দ্বিতীয় বিবরণ 3 MBCL

বাশনের বাদশাহ্‌ উজের পরাজয়

1 “এর পর আমরা ঘুরে বাশন দেশের দিকে যাওয়ার রাস্তা ধরে এগিয়ে চললাম। আমাদের সংগে যুদ্ধ করবার জন্য বাশনের বাদশাহ্‌ উজ তাঁর সমস্ত সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বের হয়ে ইদ্রিয়ী শহরে আসলেন।

2 তখন মাবুদ আমাকে বললেন, ‘তুমি তাকে ভয় কোরো না, কারণ তাকে ও তার দেশ ও সৈন্য-সামন্ত আমি তোমার হাতে দিয়ে দিয়েছি। তুমি হিষ্‌বোনে বাসকারী আমোরীয়দের বাদশাহ্‌ সীহোনের অবস্থা যা করেছিলে এর অবস্থাও তা-ই করবে।’

3 “এইভাবে আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ বাশনের বাদশাহ্‌ উজ ও তাঁর সমস্ত সৈন্য-সামন্তকে আমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা তাদের সবাইকে হত্যা করেছিলাম; কাউকেই বাঁচিয়ে রাখি নি।

4 সেই সময় আমরা তাঁর সব গ্রাম ও শহরগুলো নিয়ে নিয়েছিলাম। তাঁর ষাটটা শহরের সবগুলোই আমরা দখল করে নিয়েছিলাম; একটাও বাদ রাখি নি। গোটা অর্গোব এলাকাটা, অর্থাৎ বাশনের মধ্যে উজের গোটা রাজ্যটা আমরা দখল করে নিয়েছিলাম।

5 এই সব শহরগুলো উঁচু উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল আর তাতে ছিল দরজা আর হুড়কা। অনেকগুলো দেয়াল ছাড়া গ্রামও সেখানে ছিল।

6 আমরা সেই সব গ্রাম ও শহর সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। হিষ্‌বোনের বাদশাহ্‌ সীহোনের প্রতি আমরা যেমন করেছিলাম তেমনি করে তাদের পুরুষ, স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়ে এবং প্রত্যেকটা গ্রাম ও শহর আমরা একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম।

7 কিন্তু সেখান থেকে সমস্ত পশুপাল এবং লুট করে আনা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য নিয়ে এসেছিলাম।

8 “সেই সময় আমরা অর্ণোন নদী থেকে হর্মোণ পাহাড় পর্যন্ত জর্ডান নদীর পূর্ব দিকের এলাকাটা এই দু’জন আমোরীয় বাদশাহ্‌র হাত থেকে নিয়ে নিয়েছিলাম।

9 (সিডনীয়রা হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে আর আমোরীয়রা বলে সনীর।)

10 ঐ মালভূমির সমস্ত গ্রাম ও শহর, সব গিলিয়দ এলাকা এবং বাশনের বাদশাহ্‌ উজের রাজ্যের সল্‌খা ও ইদ্রিয়ী শহর পর্যন্ত গোটা বাশন দেশটা আমরা দখল করে নিয়েছিলাম।

11 রফায়ীয়দের বাকী লোকদের মধ্যে কেবল বাশনের বাদশাহ্‌ উজই বেঁচে ছিলেন। তাঁর লোহার তৈরী শোবার খাটটা ছিল লম্বায় প্রমাণ হাতের নয় হাত আর চওড়ায় চার হাত। ওটা এখনও অম্মোনীয়দের রব্বা শহরে আছে।

জায়গা-জমি ভাগ

12 “আমাদের অধিকার করা জায়গা থেকে আমি তখন অর্ণোন নদীর কাছে অরোয়ের শহরের বাইরে উত্তর দিকের এলাকাটা এবং গিলিয়দের পাহাড়ী এলাকার অর্ধেক ও সেখানকার সব গ্রাম ও শহর রূবেণ ও গাদ-গোষ্ঠীর লোকদের দিলাম।

13 গিলিয়দ দেশের বাকী অংশ এবং বাদশাহ্‌ উজের গোটা বাশন রাজ্যটা আমি মানশা-গোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে দিলাম।“বাশনের মধ্যেকার সমস্ত অর্গোব এলাকাটাকে রফায়ীদের দেশ বলা হত।

14 যায়ীর নামে মানশার এক বংশধর গশূরীয় ও মাখাথীয়দের সীমানা পর্যন্ত গোটা অর্গোব এলাকাটা দখল করে নিজের নাম অনুসারে তার নাম রেখেছিল। তাই এখন বাশনকে হব্বোৎ-যায়ীর বলা হয়ে থাকে।

15 “আমি মাখীরকে গিলিয়দ এলাকাটা দিলাম।

16 কিন্তু গিলিয়দ থেকে অর্ণোন উপত্যকার মাঝখানের সীমারেখাটা পর্যন্ত সমস্ত জায়গা এবং সেখান থেকে অম্মোনীয়দের সীমানা যব্বোক নদী পর্যন্ত আমি রূবেণ ও গাদ-গোষ্ঠীর লোকদের দিলাম।

17 পশ্চিম দিকে তাদের শেষ সীমানা ছিল আরবার জর্ডান নদীর যে অংশটা গালীল সাগর থেকে পিস্‌গা পাহাড়শ্রেণীর ঢালু অংশের নীচে আরবার সমুদ্র, অর্থাৎ মরু-সাগর পর্যন্ত চলে গেছে সেই অংশটা।

18 “তারপর আমি তাদের বললাম, ‘তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ এই জায়গাটা তোমাদের দখল করবার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যাদের গায়ে জোর আছে সেই সব লোকদের যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়ে ইসরাইলীয় ভাইদের আগে আগে নদী পার হয়ে যেতে হবে।

19 তবে তোমাদের যে সব গ্রাম ও শহর দেওয়া হল সেখানে তোমাদের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আর পশুপাল রেখে যেতে পারবে। আমি জানি তোমাদের পশু অনেক।

20 মাবুদ যতদিন পর্যন্ত তোমাদের মত করে তোমাদের ভাইদেরও বিশ্রামের সুযোগ না দেন এবং জর্ডানের ওপারে যে দেশটা তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ তাদের দিতে যাচ্ছেন তা তারা অধিকার না করে ততদিন পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ করে যেতে হবে। তার পরে এই যে জায়গা-জমি তোমাদের দেওয়া হল এখানে তোমরা ফিরে আসতে পারবে।’

মূসাকে জর্ডান নদী পার হতে দেবার অস্বীকৃতি

21 “সেই সময় আমি ইউসাকে বললাম, ‘তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ এই দু’জন বাদশাহ্‌র অবস্থা কি করেছেন তা তো তুমি নিজের চোখেই দেখেছ। তোমরা যেখানে যাচ্ছ সেখানকার সব রাজ্যগুলোর অবস্থাও মাবুদ তা-ই করবেন।

22 তোমরা তাদের ভয় কোরো না; তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ নিজে তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন।’

23 “সেই সময় আমি মাবুদকে মিনতি করে বলেছিলাম,

24 ‘হে আল্লাহ্‌ মালিক, তুমি যে কত মহান এবং শক্তিশালী তা তোমার গোলামকে দেখাতে শুরু করেছ। বেহেশতে বা দুনিয়াতে কোন্‌ দেবতা আছে যে, তুমি যে সব কাজ করেছ তা করতে পারে এবং তুমি যে শক্তি দেখিয়েছ তা দেখাতে পারে?

25 জর্ডান নদী পার হয়ে গিয়ে ঐ চমৎকার দেশটা, অর্থাৎ ঐ পাহাড়ী দেশটা আর লেবানন আমাকে দেখতে দাও।’

26 “কিন্তু তোমাদের দরুন মাবুদ আমার উপর বিরক্ত হওয়াতে আমার কথা তিনি শুনলেন না। তিনি বললেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। এই বিষয়ে আমাকে আর বোলো না।

27 তুমি পিস্‌গার চূড়ায় উঠে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে চেয়ে দেখ। জর্ডান নদী পার হয়ে যখন তোমার যাওয়া হবে না তখন নিজের চোখে দেশটা একবার দেখে নাও।

28 ইউসাকে কি করতে হবে তা তুমি তাকে বলে দাও; তাকে উৎসাহ ও সাহস দাও, কারণ সে-ই আগে আগে গিয়ে লোকদের পার করে নিয়ে যাবে এবং যে দেশটা তুমি দেখতে যাচ্ছ তা তাদের দিয়ে অধিকার করাবে।’

29 সেইজন্য আমরা বৈৎ-পিয়োরের উল্টা দিকের উপত্যকায় থেকে গেলাম।

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34