1 সদাপ্রভু বলছেন, “তোমরা যারা সৎভাবে চলতে চাও আর আমার ইচ্ছামত চলবার চেষ্টা করছ, তোমরা শোন। যে পাথর থেকে তোমাদের কেটে নেওয়া হয়েছে আর যে খাদ থেকে তোমাদের খুঁড়ে তোলা হয়েছে তার দিকে তাকিয়ে দেখ।
2 তোমাদের পিতা অব্রাহাম এবং তোমাদের যে জন্ম দিয়েছে সেই সারার দিকে তাকিয়ে দেখ। আমি যখন তাকে ডেকেছিলাম তখন সে ছিল একজন, আর আমি তাকে আশীর্বাদ করে সংখ্যায় অনেক করলাম।
3 আমি নিশ্চয়ই সিয়োনকে সান্ত্বনা দেব আর তার সব ধ্বংসস্থানগুলোর প্রতি মমতা করব; তার মরু-এলাকাকে আমি এদন বাগানের মত করব আর মরুভূমিকে সদাপ্রভুর বাগানের মত করব। তার মধ্যে আমোদ, আনন্দ, ধন্যবাদ ও গানের আওয়াজ পাওয়া যাবে।
4 “হে আমার লোকেরা, আমার কথা শোন, আমার কথায় কান দাও। আমার মধ্য থেকেই নির্দেশ বের হবে; আমি আমার ন্যায়বিচার স্থাপন করব যাতে অন্য জাতিরা আলো পায়।
5 আমার সততা কাছে এসে গেছে আর আমার উদ্ধার করবার কাজ শুরু হয়েছে। আমি নিজেই জাতিদের উপর ন্যায়বিচার করব। দূর দেশের লোকেরা আমার দিকে তাকাবে আর আমার শক্তিশালী হাতের অপেক্ষায় থাকবে।
6 তোমরা আকাশের দিকে চোখ তোল আর নীচে পৃথিবীর দিকে তাকাও। আকাশ ধূমার মত অদৃশ্য হয়ে যাবে, পৃথিবী কাপড়ের মত পুরানো হয়ে যাবে আর তার বাসিন্দারাও মারা যাবে। কিন্তু আমার দেওয়া উদ্ধার অনন্তকাল স্থায়ী হবে আর আমার সততা চিরকাল থাকবে।
7 “যা ঠিক তোমরা যারা তা জান আর যাদের অন্তরে আমার শিক্ষা আছে, তোমরা শোন। তোমরা মানুষের টিট্কারিকে কিম্বা তাদের করা অপমানকে ভয় কোরো না,
8 কারণ কাপড়ের মত করে আর পশমের মত করে পোকা তাদের খেয়ে ফেলবে। কিন্তু আমার সততা চিরকাল থাকবে; আমার দেওয়া উদ্ধার বংশের পর বংশ ধরে স্থায়ী হবে।”
9 হে সদাপ্রভুর শক্তিশালী হাত, ওঠো, ওঠো, তোমার শক্তি প্রকাশ কর। যেমন তুমি আগেকার দিনে উঠেছিলে, যেমন বংশের পর বংশ ধরে উঠেছিলে তেমনি করে ওঠো। তুমি কি রহবকে টুকরা টুকরা করে কাট নি? সেই বিরাট দানবকে কি তুমি বিদ্ধ কর নি?
10 তুমি কি সাগরের গভীর জল শুকিয়ে ফেল নি? তুমি কি সাগরের ভিতরে রাস্তা তৈরী কর নি যাতে তোমার মুক্ত করা লোকেরা পার হয়ে যেতে পারে?
11 সদাপ্রভুর রক্ষা করা লোকেরা ফিরে আসবে আর গান গাইতে গাইতে সিয়োনে ঢুকবে। চিরকাল স্থায়ী আনন্দই হবে তাদের মাথার মুকুট। তারা খুব আনন্দিত হবে আর দুঃখ ও দীর্ঘনিঃশ্বাস পালিয়ে যাবে।
12 সদাপ্রভু বলছেন, “আমি, আমিই তোমাদের সান্ত্বনা দিই। তোমরা কেন মানুষকে ভয় করছ? তারা তো মরে যাবে। মানুষের সন্তানেরা ঘাসের মতই অল্পক্ষণ স্থায়ী।
13 তোমাদের যিনি তৈরী করেছেন তাঁকে কেন তোমরা ভুলে গেছ? তিনি তো আকাশকে বিছিয়ে দিয়েছেন আর পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপন করেছেন। যে অত্যাচারী ধ্বংস করবার জন্য ঝুঁকে আছে তার ভয়ংকর রাগের দরুন কেন তোমরা প্রতিদিন সব সময় ভয়ে ভয়ে বাস করছ? সেই অত্যাচারীর ভয়ংকর রাগ কিছুই নয়।
14 বন্দীদের শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে। তারা তাদের জেলের গর্তে মারা যাবে না, তাদের খাবারের অভাবও হবে না।
15 আমিই সদাপ্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। আমি সমুদ্রকে তোলপাড় করলে তার ঢেউ গর্জন করে। আমার নাম সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভু।
16 আমি তোমাদের মুখে আমার বাক্য দিয়েছি আর আমার হাতের ছায়ায় তোমাদের ঢেকে রেখেছি। আমিই আকাশকে তার জায়গায় রেখেছি আর পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপন করেছি। আমি সিয়োনকে বলেছি, ‘তুমি আমার লোক।’ ”
17 হে যিরূশালেম, জাগো, জাগো; উঠে দাঁড়াও। তুমি তো সদাপ্রভুর হাত থেকে তাঁর ক্রোধের পেয়ালায় খেয়েছ; মানুষ যে পেয়ালা থেকে খেয়ে টলতে থাকে সেই পেয়ালার তলা পর্যন্ত তুমি চেটে খেয়েছ।
18 তুমি যে সব ছেলেদের জন্ম দিয়েছ তাদের মধ্যে পথ দেখাবার মত কেউ নেই; যে সব ছেলেদের তুমি পালন করেছ তাদের মধ্যে তোমার হাত ধরবার মত কেউ নেই।
19 ধ্বংস ও সর্বনাশ এবং দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধ- এই দুই রকম বিপদ তোমার উপর এসে পড়েছে। কে তোমাকে সান্ত্বনা দিতে পারে? আমি কেমন করে তোমাকে সান্ত্বনা দেব?
20 তোমার ছেলেরা অজ্ঞান হয়ে গেছে; তারা জালে পড়া হরিণের মত প্রতিটি রাস্তার মাথায় শুয়ে আছে। তাদের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ, তোমার ঈশ্বরের শাস্তি পরিপূর্ণভাবে নেমে এসেছে।
21 কাজেই হে দুঃখিনী, তুমি এই কথা শোন। তোমাকে মাতাল করা হয়েছে, কিন্তু আংগুর-রসে নয়।
22 তোমার প্রভু সদাপ্রভু, তোমার ঈশ্বর, যিনি তাঁর লোকদের পক্ষে থাকেন তিনি এই কথা বলছেন, “দেখ, যে পেয়ালা থেকে খেয়ে তুমি টলতে তা আমি তোমার হাত থেকে নিয়ে নিয়েছি; আমার ক্রোধের সেই পেয়ালা থেকে তুমি আর কখনও খাবে না।