।’

11 তুমি তাদের বল যে, তুমি তাদের কাছে একটা চিহ্ন। তুমি যেমন করলে, তাদের প্রতি তেমনই করা হবে। তারা বন্দী হয়ে দূর দেশে যাবে।

12 “তাদের মধ্যেকার শাসনকর্তা অন্ধকারে তার জিনিসপত্র কাঁধে নিয়ে বের হবে এবং দেয়ালে গর্ত খোঁড়া হবে যাতে সে তার মধ্য দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে। সে তার চোখ ঢাকবে যাতে সে তার দেশের মাটি দেখতে না পায়।

13 আমি তার জন্য জাল পাতব আর সে আমার ফাঁদে ধরা পড়বে। আমি তাকে ব্যাবিলনীয়দের দেশ ব্যাবিলনে নিয়ে যাব, কিন্তু সে তা দেখবে না; সেখানেই সে মারা যাবে।

14 আমি তার চারপাশের সবাইকে, অর্থাৎ তার কর্মচারী ও তার সমস্ত সৈন্যদলকে চারদিকে ছড়িয়ে দেব এবং খোলা তলোয়ার নিয়ে আমি তাদের তাড়া করব।

15 “আমি যখন তাদের নানা জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেব তখন তারা জানবে যে, আমিই মাবুদ।

16 কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু লোককে আমি যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও মহামারীর হাত থেকে বাঁচাব, যাতে তারা যেখানেই যাক না কেন সেখানকার সমস্ত জাতির মধ্যে তাদের সব জঘন্য অভ্যাসের কথা স্বীকার করে। তাতে তারা জানতে পারবে যে, আমিই মাবুদ।”

17 তারপর মাবুদ আমাকে আরও বললেন,

18 “হে মানুষের সন্তান, তুমি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তোমার খাবার ও পানি খাও।

19 তুমি দেশের লোকদের বল যে, ইসরাইল দেশের জেরুজালেমের বাসিন্দাদের বিষয়ে আল্লাহ্‌ মালিক বলছেন, ‘তারা ভয়ে ভয়ে তাদের খাবার খাবে আর হতভম্ব হয়ে পানি খাবে, কারণ সেখানকার বাসিন্দাদের অত্যাচারের দরুন তাদের দেশটা খালি হয়ে পড়ে থাকবে।

20 লোকজন ভরা শহরগুলো ধ্বংসস্থান হয়ে থাকবে এবং দেশ জনশূন্য হবে। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই মাবুদ।’ ”

21 তারপর মাবুদ আমাকে বললেন,

22 “হে মানুষের সন্তান, ইসরাইল দেশে এ কেমন চলতি কথা রয়েছে, ‘দিন চলে যায় আর প্রত্যেক দর্শনই বিফল হয়’?

23 তাদের বল যে, আল্লাহ্‌ মালিক বলছেন, ‘আমি সেই চলতি কথাটা বাতিল করে দেব; ইসরাইল দেশে সেই কথা আর কেউ বলবে না।’ তার বদলে তাদের বল, ‘দিন এসে গেছে, এখন প্রত্যেকটা দর্শন ফলবে।

24 ইসরাইলের লোকদের মধ্যে মিথ্যা দর্শন আর খুশী করবার গোণা-পড়া আর থাকবে না।

25 তখন আমি মাবুদ যা বলব তা সফল হবে, দেরি হবে না। হে বিদ্রোহী জাতি, আমি যা বলছি তা তোমাদের সময়েই সফল করব। আমি আল্লাহ্‌ মালিক এই কথা বলছি।’ ”

26 পরে মাবুদ আমাকে বললেন,

27 “হে মানুষের সন্তান, বনি-ইসরাইলরা বলছে যে, তুমি যে দর্শন দেখছ তা এখন থেকে অনেক বছর পরের কথা, আর যে ভবিষ্যদ্বাণী বলছ তা দূর ভবিষ্যতের বিষয়ে।

28 কাজেই তুমি তাদের বল যে, আল্লাহ্‌ মালিক বলছেন, ‘আমার কোন কথা সফল হতে আর দেরি নেই; আমি যা বলব তা সফল হবে। আমি আল্লাহ্‌ মালিক এই কথা বলছি।’ ”

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48