1 পরে মাবুদ আমাকে আরও বললেন,
2 “হে মানুষের সন্তান, তুমি কি বিচার করতে প্রস্তুত? তাহলে তুমি রক্তপাতের এই শহরের বিচার কর। তুমি তার সব জঘন্য কাজকর্মের কথা তাকে জানাও।
3 তুমি বল যে, আল্লাহ্ মালিক বলছেন, ‘এ সেই শহর, যে নিজের মধ্যে রক্তপাত করে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে এবং মূর্তি তৈরী করে নিজেকে নাপাক করে।
4 রক্তপাত করে তুমি দোষী হয়েছ এবং মূর্তি তৈরী করে নাপাক হয়েছ। তুমি তোমার দিন কাছিয়ে এনেছ এবং তোমার শেষ কাল উপস্থিত হয়েছে। সেইজন্য জাতিদের কাছে আমি তোমাকে ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র করে তুলব এবং সমস্ত দেশের কাছে করব হাসির পাত্র।
5 হে অশান্তিপূর্ণ জঘন্য শহর, যারা কাছে আছে আর যারা দূরে আছে তারা তোমাকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করবে।
6 “ ‘দেখ, তোমার মধ্যেকার ইসরাইলের প্রত্যেক শাসনকর্তা রক্তপাত করবার জন্য কেমন করে তার ক্ষমতা ব্যবহার করছে।
7 তোমার মধ্যেই লোকে মা-বাবাকে তুচ্ছ করছে, বিদেশীদের জুলুম করছে আর এতিম ও বিধবাদের সংগে অন্যায় ব্যবহার করছে।
8 তুমি আমার পাক-পবিত্র জিনিসগুলো ঘৃণা করেছ ও আমার বিশ্রাম দিনগুলোর পবিত্রতা রক্ষা কর নি।
9 তোমার মধ্যে এমন এমন লোক আছে যারা অন্যের বদনাম রটিয়ে তাদের রক্তপাত করায়, পাহাড়ের উপরকার পূজার জায়গায় খাওয়া-দাওয়া করে ও খারাপ খারাপ কাজ করে।
10 তোমার মধ্যে এমন এমন লোক আছে যারা সৎমায়ের সংগে জেনা করে, স্ত্রীলোকের মাসিকের সময়ে নাপাক থাকা কালে জোর করে তার সংগে সহবাস করে,
11 প্রতিবেশীর স্ত্রীর সংগে, ছেলের বউয়ের সংগে আর নিজের সৎবোনের সংগে জেনা করে।
12 তোমার মধ্যে রক্তপাত করবার জন্য লোকে ঘুষ খায়; এছাড়া তারা বাড়তি সুদ নিয়ে থাকে এবং জুলুম করে প্রতিবেশীর কাছ থেকে অন্যায় লাভ করে। তুমি আমাকে ভুলে গেছ। আমি আল্লাহ্ মালিক এই কথা বলছি।
13 “ ‘তুমি যে অন্যায় লাভ করেছ এবং তোমার মধ্যে যে রক্তপাত করেছ তার জন্য আমি নিশ্চয়ই আমার হাতে হাত দিয়ে আঘাত করব।
14 আমি যেদিন তোমার কাছ থেকে হিসাব নেব সেই দিন কি তোমার সাহস থাকবে? তোমার হাতে কি জোর থাকবে? আমি মাবুদই এই কথা বললাম এবং আমি তা করবই।
15 আমি তোমার লোকদের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেব এবং তোমার নাপাকী দূর করব।
16 জাতিদের সামনে তুমি যখন অসম্মানিত হবে তখন তুমি জানবে যে, আমি মাবুদ।’ ”
17 তারপর মাবুদ আমাকে বললেন,
18 “হে মানুষের সন্তান, বনি-ইসরাইলরা আমার কাছে খাদের মত হয়েছে; তারা সবাই যেন রূপা খাঁটি করবার সময় চুলার ভিতরে খাদ হিসাবে পড়ে থাকা পিতল, দস্তা, লোহা ও সীসা।
19 কাজেই আমি আল্লাহ্ মালিক তাদের বলছি, ‘তোমরা সবাই খাদ হয়ে গেছ বলে আমি জেরুজালেমে তোমাদের জমায়েত করব।
20 লোকে যেমন করে রূপা, পিতল, লোহা, সীসা ও দস্তা জড়ো করে চুলায় দিয়ে গলাবার জন্য আগুনে ফুঁ দেয় তেমনি করে আমার রাগ ও গজবে আমি তোমাদের জড়ো করে শহরের মধ্যে রেখে গলাব।
21 আমি তোমাদের জমায়েত করে আমার জ্বলন্ত রাগে ফুঁ দেব আর তোমরা শহরের মধ্যে গলে যাবে।
22 চুলার মধ্যে যেমন রূপা গলে যায় তোমরাও তেমনি তার মধ্যে গলে যাবে। তখন তোমরা জানবে যে, আমি মাবুদই তোমাদের উপর আমার গজব ঢেলে দিয়েছি।’ ”
23 আবার মাবুদ আমাকে বললেন,
24 “হে মানুষের সন্তান, তুমি দেশকে বল, ‘তুমি একটা নাপাক দেশ, তাই আমার রাগের দিনে তোমার উপর বৃষ্টি পড়বে না।’
25 সেই দেশের নবীরা ষড়যন্ত্র করে; তারা গর্জনকারী সিংহের মত শিকার ছেঁড়ে। তারা লোকদের গ্রাস করে, ধন-সম্পদ ও দামী দামী জিনিস নিয়ে নেয় এবং দেশের মধ্যে অনেক স্ত্রীলোককে বিধবা করে।
26 তার ইমামেরা আমার শরীয়তের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং আমার পবিত্র জিনিসগুলো অপবিত্র করে। যা পবিত্র ও যা পবিত্র নয় তারা তা এক করে ফেলে; তারা পাক-পবিত্র ও নাপাকর মধ্যে যে পার্থক্য আছে সেই বিষয়ে শিক্ষা দেয় না এবং আমার বিশ্রাম দিনগুলো পালন করবার ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে রাখে। এতে তাদের মধ্যে আমার নামের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে।
27 নেকড়ে বাঘ যেমন করে শিকার ছেঁড়ে তেমনি করে সেখানকার রাজকর্মচারীরা রক্তপাত করে এবং অন্যায় লাভের জন্য মানুষ খুন করে।
28 মিথ্যা দর্শন ও মিথ্যা গোণা-পড়া দিয়ে তাদের নবীরা তাদের ঐ সব কাজের উপর চুনকাম করে। মাবুদ না বললেও তারা বলে, ‘আল্লাহ্ মালিক এই কথা বলছেন।’
29 দেশের লোকেরা জুলুম এবং ডাকাতি করে; তারা গরীব ও অভাবীদের উপর অন্যায় করে এবং ন্যায়বিচার না করে বিদেশীদের উপর জুলুম করে।
30 “আমি তাদের মধ্যে এমন একজন লোকের তালাশ করলাম, যে দেয়ালটা গাঁথবে এবং দেশের পক্ষ হয়ে দেয়ালের ফাঁকের মধ্যে আমার সামনে দাঁড়াবে যাতে আমাকে দেশটা ধ্বংস করতে না হয়, কিন্তু কাউকে পেলাম না।
31 কাজেই আমার গজব আমি তাদের উপর ঢেলে দেব এবং তাদের আচার-ব্যবহারের ফল তাদের মাথার উপর নামিয়ে দিয়ে আমার জ্বলন্ত রাগে আমি তাদের পুড়িয়ে ফেলব। আমি আল্লাহ্ মালিক এই কথা বলছি।”