1 পরে মাবুদ আমাকে বললেন,
2 “হে মানুষের সন্তান, তোমার জাতির লোকদের বল যে, মাবুদ বলছেন, ‘ধর, আমি কোন দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে আসলাম। তখন দেশের লোকেরা তাদের লোকদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিয়ে তাকে তাদের পাহারাদার নিযুক্ত করল।
3 সে দেশের বিরুদ্ধে সৈন্যদল আসতে দেখে লোকদের সতর্ক করবার জন্য শিংগা বাজাল।
4 তখন যদি কেউ শিংগার আওয়াজ শুনেও সতর্ক না হয় আর সৈন্যেরা এসে তাকে হত্যা করে তবে তার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থাকবে।
5 শিংগার আওয়াজ শুনেও সে সতর্ক হয় নি বলে তাঁর মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী থাকবে। সে যদি সতর্ক হত তবে নিজেকে রক্ষা করতে পারত।
6 কিন্তু ধর, সেই পাহারাদার সৈন্যদলকে আসতে দেখেও লোকদের সতর্ক করবার জন্য শিংগা বাজাল না। তারপর সৈন্যেরা এসে কোন একজনকে হত্যা করল। তাহলে বুঝতে হবে সেই মানুষ তার নিজের গুনাহের জন্যই মারা গেল, কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি সেই পাহারাদারকে দায়ী করব।’
7 “হে মানুষের সন্তান, ইসরাইল জাতির জন্য আমি তোমাকে পাহারাদার নিযুক্ত করেছি; কাজেই আমি যা বলছি তা শোন এবং আমার হয়ে তাদের সতর্ক কর।
8 আমি যখন কোন দুষ্ট লোককে বলি, ‘ওহে দুষ্ট লোক, তুমি নিশ্চয়ই মরবে,’ আর তুমি তাকে তার খারাপ পথ থেকে ফিরবার জন্য সতর্ক না কর, তবে সেই দুষ্ট লোক তার গুনাহের জন্য মারা যাবে কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব।
9 কিন্তু তুমি যদি সেই দুষ্ট লোককে তার কুপথ থেকে ফিরবার জন্য সতর্ক কর আর যদি সে না ফেরে তবে সে তার গুনাহের জন্য মরবে, কিন্তু তুমি নিজের প্রাণ রক্ষা করবে।
10 “হে মানুষের সন্তান, তুমি ইসরাইল জাতিকে বল, ‘তোমরা বলছ তোমাদের অন্যায় ও গুনাহের ভার তোমাদের উপর চেপে আছে; তাতেই তোমরা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছ, বাঁচবার আশা নেই।’
11 তুমি তাদের বল যে, আমি আল্লাহ্ মালিক, আমার জীবনের কসম খেয়ে বলছি, দুষ্ট লোকের মৃত্যুতে আমি কোন আনন্দ পাই না, বরং তারা যেন কুপথ থেকে ফিরে বাঁচে তাতেই আমি আনন্দ পাই। হে ইসরাইল জাতি, তোমরা ফেরো, তোমাদের খারাপ পথ থেকে তোমরা ফেরো। কেন তোমরা মারা যাবে?
12 “সেইজন্য, হে মানুষের সন্তান, তুমি তোমার জাতির লোকদের বল, ‘সৎ লোক যদি মাবুদের অবাধ্য হয় তবে তার সততা তাকে রক্ষা করতে পারবে না, আর দুষ্ট লোক যদি তার দুষ্টতা থেকে ফেরে তবে সে তার দুষ্টতার শাস্তি পাবে না। সৎ লোক যদি গুনাহ্ করে তবে তার আগের সততা তাকে বঁাঁচাতে পারবে না।’
13 যদি আমি একজন সৎ লোককে বলি যে, সে নিশ্চয়ই বাঁচবে, কিন্তু সে পরে তার সততার উপর ভরসা করে খারাপ কাজ করে তবে সে আগে যে সব সৎ কাজ করেছে তার কোনটাই মনে করা হবে না; সে যে খারাপ কাজ করেছে তার জন্যই সে মরবে।
14 যদি আমি একজন দুষ্ট লোককে বলি, ‘তুমি নিশ্চয়ই মরবে,’ কিন্তু সে পরে তার গুনাহ্ থেকে ফিরে ন্যায় ও ঠিক কাজ করে,
15 অর্থাৎ যদি সে বন্ধক রাখা জিনিস ও চুরির জিনিস ফিরিয়ে দেয় এবং জীবনদায়ী নিয়ম-কানুন পালন করে আর খারাপ কাজ না করে তবে সে মরবে না, নিশ্চয়ই বাঁচবে।
16 সে যে সব গুনাহ্ করেছে তার কোনটাই তার বিরুদ্ধে মনে রাখা হবে না। সে ন্যায় ও ঠিক কাজ করেছে বলে সে নিশ্চয়ই বাঁচবে।
17 “তবুও তোমার জাতির লোকেরা বলে থাকে, ‘মাবুদের পথ ঠিক নয়।’ আসলে তাদেরই পথ ঠিক নয়।
18 একজন সৎ লোক যদি তার সততা থেকে ফিরে খারাপ কাজ করে তবে তার জন্য সে মরবে।
19 একজন দুষ্ট লোক যদি তার দুষ্টতা থেকে ফিরে ন্যায় ও ঠিক কাজ করে তবে তার জন্য সে বাঁচবে।
20 তবুও হে বনি-ইসরাইলরা, তোমরা বলে থাক, ‘মাবুদের পথ ঠিক নয়।’ তোমরা যেভাবে চলছ সেই অনুসারে আমি তোমাদের প্রত্যেকের বিচার করব।”
21 আমাদের বন্দীদশার বারো বছরের দশ মাসের পাঁচ দিনের দিন একজন লোক জেরুজালেম থেকে পালিয়ে আমার কাছে এসে বলল, “শত্রুরা শহর দখল করেছে।”
22 লোকটি পৌঁছাবার আগে সন্ধ্যাবেলায় মাবুদের হাত আমার উপরে ছিল এবং সকালবেলায় লোকটি আমার কাছে আসবার আগে তিনি আমার মুখ খুলে দিলেন। কাজেই আমি কথা বলতে লাগলাম, আর চুপ করে রইলাম না।
23 পরে মাবুদের এই কালাম আমার উপর নাজেল হল,
24 “হে মানুষের সন্তান, ইসরাইল দেশের ধ্বংসস্থানে যারা বাস করছে তারা বলছে, ‘ইব্রাহিম মাত্র একজন মানুষ হয়েও দেশের অধিকার পেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তো অনেকজন; কাজেই দেশটা নিশ্চয়ই আমাদের অধিকারের জন্য দেওয়া হয়েছে।’
25 সেইজন্য তুমি তাদের বল যে, আল্লাহ্ মালিক বলছেন, ‘তোমরা তো রক্তসুদ্ধ গোশ্ত খা"ছ, মূর্তিপূজা করছ আর রক্তপাত করছ; তাহলে কি তোমরা দেশের অধিকারী হবে?
26 তোমরা তো তোমাদের তলোয়ারের উপর ভরসা করছ, জঘন্য কাজকর্ম করছ এবং প্রত্যেকে প্রতিবেশীর স্ত্রীকে নাপাক করছ; তাহলে কি তোমরা দেশের অধিকারী হবে?’
27 “তুমি তাদের বল যে, আমি আল্লাহ্ মালিক আমার জীবনের কসম খেয়ে বলছি, যারা সেই ধ্বংসস্থানে আছে তারা যুদ্ধে মারা পড়বে, যারা মাঠে আছে তাদের খেয়ে ফেলবার জন্য আমি বুনো জন্তুদের কাছে তাদের দেব এবং যারা কেল্লায় ও গুহায় আছে তারা মহামারীতে মারা যাবে।
28 আমি ইসরাইল দেশটাকে একটা জনশূন্য পতিত জায়গা করব; তার শক্তির গর্ব শেষ হয়ে যাবে এবং তার পাহাড়-পর্বত এমনভাবে খালি হয়ে পড়ে থাকবে যে, সেখান দিয়ে কেউ যাওয়া-আসা করবে না।
29 তাদের সব জঘন্য কাজের দরুন আমি যখন দেশটা জনশূন্য পতিত জায়গা করব তখন তারা জানবে যে, আমিই মাবুদ।
30 “হে মানুষের সন্তান, তোমার জাতির লোকেরা দেয়ালের পাশে ও ঘরের দরজায় একত্র হয়ে তোমার বিষয়ে বলাবলি করছে এবং একে অন্যকে বলছে, ‘মাবুদের কাছ থেকে যে সংবাদ এসেছে চল, আমরা গিয়ে তা শুনি।’
31 আমার লোকেরা অভ্যাস মতই তোমার কাছে আসে এবং তোমার কথা শুনবার জন্য তোমার সামনে বসে, কিন্তু তারা তা কাজে লাগায় না। মুখে তারা মহব্বতের কথা বলে কিন্তু তাদের অন্তরে থাকে লোভ।
32 এই কথা সত্যি যে, তুমি তাদের কাছে কেবল মিষ্টি সুরে সুন্দরভাবে বাজনা বাজিয়ে ভালবাসার গান গাওয়া একজন লোক ছাড়া আর কিছু নও, কারণ তারা তোমার কথা শোনে বটে, কিন্তু তা কাজে লাগায় না।
33 “যখন এই সব সত্যিই ঘটবে, আর তা নিশ্চয়ই ঘটবে, তখন তারা জানবে যে, তাদের মধ্যে একজন নবী ছিল।”