ইয়ারমিয়া 20 BACIB

হযরত ইয়ারমিয়ার কারাবাস

1 ইয়ারমিয়া যখন এসব ভবিষ্যদ্বাণী তবলিগ করছিলেন, তখন ইম্মেরের সন্তান ইমাম পশ্‌হূর, মাবুদের গৃহের প্রধান নেতা, সেই কথা শুনল।

2 পশ্‌হূর ইয়ারমিয়া নবীকে প্রহার করে মাবুদের গৃহগামী বিন্‌ইয়ামীনের উচ্চতর দ্বারে অবস্থিত হাঁড়ি-কাঠে তাঁকে আটক করে রাখল।

3 পরের দিন পশ্‌হূর ইয়ারমিয়াকে হাঁড়িকাঠ থেকে মুক্ত করে আনলো। তখন ইয়ারমিয়া তাকে বললেন, মাবুদ তোমার নাম পশ্‌হূর রাখেন নি, কিন্তু মাগোরমিষাবীব [চারদিকেই ভয়] রেখেছেন।

4 কেননা মাবুদ এই কথা বলেন, দেখ, আমি তোমার পক্ষে ও তোমার সমস্ত বন্ধুর পক্ষে তোমাকে ভয়ের পাত্র করবো। তারা দুশমনদের তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়বে ও তুমি স্বচক্ষে তা দেখবে এবং আমি সমস্ত এহুদাকে ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌র হাতে তুলে দেব; তাতে সে তাদেরকে বন্দী করে ব্যাবিলনে নিয়ে যাবে ও তলোয়ারের আঘাতে হত্যা করবে।

5 আর আমি এই নগরের সমস্ত সম্পত্তি, শ্রমোপার্জিত অর্থ, বহুমূল্য বস্তু ও এহুদার বাদশাহ্‌দের ধনকোষগুলো দুশমনদের হাতে প্রদান করবো; আর তারা সেসব লুটপাট করে ব্যাবিলনে নিয়ে যাবে।

6 আর হে পশ্‌হূর, তুমি ও তোমার গৃহনিবাসীরা সকলে বন্দীদশার স্থানে যাবে, তুমি ব্যাবিলনে উপস্থিত হবে, সেই স্থানে মরবে ও সেই স্থানে তোমাকে দাফন করা হবে; তোমার এবং যাদের কাছে তুমি মিথ্যা ভবিষ্যদ্বাণী বলেছ, তোমার সেসব বন্ধুরও সেই গতি হবে।

হযরত ইয়ারমিয়ার বদদোয়া

7 হে মাবুদ, তুমি আমাকে প্ররোচনা করলে আমি প্ররোচিত হলাম; তুমি আমা থেকে বলবান, তুমি আমাকে পরাভূত করেছ। আমি সমস্ত দিন উপহাসের পাত্র হয়েছি, সকলেই আমাকে ঠাট্টা করে।

8 যতবার আমি কথা বলি, ততবার চেঁচিয়ে উঠি; দৌরাত্ম্য ও লুটপাট বলে চেঁচাই; মাবুদের কালামের দরুন সমস্ত দিন আমাকে উপহাস ও বিদ্রূপ করা হয়।

9 যদি বলি, তাঁর বিষয় আর উল্লেখ করবো না, তাঁর নামে আর কিছু বলবো না, তবে আমার অন্তরে যেন জ্বলন্ত আগুন হয়ে অস্থিমধ্যে বন্ধ হয়ে থাকে; তা সহ্য করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ি, সত্যিই আমি আর তা ভিতরে রাখতে পারি না।

10 কারণ আমি অনেকের ফিস্‌ফিসানি শুনছি, চারদিকে ভয় রয়েছে। ‘তোমরা অভিযোগ কর এবং আমরাও ওর নামে অভিযোগ করবো,’ আমার সমস্ত বন্ধু আমার স্খলনের অপেক্ষা করে এই কথা বলে, ‘কি জানি, সে প্ররোচিত হবে, আর আমরা প্রবল হয়ে তাকে পরাজিত করে প্রতিশোধ নেব।’

11 কিন্তু মাবুদ শক্তিশালী যোদ্ধার মত আমার সঙ্গে থাকেন, এজন্য আমার তাড়নাকারীরা হোঁচট খাবে, প্রবল হবে না, বুদ্ধিপূর্বক না চলাতে তারা মহালজ্জিত হবে; সেই অপমান সবসময় থাকবে, তা কেউ ভুলে যাবে না।

12 কিন্তু, হে বাহিনীগণের মাবুদ, তুমি তো ধার্মিকের পরীক্ষক, মর্ম ও হৃদয়ের পরিদর্শক, তুমি তাদেরকে প্রতিশোধ দাও, আমি দেখি, কেননা আমি আমার বিবাদের বিষয় তোমারই কাছে প্রকাশ করলাম।

13 তোমরা মাবুদের উদ্দেশে গান কর, মাবুদের প্রশংসা কর, কারণ তিনি দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দরিদ্র লোকের প্রাণ উদ্ধার করেছেন।

14 আমি যেদিন জন্মেছিলাম, সেদিন বদদোয়াগ্রস্ত হোক; আমার মা যেদিন আমাকে প্রসব করেছিলেন, সেদিন দোয়া-বিহীন হোক।

15 ‘তোমার পুত্র-সন্তান হল’, এই সংবাদ দিয়ে যে ব্যক্তি আমার পিতাকে পরমানন্দিত করেছিল, সে বদদোয়াগ্রস্ত হোক।

16 মাবুদ মাফ না করে যেসব নগর ধ্বংস করেছিলেন, ঐ ব্যক্তি সেসব নগরের মত হোক; সে খুব ভোরে কান্নাকাটির আওয়াজ ও মধ্যাহ্নকালে চিৎকারের আওয়াজ শুনুক।

17 তিনি কেন আমাকে গর্ভের মধ্যে মেরে ফেললেন না? তা হলে আমার জননী আমার কবর হতেন, তাঁর গর্ভ নিত্য ভারী থাকতো।

18 লজ্জায় জীবন কাটাবার জন্য আমি কষ্ট ও খেদ দেখতে কেন গর্ভ থেকে বের হয়ে আসলাম?

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52