1 মাবুদ তুর পাহাড়ে মূসার মধ্য দিয়ে বনি-ইসরাইলদের জন্য একটা ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন, আর এগুলো হল তাঁর দ্বিতীয় ব্যবস্থার শর্ত যা তিনি মূসাকে মোয়াব দেশে বনি-ইসরাইলদের জন্য স্থাপন করতে বলেছিলেন।
2 মূসা সব বনি-ইসরাইলদের ডেকে বললেন, “মাবুদ মিসর দেশের ফেরাউন ও তাঁর সমস্ত কর্মচারীর প্রতি এবং তাঁর গোটা দেশটার প্রতি যা করেছিলেন তা তোমরা নিজেরাই দেখেছ।
3 তাঁদের সেই মহাপরীক্ষা এবং মাবুদের দেখানো অলৌকিক চিহ্ন এবং তাঁর বড় বড় কুদরতি তোমরা নিজেদের চোখেই দেখেছ।
4 কিন্তু তোমরা মাবুদের কাছ থেকে আজ পর্যন্ত সেগুলো বুঝবার মন, দেখবার চোখ ও শুনবার কান পাও নি।
5 চল্লিশ বছর মরুভূমির মধ্য দিয়ে মাবুদই তোমাদের চালিয়ে নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে তোমাদের গায়ের কাপড় এবং জুতা নষ্ট হয়ে যায় নি।
6 রুটি, আংগুর-রস কিংবা অন্য কোন মদানো রস তোমরা খেতে পাও নি। মাবুদই তা করেছেন যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, তিনিই তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্।
7 “তোমরা এই জায়গায় পৌঁছালে পর হিষ্বোনের বাদশাহ্ সীহোন ও বাশনের বাদশাহ্ উজ আমাদের সংগে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়ে এসেছিলেন, কিন্তু আমরা তাঁদের হারিয়ে দিয়েছি।
8 আমরা তাঁদের দেশ নিয়ে সম্পত্তি হিসাবে তা রূবেণীয়, গাদীয় ও মানশা-গোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে দিয়েছি।
9 সেইজন্য তোমরা এই ব্যবস্থার সব হুকুমগুলো যত্নের সংগে মেনে চলবে যাতে সব কাজেই তোমাদের উন্নতি হয়।
10 “তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্র সামনে আজ তোমরা সবাই এসে দাঁড়িয়েছ- দাঁড়িয়েছে তোমাদের সর্দারেরা ও প্রধানেরা, তোমাদের বৃদ্ধ নেতারা ও কর্মচারীরা এবং অন্যান্য সব বনি-ইসরাইলরা।
11 তোমাদের সংগে রয়েছে তোমাদের ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীলোকেরা; আর রয়েছে তোমাদের ছাউনিতে বাস-করা অন্য জাতির লোকেরা যারা তোমাদের কাঠ কাটে ও পানি তোলে।
12 তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্ তোমাদের জন্য আজ নিশ্চয়তার কসম খেয়ে যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছেন সেই কসম ও ব্যবস্থা মেনে নেবার জন্য তোমরা এখানে এসে দাঁড়িয়েছ।
13 মাবুদ আজ তা স্থাপন করছেন যাতে তোমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কাছে খাওয়া কসম এবং তোমাদের কাছে করা ওয়াদা অনুসারে তিনি তোমাদের আল্লাহ্ হতে পারেন এবং আজকের দিনে পাকাপাকি ভাবে তোমাদের তাঁর নিজের লোক করে নিতে পারেন।
14-15 আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র সামনে এসে আজ যারা দাঁড়িয়েছে কেবল তাদের জন্যই যে আমি নিশ্চয়তার কসম খাওয়া এই ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করছি তা নয়, কিন্তু যাদের এখনও জন্ম হয় নি তাদের জন্যও করছি।
16 “তোমরা নিজেরাই জান, মিসর দেশে আমরা কি রকম জীবন কাটিয়েছি এবং কিভাবে বিভিন্ন দেশের মধ্য দিয়ে এখানে এসে পৌঁছেছি।
17 কাঠ, পাথর, সোনা ও রূপার তৈরী জঘন্য মূর্তি ও প্রতিমা তোমরা ঐ সব লোকদের মধ্যে দেখেছ।
18 তোমরা দেখে নাও যেন তোমাদের মধ্যে আজ এমন কোন পুরুষ বা স্ত্রীলোক কিংবা কোন বংশ বা গোষ্ঠী না থাকে যার অন্তর তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্কে ফেলে ঐ সব জাতির দেব-দেবীর পূজা করতে আগ্রহী। যদি সেই রকম কেউ থাকে তবে তোমাদের মধ্যে সে হবে এমন একটা শিকড়ের মত যা পরে বিষাক্ত তেতো গাছ হয়ে উঠবে।
19 এই রকম লোক এই কসম খাওয়া কথাগুলো শুনবার সময় যদি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করে এবং মনে মনে ভাবে, নিজের ইচ্ছামত চলতে থাকলেও সে নিরাপদে থাকবে, তাহলে তোমাদের সকলের উপরেই সে সর্বনাশ ডেকে আনবে।
20 মাবুদ কখনও তাকে মাফ করতে রাজী হবেন না। সেই লোকের বিরুদ্ধে তাঁর রাগ জ্বলে উঠবে আর তাঁর অন্তরে তাঁর পাওনা এবাদতের আগ্রহ জেগে উঠবে। এই কিতাবে যে সব বদদোয়ার কথা লেখা আছে তা সবই তার উপর পড়বে। মাবুদ দুনিয়া থেকে তার নাম মুছে ফেলবেন।
21 তিনি বনি-ইসরাইলদের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে দুঃখকষ্টের জন্য তাকেই বেছে নেবেন, আর তিনি এই তৌরাত কিতাবে লেখা ব্যবস্থার মধ্যে যে সব বদদোয়ার কথা বলা হয়েছে সেই কথা অনুসারে তা করবেন।
22 “এইভাবে এই দেশের উপর যে সব গজব নেমে আসবে এবং মাবুদ যে সব রোগ দেশের উপর পাঠিয়ে দেবেন সেই বিষয়ে তোমাদের বংশধরেরা আর দূর দেশ থেকে আসা বিদেশীরা তোমাদের জিজ্ঞাসা করবে।
23 গোটা দেশটা লবণ আর গন্ধকে পুড়ে পড়ে থাকবে। তাতে কিছুই বোনা হবে না, কিছুই গজাবে না আর কোন ঘাস বা ঝোপ-ঝাড় তার উপর থাকবে না। এই দেশের অবস্থা হবে সাদুম, আমুরা, অদ্মা ও সবোয়িমের মত, যা মাবুদ তাঁর ভয়ংকর রাগে জ্বলে উঠে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
24 তা দেখে অন্য সব জাতি জিজ্ঞাসা করবে, ‘মাবুদ কেন এই দেশটার এই দশা করেছেন? কেন তাঁর এই ভয়ংকর জ্বলন্ত রাগ?’
25 “এর জবাব হবে, ‘কারণ এই জাতি তাদের পূর্বপুরুষদের মাবুদ আল্লাহ্র ব্যবস্থা ত্যাগ করেছে, যে ব্যবস্থা মিসর দেশ থেকে তাদের বের করে আনবার পর তিনি তাদের জন্য স্থাপন করেছিলেন।
26 তারা তাঁকে ফেলে তাদের কাছে নতুন দেব-দেবীর পূজা করেছে ও তাদের সামনে মাথা নীচু করেছে, যাদের পূজা করবার নির্দেশ মাবুদ দেন নি।
27 সেইজন্যই মাবুদের রাগ এই দেশের উপর জ্বলে উঠেছে আর তিনি এই কিতাবে লেখা সব বদদোয়া এই দেশের উপর ঢেলে দিয়েছেন।
28 ভীষণ গজবে, ভয়ংকর জ্বলন্ত রাগে, তিনি দেশ থেকে তাদের উপ্ড়ে নিয়ে অন্য দেশে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন, আর আজও তারা সেখানেই আছে।’
29 “গোপন সব কিছু আমাদের মাবুদ আল্লাহ্র ব্যাপার, কিন্তু প্রকাশিত সব কিছু চিরকালের জন্য আমাদের ও আমাদের সন্তানদের, যেন এই শরীয়তের সমস্ত কথা আমরা পালন করে চলতে পারি।