1 মাবুদ ইয়াকুবের প্রতি মমতা করবেন; তিনি আবার বনি-ইসরাইলদের বেছে নেবেন এবং তাদের নিজেদের দেশে বসিয়ে দেবেন। বিদেশীরা তাদের সংগে যোগ দেবে আর তারা ইয়াকুবের বংশের সংগে যুক্ত হবে।
2 অন্যান্য জাতিরা তাদের নিয়ে তাদের নিজেদের দেশে পৌঁছে দেবে। মাবুদের দেশে অন্যান্য জাতিরা বনি-ইসরাইলদের গোলাম ও বাঁদী হবে। যারা তাদের বন্দী করেছিল এখন তাদেরই তারা বন্দী করবে আর তাদের অত্যাচারকারীদের উপরে তারা কর্তা হবে।
3-4 হে ইসরাইল, মাবুদ যেদিন তোমাকে যন্ত্রণা, হাংগামা আর নিষ্ঠুর গোলামী থেকে রেহাই দেবেন সেই দিন তুমি ব্যাবিলনের বাদশাহ্র বিরুদ্ধে এইভাবে ঠাট্টা করে বলবে, “কঠোর কর্মকর্তা কেমনভাবে শেষ হয়েছে! তার ভয়ংকর জুলুম আর নেই।
5 দুষ্টদের লাঠি আর শাসনকর্তাদের শাসনদণ্ড মাবুদই ভেংগে দিয়েছেন।
6 জুলুমবাজ ভীষণ রাগ করে জাতিদের অনবরত আঘাত করত, রাগে সে বারবার তাদের জুলুম করে দমন করত।
7 এখন সমস্ত দুনিয়া রেহাই ও শান্তি পেয়েছে; সেইজন্য তারা আনন্দে গান গাইছে।
8 এমন কি, বেরস আর লেবাননের এরস গাছও আনন্দের সংগে ব্যাবিলনের বাদশাহ্কে বলছে, ‘এখন তোমাকে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে কোন কাঠুরেই আর আমাদের কাটতে আসে না।’
9 “তুমি মৃতস্থানে আসছ বলে মৃতস্থানের লোকেরা তোমার সংগে দেখা করবার জন্য ভীষণ অস্থির হয়ে উঠেছে। তাই মৃতদের রূহ্ উঠছে যেন তারা তোমার সংগে দেখা করতে পারে। যারা এই দুনিয়ার নেতা ছিল তারা সবাই উঠছে; যারা জাতিদের উপরে বাদশাহ্ ছিল তারা সবাই তাদের সিংহাসন থেকে উঠছে।
10 তারা সবাই তোমাকে ডেকে বলবে, ‘তুমিও আমাদের মত দুর্বল হয়ে পড়েছ; তুমি আমাদের মতই হয়েছ।’
11 “তোমার সব জাঁকজমক মৃতস্থানে নামিয়ে আনা হয়েছে; তার সংগে তোমার সব বীণার শব্দ নামানো হয়েছে। তোমার নীচে ছড়িয়ে রয়েছে পোকা আর সেগুলো তোমাকে ঢেকে ফেলেছে।
12 হে শুকতারা, ভোরের সন্তান, তুমি তো আসমান থেকে পড়ে গেছ। তুমি একদিন জাতিদের পরাজিত করেছ আর তোমাকেই এখন দুনিয়াতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
13 তুমি মনে মনে বলেছ, ‘আমি বেহেশতে উঠব, আল্লাহ্র তারাগুলোর উপরে আমার সিংহাসন উঠাব; যেখানে দেবতারা জমায়েত হয় উত্তর দিকের সেই পাহাড়ের উপরে আমি সিংহাসনে বসব।
14 আমি মেঘের মাথার উপরে উঠব; আমি আল্লাহ্তা’লার সমান হব।’
15 কিন্তু তোমাকে মৃতস্থানে নামানো হয়েছে, জ্বী, সেই গর্তের সব চেয়ে নীচু জায়গায় নামানো হয়েছে।
16 যারা তোমাকে দেখে তারা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তারা তোমার অবস্থা দেখে বলে, ‘যে দুনিয়াকে নাড়াত আর রাজ্যগুলোকে কাঁপাত এ কি সেই লোক?
17 এ কি সে, যে দুনিয়াকে মরুভূমির মত করত, শহরগুলোকে উল্টে ফেলত, আর বন্দীদের বাড়ী ফিরে যেতে দিত না?’
18 “জাতিদের সব বাদশাহ্ সম্মানের সংগে নিজের নিজের কবরে শুয়ে আছেন।
19 কিন্তু তোমার লাশকে গাছের বাদ দেওয়া ডালের মত কবরের বাইরে ফেলে রাখা হয়েছে। তলোয়ার দিয়ে যাদের হত্যা করে মৃতস্থানের সবচেয়ে নীচু জায়গায় পাঠানো হয়েছে তাদের লাশ দিয়ে তুমি ঢাকা পড়েছ। তুমি পায়ে মাড়ানো লাশের মত হয়েছ।
20 তুমি অন্যান্য বাদশাহ্দের মত দাফন পাবে না, কারণ তোমার দেশকে তুমি ধ্বংস করেছ আর তোমার লোকদের হত্যা করেছ। দুষ্টদের বংশধরদের কথা আর কখনও উল্লেখ করা হবে না।
21 তাদের পূর্বপুরুষদের গুনাহের দরুন তাদের ছেলেদের হত্যা করবার জন্য একটা জায়গা ঠিক কর। দেশ অধিকার করবার জন্য তারা আর উঠবে না; তারা দুনিয়াকে আর তাদের শহর দিয়ে পরিপূর্ণ করবে না।”
22 আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলছেন, “আমি তাদের বিরুদ্ধে উঠব; ব্যাবিলনের নাম ও তার বেঁচে থাকা লোকদের আর তার বংশধরদের আমি একেবারে শেষ করে দেব।
23 আমি তাকে শজারুদের জায়গা ও জলা জায়গা করব। ধ্বংসের ঝাঁটা দিয়ে আমি তাকে ঝাড়ু দেব। আমি আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এই কথা বলছি।”
24 আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন কসম খেয়ে বলেছেন, “সত্যিই, আমি যেমন ঠিক করেছি তেমনই ঘটবে, আর তা স্থির থাকবে।
25 আমার দেশের মধ্যে আমি আশেরিয়ার বাদশাহ্কে চুরমার করব আর আমার পাহাড়-পর্বতের উপরে তাকে পায়ের নীচে মাড়াব। তখন আমার বান্দাদের কাছ থেকে তার জোয়াল দূর হয়ে যাবে ও তাদের কাঁধ থেকে তার বোঝা সরে যাবে।”
26 সারা দুনিয়ার জন্য এই ব্যবস্থাই ঠিক করা হয়েছে আর সমস্ত জাতির উপরে এই হাতই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
27 আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনই এই সব ঠিক করেছেন, তাই কে তা বিফল করতে পারে? তাঁর হাত বাড়ানো রয়েছে, কে তা গুটাতে পারে?
28 যে বছরে বাদশাহ্ আহস ইন্তেকাল করেছিলেন সেই বছরে ইশাইয়া এই ভবিষ্যদ্বাণী পেয়েছিলেন।
29 হে ফিলিস্তীন, যে লাঠি তোমাকে আঘাত করত তা ভেংগে গেছে বলে তোমরা কেউ আনন্দ কোরো না। সাপের গোড়া থেকে বের হয়ে আসবে কেউটে সাপ, আর সেই সাপ থেকে বেরিয়ে আসবে উড়ন্ত বিষাক্ত সাপ।
30 সবচেয়ে গরীব লোকেরা খাবার পাবে আর অভাবীরা নিরাপদে শুয়ে থাকবে। কিন্তু তোমার শিকড়কে আমি দুর্ভিক্ষ দিয়ে ধ্বংস করব, তাতে তোমার বেঁচে থাকা লোকেরা মরে যাবে।
31 হে দরজা, বিলাপ কর। হে শহর, কাঁদ। হে ফিলিস্তীন, তোমার সব কিছু মিলিয়ে যাক। উত্তর দিক থেকে ধোঁয়ার মেঘ আসছে, সেই সৈন্যদল থেকে একজন সৈন্যও পিছিয়ে পড়ছে না।
32 এই জাতির দূতদের কি জবাব দেওয়া যাবে? তাদের বলা হবে, “মাবুদ সিয়োনকে স্থাপন করেছেন এবং তার মধ্যে অত্যাচারিত হওয়া তাঁর বান্দারা আশ্রয় পাবে।”