1 রাজা হিষ্কিয়ের রাজত্বের চৌদ্দ বছরের সময় আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীব যিহূদার সমস্ত দেয়াল-ঘেরা শহরগুলো আত্রুমণ করে সেগুলো দখল করে নিলেন।
2 তারপর আসিরিয়ার রাজা রব্শাকিকে বড় একদল সৈন্য দিয়ে লাখীশ থেকে যিরূশালেমে রাজা হিষ্কিয়ের কাছে পাঠালেন। রব্শাকি গিয়ে ধোপার মাঠের রাস্তার ধারে উঁচু পুকুরের সংগে লাগানো জলের সুড়ংগের কাছে থামলেন।
3 তখন রাজবাড়ীর পরিচালক হিল্কিয়ের ছেলে ইলিয়াকীম, রাজার লেখক শিব্ন ও ইতিহাস লেখক আসফের ছেলে যোয়াহ বের হয়ে তাঁর কাছে গেলেন।
4 রব্শাকি তাঁদের বললেন, “আপনারা হিষ্কিয়কে এই কথা বলুন যে, সেই মহান রাজা, অর্থাৎ আসিরিয়ার রাজা বলছেন, ‘তুমি কিসের উপর নির্ভর করছ?
5 আমি বলছি তোমার যুদ্ধ করবার বুদ্ধি ও শক্তির কথা কেবল ফাঁকা বুলি। বল দেখি, তুমি কার উপর নির্ভর করে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছ?
6 তুমি তো নির্ভর করছ সেই থেঁৎলে যাওয়া নল, অর্থাৎ মিসরের উপর। যে সেই নলের উপর নির্ভর করবে তা তার হাত ফুটা করে দেবে। মিসরের রাজা ফরৌণের উপর যারা নির্ভর করে তাদের প্রতি সে তা-ই করে।’
7 কিন্তু আপনারা যদি আমাকে বলেন যে, আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপরে নির্ভর করছেন, তাহলে তিনি কি সেই ঈশ্বর নন যাঁর পূজার উঁচু স্থান ও বেদীগুলো হিষ্কিয় ধ্বংস করেছে এবং যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের বলেছে যিরূশালেমের এই বেদীর সামনে তাদের উপাসনা করতে হবে?
8 “আপনারা আমার হয়ে আপনাদের রাজাকে আরও বলুন, ‘আপনি যদি পারেন তবে আমার মনিব আসিরিয়ার রাজার সংগে এই বাজি ধরুন যে, আমি আপনাকে দুই হাজার ঘোড়া দেব যদি আপনি তাতে চড়বার জন্য লোক দিতে পারেন।
9 যদি তা-ই না পারেন তবে আমার মনিবের কর্মচারীদের মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট তাকেই বা আপনি কেমন করে বাধা দেবেন, যদিও আপনি মিসরের রথ ও ঘোড়সওয়ারের উপর নির্ভর করছেন?
10 তা ছাড়া আমি কি সদাপ্রভুর কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই এই দেশ আক্রমণ ও ধ্বংস করতে এসেছি? এই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা ধ্বংস করে ফেলতে সদাপ্রভু নিজেই আমাকে বলেছেন।’ ”
11 তখন ইলিয়াকীম, শিব্ন ও যোয়াহ রব্শাকিকে বললেন, “আপনার দাসদের কাছে আপনি দয়া করে অরামীয় ভাষায় কথা বলুন, কারণ আমরা তা বুঝতে পারি। দেয়ালের উপরকার লোকদের সামনে আপনি আমাদের কাছে ইব্রীয় ভাষায় কথা বলবেন না।”
12 কিন্তু উত্তরে রব্শাকি বললেন, “আমার মনিব কি কেবল আপনাদের মনিব ও আপনাদের কাছে এই সব কথা বলতে আমাকে পাঠিয়েছেন? দেয়ালের উপরে বসা ঐ সব লোকেরা, যাদের আপনাদেরই মত নিজের নিজের পায়খানা ও প্রস্রাব খেতে হবে তাদের কাছেও কি বলে পাঠান নি?”
13 তারপর রব্শাকি দাঁড়িয়ে জোরে জোরে ইব্রীয় ভাষায় বললেন, “তোমরা মহান রাজার, অর্থাৎ আসিরিয়ার রাজার কথা শোন।
14 রাজা বলছেন যে, হিষ্কিয় যেন তোমাদের না ঠকায়। সে তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না।
15 হিষ্কিয় যেন এই কথা বলে সদাপ্রভুর উপর তোমাদের বিশ্বাস না জন্মায় যে, ‘সদাপ্রভু নিশ্চয়ই আমাদের উদ্ধার করবেন; এই শহর আসিরিয়ার রাজার হাতে তুলে দেওয়া হবে না।’
16 “তোমরা হিষ্কিয়ের কথা শুনো না। আসিরিয়ার রাজা বলছেন, ‘তোমরা আমার সংগে সন্ধি কর এবং বের হয়ে আমার কাছে এস। তাহলে তোমরা প্রত্যেকে তার নিজের আংগুর ও ডুমুর গাছ থেকে ফল আর নিজের কূয়া থেকে জল খেতে পারবে।
17 তারপর আমি এসে তোমাদের নিজের দেশের মত আর এক দেশে তোমাদের নিয়ে যাব। সেই দেশ হল শস্য ও নতুন আংগুর-রসের দেশ, রুটি ও আংগুর ক্ষেতের দেশ।
18 “ ॥ঃযং ‘হিষ্কিয় তোমাদের বিপথে চালাবার জন্য যেন না বলে যে, সদাপ্রভু তোমাদের রক্ষা করবেন। অন্যান্য জাতির কোন দেবতা কি আসিরিয়ার রাজার হাত থেকে তার দেশ রক্ষা করতে পেরেছে?
19 হমাৎ ও অর্পদের দেবতারা কোথায়? কোথায় সফর্বয়িমের দেবতারা? তারা কি আমার হাত থেকে শমরিয়াকে রক্ষা করতে পেরেছে?
20 এই সব দেশের সমস্ত দেব-দেবতাদের মধ্যে কে আমার হাত থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করেছে? তাহলে সদাপ্রভু কি করে আমার হাত থেকে যিরূশালেমকে রক্ষা করবেন?’ ”
21 লোকেরা কিন্তু চুপ করে রইল, কোন উত্তর দিল না, কারণ রাজা হিষ্কিয় কোন উত্তর দিতে তাদের নিষেধ করেছিলেন।
22 এর পর রাজবাড়ীর পরিচালক হিল্কিয়ের ছেলে ইলিয়াকীম, রাজার লেখক শিব্ন ও ইতিহাস লেখক আসফের ছেলে যোয়াহ তাঁদের কাপড় ছিঁড়ে হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন এবং রব্শাকির সমস্ত কথা তাঁকে জানালেন।