1 আল্লাহ্র বান্দা মূসা ইন্তেকাল করবার আগে বনি-ইসরাইলদের এই বলে দোয়া করেছিলেন,
2 “মাবুদ তুর পাহাড় থেকে আসলেন,তিনি সেয়ীর থেকে তাদের উপর আলো দিলেন;তাঁর আলো পারণ পাহাড় থেকে ছড়িয়ে পড়ল।তিনি লক্ষ লক্ষ পবিত্র ফেরেশতাদের মাঝখান থেকে আসলেন;তাঁর ডান হাতে রয়েছে তাদের জন্য আগুন ভরা আইন।
3 “সত্যিই তিনি তাঁর নিজের বান্দাদের মহব্বত করেন।পবিত্র ফেরেশতারা তাঁর অধীনে রয়েছেন,তাঁরা সবাই তাঁর পায়ে নত হয়ে আছেন;তাঁরই কাছে তাঁরা হুকুম পান।
4 আমাদের কাছে মূসা যে শরীয়ত দিয়েছিলেন,সেটাই হল ইয়াকুব-গোষ্ঠীর ধন।
5 যখন ইসরাইলীয় সর্দারেরা জমায়েত হলেন,তাদের সংগে ইসরাইলীয় সব গোষ্ঠী জমায়েত হল,তখন মাবুদই ছিলেন ইসরাইলের বাদশাহ্।”
6 রূবেণ সম্বন্ধে মূসা বলেছিলেন,“রূবেণকে বাঁচিয়ে রাখ, মৃত্যু তার দূরে রাখ;তার লোকসংখ্যা যেন কম থাকে।”
7 এহুদা সমন্ধে তিনি বলেছিলেন,“হে মাবুদ, তুমি এহুদার কথা শোন;তার লোকদের মধ্যে তাকে ফিরিয়ে আন।তার নিজের দু’হাত সে যুদ্ধে লাগায়;শত্রুর বিরুদ্ধে তুমি তার সহায় হও।”
8 লেবি সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“তোমার ভক্তের কাছে তোমার তূম্মীম ও ঊরীম আছে;মঃসাতে তুমি তার পরীক্ষা করেছিলে,মরীবার পানির কাছে তার সংগে ঝগড়া করেছিলে।
9 নিজের পিতা-মাতাকে বড় করে না দেখে,নিজের ভাইদের স্বীকার না করে,নিজের ছেলেমেয়েদের অস্বীকার করে,সে তোমার কালাম পাহারা দিয়েছেআর তোমার ব্যবস্থা রক্ষা করেছে।
10 তোমার হুকুম সে ইয়াকুবকে শিখায়,আর শরীয়ত শিখায় ইসরাইলকে।সে তোমার সামনে ধূপ জ্বালায়,তোমার কোরবানগাহের উপরে পোড়ানো-কোরবানী দেয়।
11 হে মাবুদ, তুমি তার সম্পত্তিতে দোয়া কর,তার সব কাজে তুমি খুশী হও।তুমি তার শত্রুর কোমর ভেংগে দাও;যারা তাকে ঘৃণা করে তাদের কোমর ভেংগে দাও,যেন তারা আর দাঁড়াতে না পারে।”
12 বিন্ইয়ামীন সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“মাবুদ যাকে মহব্বত করেনসে নিরাপদে তাঁর কাছে থাকবে;তিনি সব সময় তাকে আড়ালে রাখেন;তাঁরই পিঠের উপর তার স্থান।”
13 ইউসুফ সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“মাবুদ তার দেশকে যেন দোয়া করেনআসমানের মহামূল্য শিশির দিয়ে,মাটির নীচের পানি দিয়ে,
14 সূর্যের সেরা দান দিয়ে,মৌসুমের সেরা ফসল দিয়ে,
15 পুরানো পাহাড়ের সম্পদ দিয়ে,চিরকালের পাহাড়ের ধন দিয়ে,
16 ভরা দুনিয়ার ভাল ভাল জিনিস দিয়ে,আর জ্বলন্ত ঝোপে যিনি ছিলেন তাঁর রহমত দিয়ে।ইউসুফের মাথায় এই সব দোয়া ঝরে পড়ুক;ভাইদের মধ্যে যে মহৎ তাঁরই মাথায় ঝরে পড়ুকএই সব দোয়া।
17 তার মহিমা প্রথমে জন্মানো ষাঁড়ের মত,তার মাথায় রয়েছে বুনো ষাঁড়ের শিং।তা দিয়ে সে গুঁতাবে দুনিয়ার সব জাতিকে,এমন কি, এর শেষ সীমানার জাতিকেও।এই রকমই হবে আফরাহীমের লক্ষ লক্ষআর মানশার হাজার হাজার লোক।”
18 সবূলূন সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“সবূলূন বাইরের কাজে খুশী হোক,আর ইষাখর খুশী হোক ঘরের কাজে।
19 লোকদের তারা পাহাড়ের ধারে ডাকবে;সেখানে যোগ্য মনোভাব নিয়ে তারা পশু-কোরবানী দেবে।সাগর থেকে তারা তুলবে সাগরের ধন,আর বালি থেকে তুলে আনবে বালির তলার ধন।”
20 গাদ সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“ধন্য তিনি, যিনি গাদের রাজ্যের সীমা বাড়াবেন।সে সিংহের মত বসবেআর শত্রুর মাথা ও হাত ছিঁড়বে।
21 সব জায়গার সেরা জায়গা সে বেছে নিয়েছে;নেতার যোগ্য পাওনা তার জন্য রাখা আছে।যুদ্ধে জমায়েত হওয়া সর্দারদের মধ্যেসে-ই মাবুদের ন্যায়-ভরা হুকুম পালন করেছে,পালন করেছে ইসরাইলকে দেওয়া মাবুদের নিয়ম।”
22 দান সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“সে যেন বাশন থেকে লাফিয়ে আসা সিংহের বাচ্চা।”
23 নপ্তালি সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“নপ্তালি মাবুদের মমতায় পূর্ণ;তাঁরই দোয়ায় সে পূর্ণ হয়ে উঠেছে।তুমি তোমার সীমানার মধ্যে নিয়ে এসগালীল সাগর ও তার দক্ষিণের দেশ।”
24 আশের সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন,“আশের অন্যের চেয়ে বেশী দোয়া পাবে;সে যেন ভাইদের প্রিয় হয়,তার পা দু’খানা যেন জলপাই তেলের মধ্যে ডুবে থাকে।
25 লোহা আর ব্রোঞ্জের আগল দিয়েতার সদর দরজা বাঁধা থাকবে।যতদিন সে বেঁচে থাকবেততদিন তার গায়ে শক্তি থাকবে।”
26 মূসা বলেছিলেন, “ইসরাইলের আল্লাহ্র মত আর কেউ নেই।তোমার সাহায্যকারী হবার জন্য মেঘের উপর চড়েনিজের মহিমায় তিনি আসমান-পথে চলেন।
27 যিনি আদিকালের আল্লাহ্ তিনিই তোমার আশ্রয়;তাঁর চিরকালের হাতে তিনিই তোমাকে ধরে আছেন।তোমার সামনে যত শত্রু আছেতিনি তাদের তাড়িয়ে দেবেন;তিনি বলবেন, ‘এদের ধ্বংস কর।’
28 ইসরাইল জাতি তাই নিরাপদে থাকবে।ইয়াকুবের ঝর্ণা থাকবে বিপদ-সীমার বাইরে;সেখানে থাকবে প্রচুর শস্য ও নতুন আংগুর-রস,তার উপরে আকাশের শিশির ঝরে পড়বে।
29 হে ইসরাইল জাতি, ধন্য তুমি!তুমিই মাবুদের উদ্ধার-করা জাতি,তোমার মত আর কোন জাতি নেই।তিনিই তোমার সাহায্যের ঢাল,তোমার গৌরবের তলোয়ার।শত্রুরা তোমার সামনে থর থর করে কাঁপবে,আর তুমি তাদের পিঠ মাড়িয়ে চলে যাবে।”