1 পরে ফরীশীরা ও সদ্দূকীরা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য কাছে এসে নিবেদন করলো, যেন তিনি তাদেরকে আসমান থেকে কোন চিহ্ন দেখান।
2 কিন্তু জবাবে তিনি তাদেরকে বললেন, সন্ধ্যা হলে তোমরা বলে থাক, পরিষ্কার দিন হবে, কারণ আসমান লাল হয়েছে।
3 আর খুব ভোরে বলে থাক, আজ ঝড় হবে, কারণ আসমান লাল ও মেঘাচ্ছন্ন হয়েছে। তোমরা আসমানের লক্ষণ বুঝতে পার, কিন্তু কালের চিহ্নগুলো বুঝতে পার না।
4 এই কালের দুষ্ট ও জেনাকারী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু ইউনুসের চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাদেরকে দেওয়া যাবে না। তখন তিনি তাদেরকে ত্যাগ করে চলে গেলেন।
5 সাহাবীরা অন্য পারে যাবার সময়ে রুটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন।
6 ঈসা তাদেরকে বললেন, তোমরা সতর্ক হও, ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামি থেকে সাবধান থাক।
7 তখন তাঁরা পরস্পর তর্ক করে বলতে লাগলেন, আমরা যে রুটি আনি নি।
8 এই কথা বুঝতে পেরে ঈসা বললেন, হে অল্পবিশ্বাসীরা, তোমাদের রুটি নেই বলে কেন পরস্পর তর্ক করছো?
9 এখনও কি বোঝ না, মনেও কি পড়ে না, সেই পাঁচ হাজার লোকের খাদ্য পাঁচখানি রুটি, আর কত ডালা তুলে নিয়েছিলে?
10 এবং সেই চার হাজার লোকের খাদ্য সাতখানি রুটি, আর কত ঝুড়ি তুলে নিয়েছিলে?
11 তোমরা কেন বোঝ না যে, আমি তোমাদেরকে রুটির বিষয় বলি নি? কিন্তু তোমরা ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামি থেকে সাবধান থাক।
12 তখন তাঁরা বুঝতে পারলেন, তিনি রুটির খামি থেকে নয়, কিন্তু ফরীশী ও সদ্দূকীদের শিক্ষা থেকে সাবধান থাকবার কথা বলেছেন।
13 পরে ঈসা সিজারিয়া-ফিলিপীর অঞ্চলে গিয়ে তাঁর সাহাবীদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইবনুল-ইনসান কে, এই বিষয়ে লোকে কি বলে?
14 তাঁরা বললেন, কেউ কেউ বলে, আপনি বাপ্তিস্মদাতা ইয়াহিয়া; কেউ কেউ বলে আপনি ইলিয়াস; আর কেউ কেউ বলে, আপনি ইয়ারমিয়া কিংবা নবীদের কোন এক জন।
15 তিনি তাঁদেরকে বললেন, কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?
16 শিমোন পিতর জবাবে বললেন, আপনি সেই মসীহ্, জীবন্ত আল্লাহ্র পুত্র।
17 জবাবে ঈসা তাঁকে বললেন, হে ইউনুসের পুত্র শিমোন, ধন্য তুমি! কেননা রক্তমাংস তোমার কাছে এই কথা প্রকাশ করে নি, কিন্তু আমার বেহেশতী পিতা প্রকাশ করেছেন।
18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতর, আর এই পাথরের উপরে আমি আমার মণ্ডলী গাঁথবো, আর পাতালের ফটকগুলো তার বিপক্ষে প্রবল হবে না।
19 আমি তোমাকে বেহেশতী-রাজ্যের চাবিগুলো দেব; আর তুমি দুনিয়াতে যা কিছু বাঁধবে, তা বেহেশতে বেঁধে রাখা হবে এবং দুনিয়াতে যা কিছু মুক্ত করবে, তা বেহেশতে মুক্ত হবে।
20 তখন তিনি সাহাবীদেরকে এই হুকুম দিলেন, আমি যে সেই মসীহ্, এই কথা কাউকেও বলো না।
21 সেই সময় থেকে ঈসা তাঁর সাহাবীদেরকে স্পষ্টই বলতে লাগলেন যে, তাঁকে জেরুশালেমে যেতে হবে এবং প্রাচীনদের, প্রধান ইমামদের ও আলেমদের কাছ থেকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে ও হত হতে হবে, আর তৃতীয় দিনে উঠতে হবে।
22 এতে পিতর তাঁকে কাছে নিয়ে অনুযোগ করতে লাগলেন, বললেন, প্রভু, তা আপনার কাছ থেকে দূরে থাকুক, তা আপনার প্রতি কখনও ঘটবে না।
23 কিন্তু তিনি মুখ ফিরিয়ে পিতরকে বললেন, আমার সম্মুখ থেকে দূর হও শয়তান, তুমি আমার পথের বাধা; কেননা যা আল্লাহ্র, তা নয়, কিন্তু যা মানুষের, তা-ই তুমি ভাবছো।
24 তখন ঈসা তাঁর সাহাবীদেরকে বললেন, কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে ইচ্ছা করে, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক, আপন ক্রুশ তুলে নিক এবং আমার পিছনে আসুক।
25 কেননা যে কেউ তার প্রাণ রক্ষা করতে ইচ্ছা করে, সে তা হারাবে, আর যে কেউ আমার জন্য তার প্রাণ হারায়, সে তা পাবে।
26 বস্তুতঃ মানুষ যদি সারা দুনিয়া লাভ করে নিজের প্রাণ হারায়, তবে তার কি লাভ হবে? কিংবা মানুষ নিজের প্রাণের পরিবর্তে কি দেবে?
27 কেননা ইবনুল-ইনসান তাঁর ফেরেশতাদের সঙ্গে তাঁর পিতার প্রতাপে আসবেন, আর তখন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কাজ অনুসারে প্রতিফল দেবেন।
28 আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাদের মধ্যে এমন কয়েক জন আছে, যারা কোন মতে মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না, যে পর্যন্ত ইবনুল-ইনসানকে তাঁর রাজ্যে আসতে না দেখবে।