1 তোমরা তোমাদের জন্য কোন দেব-দেবীর মূর্তি তৈরি করো না এবং খোদাই-করা মূর্তি কিংবা স্তম্ভ স্থাপন করো না ও তার কাছে সেজ্দা করার জন্য তোমাদের দেশে কোন খোদাই-করা পাথর রেখো না; কেননা আমি মাবুদ তোমাদের আল্লাহ্।
2 তোমরা আমার সমস্ত বিশ্রামবার পালন করো ও আমার পবিত্র স্থানের সমাদর করো; আমি মাবুদ।
3 যদি তোমরা আমার বিধিপথে চল, আমার হুকুমগুলো মান্য কর ও সেসব পালন কর,
4 তবে আমি সময়মত তোমাদেরকে বৃষ্টি দান করবো; তাতে ভূমি শস্য উৎপন্ন করবে ও ক্ষেতের গাছগুলো স্ব স্ব ফল দেবে।
5 তোমাদের শস্য মাড়াই করার সময় আঙ্গুর ফল সংগ্রহের সময় পর্যন্ত থাকবে ও আঙ্গুর ফল সংগ্রহের সময় বীজ বপনের সময় পর্যন্ত থাকবে; এবং তোমরা তৃপ্তি পর্যন্ত অন্ন ভোজন করবে ও নিরাপদে নিজের দেশে বাস করবে।
6 আর আমি দেশে শান্তি দেব; তোমরা শয়ন করলে কেউ তোমাদেরকে ভয় দেখাবে না এবং আমি তোমাদের দেশ থেকে হিংস্র জন্তুদেরকে দূর করে দেব; ও তোমাদের দেশে কোন যুদ্ধবিগ্রহ হবে না।
7 আর তোমরা তোমাদের দুশমনদেরকে তাড়িয়ে দেবে ও তারা তোমাদের সম্মুখে তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়বে।
8 আর তোমাদের পাঁচ জন তাদের একশত জনকে তাড়িয়ে দেবে, তোমাদের একশত জন দশ হাজার লোককে তাড়িয়ে দেবে এবং তোমাদের দুশমনেরা তোমাদের সম্মুখে তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়বে।
9 আর আমি তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবো, তোমাদেরকে ফলবান ও বহুবংশ করবো ও তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থির করবো।
10 আর তোমরা সঞ্চিত পুরানো শস্য ভোজন করবে ও নতুনের সম্মুখ থেকে পুরানো শস্য বের করবে।
11 আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার শরীয়ত-তাঁবু রাখবো, আমার প্রাণ তোমাদেরকে ঘৃণা করবে না।
12 আর আমি তোমাদের মধ্যে গমনাগমন করবো ও তোমাদের আল্লাহ্ হব এবং তোমরা আমার লোক হবে।
13 আমি মাবুদ তোমাদের আল্লাহ্; আমি মিসর দেশ থেকে তোমাদেরকে বের করে এনেছি, তাদের গোলাম থাকতে দিই নি; আমি তোমাদের কাঁধের জোয়াল ভেঙে সোজা-ভাবে তোমাদেরকে গমন করিয়েছি।
14 কিন্তু যদি তোমরা আমার কথা না শোন, আমার এসব হুকুম পালন না কর,
15 যদি আমার বিধি অগ্রাহ্য কর ও তোমাদের প্রাণ আমার সমস্ত অনুশাসন ঘৃণা করে, এভাবে তোমরা আমার হুকুম পালন না করে আমার নিয়ম ভঙ্গ কর তবে আমিও তোমাদের প্রতি এই ব্যবহার করবো;
16 তোমাদের জন্য বিহ্বলতা, যক্ষ্মা ও কম্পজ্বর নিরূপণ করবো, যাতে তোমাদের চোখ ক্ষীণ হয়ে পড়বে ও প্রাণ ব্যথা পাবে এবং তোমাদের বীজ বপন বৃথা হবে, কেননা তোমাদের দুশমনেরা তা ভোজন করবে।
17 আর আমি তোমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব; তাতে তোমরা তোমাদের দুশমনদের সম্মুখে আহত হবে; যারা তোমাদেরকে হিংসা করে, তারা তোমাদের উপরে কর্তৃত্ব করবে এবং কেউ তোমাদেরকে না তাড়ালেও তোমরা পালিয়ে যাবে।
18 আর যদি তোমরা এতেও আমার কথায় মনোযোগ না কর তবে আমি তোমাদের গুনাহ্র জন্য তোমাদেরকে সাত গুণ বেশি শাস্তি দেব।
19 আমি তোমাদের শক্তির গর্ব চূর্ণ করবো ও তোমাদের আসমান লোহার মত ও তোমাদের ভূমি ব্রোঞ্জের মত করবো।
20 তাতে তোমাদের শক্তি নিরর্থক নিঃশেষিত হবে, কেননা তোমাদের ভূমি শস্য উৎপন্ন করবে না ও দেশস্থ গাছগুলো স্ব স্ব ফল দেবে না।
21 আর যদি তোমরা আমার বিরুদ্ধাচরণ কর ও আমার কথা শুনতে না চাও তবে আমি তোমাদের গুনাহ্ অনুসারে তোমাদেরকে আরও সাত গুণ আঘাত করবো।
22 আর তোমাদের মধ্যে বন্যপশু পাঠাব; তারা তোমাদের সন্তান হরণ করবে, তোমাদের পশুপাল বিনষ্ট করবে, তোমাদেরকে সংখ্যায় হ্রাস করবে; আর তোমাদের সমস্ত রাজপথ ধ্বংস হবে।
23 এতেও যদি আমার বাধ্য না হও, কিন্তু আমার বিরুদ্ধাচরণ কর,
24 তবে আমিও তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করবো ও তোমাদের গুনাহ্র জন্য আমিই তোমাদেরকে সাতবার আঘাত করবো।
25 আমি নিয়ম লঙ্ঘনের প্রতিফল দেবার জন্য তোমাদের উপরে যুদ্ধ-বিগ্রহ আনবো, তোমরা নিজ নিজ নগরের মধ্যে একত্রীভূত হবে, আমি তোমাদের মধ্যে মহামারী পাঠাব এবং তোমাদেরকে শত্রুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
26 আমি তোমাদের অন্নরূপ যষ্ঠি ভাঙ্গলে দশ জন স্ত্রীলোক এক তন্দুরে তোমাদের রুটি পাক করবে ও তোমাদের রুটি ওজন করে তোমাদেরকে দেবে, কিন্তু তোমরা তা খেয়ে তৃপ্ত হবে না।
27 আর এ সমস্তেও যদি তোমরা আমার কথা না শোন, আমার বিরুদ্ধাচরণ কর,
28 তবে আমি ক্রোধে তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করবো এবং আমিই তোমাদের গুনাহ্র জন্য তোমাদেরকে সাতগুণ শাস্তি দেব।
29 আর তোমরা নিজ নিজ পুত্রদের মাংস ভোজন করবে ও নিজ নিজ কন্যাদের মাংস ভোজন করবে।
30 আর আমি তোমাদের সমস্ত উচ্চস্থলী ধ্বংস করে ফেলব, তোমাদের সমস্ত সূর্যমূর্তি নষ্ট করবো ও তোমাদের মূর্তিগুলোর উপরে তোমাদের লাশ ফেলে রাখব এবং আমার প্রাণ তোমাদেরকে ঘৃণা করবে।
31 আর আমি তোমাদের সমস্ত নগর উৎসন্ন করবো, তোমাদের সকল এবাদখানা ধ্বংস করবো ও তোমাদের সৌরভের খোশবু আমি কবুল করবো না।
32 আর আমি দেশ ধ্বংস করবো ও সেখানে বাসকারী তোমাদের দুশমনেরা তা দেখে বিস্মিত হবে।
33 আর আমি তোমাদেরকে নানা জাতির মধ্যে ছিন্নভিন্ন করবো ও তোমাদের পিছনে তলোয়ার উম্মুক্ত করবো, তাতে তোমাদের সমস্ত দেশ ধ্বংসস্থান ও তোমাদের সমস্ত নগর উৎসন্ন হবে।
34 তখন যত দিন দেশ ধ্বংসস্থান থাকবে ও তোমরা দুশমনদের দেশে বাস করবে, ততদিন ভূমি স্বীয় বিশ্রামকাল ভোগ করবে; সেই সময়ে ভূমি বিশ্রাম পাবে ও স্বীয় বিশ্রামকাল ভোগ করবে।
35 যতকাল দেশ ধ্বংসস্থান হয়ে থাকবে, ততকাল বিশ্রাম করবে; কেননা যখন তোমরা দেশে বাস করতে, তখন দেশ তোমাদের বিশ্রামকালে বিশ্রাম ভোগ করতো না।
36 আর তোমাদের মধ্যে যারা অবশিষ্ট থাকবে, আমি শত্রুদেশে তাদের অন্তরে বিষণ্নতা প্রেরণ করবো এবং বাতাসে পাতা নড়বার আওয়াজ তাদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে; লোকে যেমন তলোয়ারের মুখ থেকে পলায়, তারা তেমনি পালাবে এবং কেউ না তাড়ালেও মারা পড়বে।
37 কেউ না তাড়ালেও তারা যেমন তলোয়ারের সম্মুখে, তেমনি এক জন অন্য জনের উপরে পড়বে এবং দুশমনদের সম্মুখে দাঁড়াতে তোমাদের ক্ষমতা হবে না।
38 আর তোমরা নানা জাতির মধ্যে বিনষ্ট হবে ও তোমাদের দুশমনদের দেশ তোমাদেরকে গ্রাস করবে।
39 আর তোমাদের মধ্যে যারা অবশিষ্ট থাকবে, তারা নিজ নিজ অপরাধে শত্রুদেশে ক্ষয় পাবে এবং তাদের পূর্বপুরুষদেরও অপরাধে তাদের সঙ্গে ক্ষয় পাবে।
40 আর তাদেরকে স্বীকার করতে হবে যে, আমার বিরুদ্ধে সত্য লঙ্ঘন এবং আমার বিরুদ্ধাচরণ করাতে তাদের অপরাধ ও তাদের পূর্বপুরুষদের অপরাধ হয়েছে,
41 এবং আমিও তাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছি, আর তাদেরকে শত্রুদেশে এনেছি। তখন যদি তাদের খৎনা-না-করানো অন্তর নম্র হয় ও তারা নিজ নিজ অপরাধের দণ্ড গ্রাহ্য করে,
42 তবে আমি ইয়াকুবের সঙ্গে কৃত আমার নিয়ম স্মরণ করবো এবং ইস্হাকের সঙ্গে কৃত আমার নিয়ম ও ইব্রাহিমের সঙ্গে কৃত আমার নিয়মও স্মরণ করবো, আর দেশকেও স্মরণ করবো।
43 দেশও তাদের কর্তৃক পরিত্যক্ত থাকবে ও তাদের অবর্তমানে ধ্বংসস্থান হয়ে তার বিশ্রাম ভোগ করবে এবং তারা তাদের অপরাধের দণ্ড ভোগ করবে; কারণ এই যে, তারা আমার অনুশাসন অগ্রাহ্য করতো ও তাদের প্রাণ আমার বিধি ঘৃণা করতো।
44 তবুও যখন তারা দুশমনদের দেশে থাকবে, তখন আমি নিঃশেষে বিনাশের জন্য কিংবা তাদের সঙ্গে আমার নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য তাদেরকে অগ্রাহ্য করবো না এবং ঘৃণাও করবো না; কেননা আমি মাবুদ তাদের আল্লাহ্।
45 আর আমি তাদের আল্লাহ্ হবার জন্য যাদেরকে জাতিদের সাক্ষাতে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছি, তাদের সেই পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কৃত আমার নিয়ম তাদের জন্য স্মরণ করবো; আমি মাবুদ।
46 তুর পর্বতে মাবুদ মূসার মধ্য দিয়ে তাঁর নিজের ও বনি-ইসরাইলদের মধ্যে এসব বিধি, অনুশাসন ও ব্যবস্থা স্থির করলেন।