1 তখন ইয়োব উত্তরে বললেন,
2 “তোমরা আমার কথা মন দিয়ে শোন;সেটাই হবে আমাকে দেওয়া তোমাদের সান্ত্বনা।
3 আমার কথা বলবার সময় তোমরা আমাকে সহ্য কোরো;বলা শেষ হলে তারপর বিদ্রূপ কোরো।
4 “আমার নালিশ কি মানুষের কাছে?কেন আমি অধৈর্য হব না?
5 আমার দিকে তাকিয়ে তোমরা অবাক হও;তোমাদের মুখে হাত চাপা দাও।
6 এই সব কথা ভাবলে আমি ভয় পাই;আমার শরীরে কাঁপুনি ধরে যায়।
7 দুষ্টেরা কেন বেঁচে থাকে আর কেনই বা বুড়ো হয়?কেন তাদের শক্তি বেড়ে যায়?
8 তাদের চারপাশে থাকে তাদের সন্তানেরা,আর তাদের চোখের সামনে থাকে তাদের নাতি-নাতনীরা।
9 তাদের বাড়ী নিরাপদ ও ভয়শূন্য থাকে;ঈশ্বরের শাস্তি তাদের উপর থাকে না।
10 তাদের ষাঁড়গুলো মিলিত হলে তা কখনও বিফল হয় না;তাদের গাভীগুলো বাচ্চা দেয়, তাদের গর্ভ নষ্ট হয় না।
11 ভেড়ার পালের মত তাদের ছেলেমেয়েদের তারা বাইরে পাঠায়;তারা ভেড়ার বাচ্চার মত নেচে নেচে বেড়ায়।
12 তারা খঞ্জনি ও সুরবাহার বাজিয়ে গান করে;বাঁশীর সুর শুনে আনন্দ করে।
13 তারা সফলতার সংগে তাদের দিন কাটায়আর শান্তিতেই মৃতস্থানে নেমে যায়।
14 তবুও তারা ঈশ্বরকে বলে, ‘আমাদের কাছ থেকে তুমি দূর হও;তোমার পথ জানবার ইচ্ছা আমাদের মোটেই নেই।
15 সেই সর্বশক্তিমান কে যে, আমরা তার সেবা করব?তার কাছে প্রার্থনা করলে আমাদের কি লাভ হবে?’
16 কিন্তু তাদের সফলতা তো তাদের নিজেদের হাতে নয়,তাই আমি দুষ্টদের পরামর্শ থেকে দূরে থাকি।
17 “আসলে কি দুষ্টদের বাতি নিভে যায়?কতবারই বা তাদের উপর বিপদ আসে?কতবার ঈশ্বর ক্রোধে তাদের শাস্তি দেন?
18 কতবার তারা বাতাসের মুখে খড়ের মত হয়আর ঝড়ের মুখে উড়ে যাওয়া তুষের মত হয়?
19 লোকে বলে, ‘একজন লোকের শাস্তি ঈশ্বর তার সন্তানদের জন্যজমা করে রাখেন।’কিন্তু ঈশ্বর যেন সেই লোককেই শাস্তি দেনযাতে সে তার দোষ বুঝতে পারে।
20 সে নিজের চোখেই নিজের ধ্বংস দেখুক;সে সর্বশক্তিমানের ক্রোধ পান করুক।
21 তার আয়ু যখন শেষ হয়ে যাবেতখন কি সে তার ফেলে যাওয়া পরিবারের জন্য ভাববে?
22 “কেউ কি ঈশ্বরকে জ্ঞান শিক্ষা দিতে পারে?তিনি তো স্বর্গদূতদেরও বিচার করেন।
23 কেউ পরিপূর্ণ শক্তি, শান্তি ও আরামে থেকে মারা যায়;
24 তার দেহ পুষ্ট হয় ও হাড়ে যথেষ্ট মজ্জা থাকে।
25 আবার কেউ কখনও ভাল কিছু ভোগ না করেতেতো প্রাণ নিয়ে মারা যায়।
26 তারা একই ভাবে মাটিতে শুয়ে থাকে;পোকা তাদের দু’জনকেই ঢেকে ফেলে।
27 “তোমরা যা ভাবছ তা আমি ভাল করেই জানি;আমার বিরুদ্ধে তোমাদের সব মতলব আমার জানা আছে।
28 তোমরা বলছ, ‘এখন কোথায় গেল সেই বড় লোকের বাড়ী?কোথায় গেল সেই দুষ্ট লোকের তাম্বু?’
29 তোমরা কি কখনও যাত্রীদের এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছ?তোমরা কি তাদের এই কথার কোন দামই দেবে না যে,
30 দুষ্ট লোক বিপদের দিনে রেহাই পায়আর ক্রোধের দিনে রক্ষা পায়?
31 তার স্বভাবের কথা কে তার মুখের উপর বলবে?সে যা করেছে তার ফল কে তাকে দেবে?
32-33 যখন তাকে কবরে বয়ে নেওয়া হবেতখন সমস লোক তার পিছনে চলবে,আর অসংখ্য লোকের ভিড় তার আগে আগে যাবে।তার কবরটা পাহারা দেওয়া হবে;উপত্যকার মাটিও তাকে কোন কষ্ট দেবে না।
34 কাজেই তোমাদের এই অর্থহীন কথা দিয়েকেমন করে তোমরা আমাকে সান্ত্বনা দিতে পারবে?তোমাদের উত্তরে মিথ্যা ছাড়া তো আর কিছুই নেই।”