1 হে উপকূলগুলো, আমার কালাম শোন;হে দূরস্থ জাতিরা, কান দাও।মাবুদ গর্ভ থেকে আমাকে ডেকেছেন,মায়ের গর্ভ থেকে আমার নাম উল্লেখ করেছেন।
2 তিনি আমার মুখ ধারালো তলোয়ারস্বরূপ করেছেন,তাঁর হাতের ছায়াতে আমাকে লুকিয়ে রেখেছেন,আমাকে ধারালো তীরস্বরূপ করেছেন,তাঁর তীর রাখবার খাপের মধ্যে রেখেছেন।
3 আর তিনি আমাকে বলেছেন ‘তুমি আমার গোলাম,তুমি ইসরাইল, তোমাতেই আমি মহিমান্বিত হব।’
4 কিন্তু আমি বললাম, আহা! আমি পণ্ডশ্রম করেছি,শূন্যতা ও অসারতার জন্য আমার শক্তি ব্যয় করেছি;নিশ্চয়ই আমার বিচার মাবুদের কাছে,আমার শ্রমের ফল আমার আল্লাহ্র কাছে রয়েছে।
5 আর এখন মাবুদ বলেন,যিনি আমাকে গর্ভ থেকে নির্মাণ করেছেন,যেন আমি তাঁর গোলাম হয়ে ইয়াকুবকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে আনি,যেন ইসরাইল তাঁর কাছে সংগৃহীত হয়,বাস্তবিক, মাবুদের দৃষ্টিতে আমি সম্মানিত,আমার আল্লাহ্ আমার বল হয়েছেন;
6 তিনি বলেন, এটি লঘু বিষয় যে,তুমি যে ইয়াকুবের বংশগুলোকে উঠাবার জন্য,ইসরাইলের রক্ষাপ্রাপ্ত লোকদেরকে পুনর্বার আনবার জন্য আমার গোলাম হও,আমি তোমাকে জাতিদের দীপ্তিস্বরূপ করবো,যেন তুমি দুনিয়ার সীমা পর্যন্ত আমার উদ্ধারস্বরূপ হও।
7 যে ব্যক্তি মানুষের অবজ্ঞাত,লোকবৃন্দের ঘৃণাস্পদ ও শাসনকর্তাদের গোলাম,তাকে মাবুদ, ইসরাইলের মুক্তিদাতা ও তার পবিত্রতম, এই কথা বলেন,তোমাকে দেখলে বাদশাহ্রা উঠে দাঁড়াবে,নেতৃবর্গরা সেজ্দা করবে;মাবুদের জন্যই করবে, তিনি তো বিশ্বসনীয়;ইসরাইলের পবিত্রতমের জন্য করবে,তিনি তো তোমাকে মনোনীত করেছেন।
8 মাবুদ এই কথা বলেন,আমি প্রসন্নতার সময়ে তোমার মুনাজাতের উত্তর দিয়েছি,উদ্ধারের দিনে তোমার সাহায্য করেছি;আর আমি তোমাকে রক্ষা করবো,তোমাকে লোকবৃন্দের সন্ধিরূপে দিয়েছি;তাতে তুমি দেশের উন্নতি সাধন করবে,ধ্বংস হয়ে যাওয়া অধিকারগুলো আবার অধিকারে আনবে;
9 তুমি বন্দীদেরকে বলবে, বের হও;যারা অন্ধকারে আছে, তাদেরকে বলবে প্রকাশিত হও।তারা পথে পথে চরবে,গাছপালাহীন উঁচুস্থান তাদের চরাণিস্থান হবে।
10 তারা ক্ষুধিত বা পিপাসিত হবে না;তপ্ত বালুকা বা রৌদ্র দ্বারা আহত হবে না;কেননা যিনি তাদের প্রতি দয়াকারী,তিনি তাদেরকে চরাবেন,পানির ফোয়ারার কাছে নিয়ে যাবেন।
11 আর আমি আমার সমস্ত পর্বত রাস্তা বানাব,আর আমার সমস্ত রাজপথ উঁচু করা হবে।
12 দেখ, এরা দূর থেকে আসবে;আর দেখ, ওরা উত্তর ও পশ্চিম দিক থেকে আসবে;আর এই লোকেরা সীনীম দেশ থেকে আসবে।
13 আসমান, আনন্দ-রব কর, দুনিয়া, উল্লসিত হও;পর্বতমালা, উচ্চৈঃস্বরে আনন্দগান কর;কেননা মাবুদ তাঁর লোকদেরকে সান্ত্বনা দিয়েছেন,আর তাঁর দুঃখীদের প্রতি করুণা করবেন।
14 কিন্তু সিয়োন বললো, মাবুদ আমাকে ত্যাগ করেছেন,প্রভু আমাকে ভুলে গেছেন।
15 স্ত্রীলোক কি আপন স্তন্যপায়ী শিশুকে ভুলে যেতে পারে?আপন গর্ভজাত বালকের প্রতি কি স্নেহ করবে না?বরং তারা ভুলে যেতে পারে,তবুও আমি তোমাকে ভুলে যাব না।
16 দেখ, আমি আমার হাতের তালুতে তোমার আকৃতি এঁকেছি,তোমার প্রাচীর সর্বদা আমার সম্মুখে আছে।
17 তোমার পুত্রেরা ত্বরা করছে,তোমার উৎপাটনকারী ও উৎসন্নকারীরা তোমার মধ্য থেকে বের হবে।
18 তুমি চারদিকে চোখ তুলে দেখ,এরা সকলে একত্র হয়ে তোমার কাছে আসছে।মাবুদ বলেন, আমার জীবনের কসম,তুমি গহনার মত এগুলোকে পরিধান করবে,বিয়ের কনের গহনার মত এগুলোকে ধারণ করবে।
19 কারণ তোমার উৎসন্ন ও ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানগুলোরএবং তোমার নষ্ট দেশের বিষয় বলছি;এখন তুমি নিবাসীদের পক্ষে সঙ্কীর্ণ হবেএবং যারা তোমাকে গ্রাস করেছিল,তারা দূরে থাকবে।
20 তোমার বিরহের সময়ের সন্তানেরাএর পরে তোমার কর্ণগোচরে বলবে,আমার পক্ষে এই স্থান সঙ্কীর্ণ;সরে যাও, আমাকে বাস করতে দাও।
21 তখন তুমি মনে মনে বলবে,আমার এই সকলকে কে জন্ম দিয়েছে?আমি তো সন্তানহীনা ও বন্ধ্যা,নির্বাসিতা ও পরিভ্রমণকারিণী ছিলাম;এদেরকে কে প্রতিপালন করেছে;দেখ, আমি একাকিনী অবশিষ্টা ছিলাম,এরা কোথায় ছিল?
22 সার্বভৌম মাবুদ এই কথা বলেন,দেখ, আমি জাতিদের প্রতি আমার হাত তুলব,লোকবৃন্দের প্রতি আমার নিশান উঠাবো,তাতে তারা তোমার পুত্রদেরকে কোলে করে,তোমার কন্যাদের কাঁধে করে এনে দেবে।
23 আর বাদশাহ্রা তোমার রক্ষণাবেক্ষণকারী পালকও তাদের রাণীরা তোমার ধাত্রী হবে;তারা ভূমিতে মুখ রেখে তোমার কাছে সেজ্দা করবে,ও তোমার পায়ের ধূলি চাটবে;আর তুমি জানতে পারবে, আমিই মাবুদ;যারা আমার অপেক্ষা করে, তারা লজ্জিত হবে না।
24 বীর থেকে কি যুদ্ধে ধৃত প্রাণী হরণ করা যায়?কিংবা ন্যায়বানের বন্দীদেরকে কি মুক্ত করা যায়?
25 মাবুদ এই কথা বলেন,অবশ্য বীরের বন্দীদেরকে হরণ করা যাবে,ও ভয়ংকর লোকের ধৃত প্রাণীকে মুক্ত করা যাবে;কারণ তোমার প্রতিবাদীর সঙ্গে আমিই ঝগড়া করবো,আর তোমার সন্তানদেরকে আমিই উদ্ধার করবো।
26 আর আমি তোমার জুলুমবাজদেরকে তাদেরই গোশ্ত ভোজন করাব;তারা নতুন আঙ্গুর-রসের মত নিজ নিজ রক্ত খেয়ে মাতাল হবে;আর মানুষ মাত্র জানতে পারবে যে, আমিই মাবুদ তোমার উদ্ধারকর্তা,তোমার মুক্তিদাতা, ইয়াকুবের এক বীর।