1 কেননা বেহেশতী-রাজ্য এমন এক জন গৃহকর্তার মত, যিনি খুব সকাল বেলায় নিজের আঙ্গুর-ক্ষেতে মজুর লাগাবার জন্য বাইরে গেলেন।
2 তিনি মজুরদের সঙ্গে দিনে এক সিকি বেতন স্থির করে তাদেরকে নিজ আঙ্গুর-ক্ষেতে প্রেরণ করলেন।
3 পরে তিনি তিন ঘটিকার সময়ে বাইরে গিয়ে দেখলেন, অন্য কয়েক জন বাজারে দাঁড়িয়ে আছে যাদের কেউ কাজে লাগায় নি,
4 এবং তাদেরকে বললেন, তোমরাও আঙ্গুর-ক্ষেতে যাও, যা ন্যায্য তোমাদেরকে দেব; তাতে তারা গেল।
5 আবার তিনি ছয় ও নয় ঘটিকার সময়েও বাইরে গিয়ে ঐ একই রকম করলেন।
6 পরে একাদশ ঘটিকার সময়ে বাইরে গিয়ে আর কয়েক জনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন, আর তাদেরকে বললেন, কি জন্য সমস্ত দিন এখানে দাঁড়িয়ে আছ?
7 তারা তাঁকে বললো, কেউই আমাদেরকে কাজে লাগায় নি। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরাও আঙ্গুর-ক্ষেতে যাও।
8 পরে সন্ধ্যা হলে সেই আঙ্গুর-ক্ষেতের মালিক তার দেওয়ানকে বললেন, মজুরদেরকে ডেকে মজুরি দাও, শেষ জন থেকে আরম্ভ করে প্রথম জন পর্যন্ত দাও।
9 তাতে যারা একাদশ ঘটিকার সময়ে লাগিয়েছিল, তারা এসে এক এক জন এক এক সিকি পেল।
10 পরে যাদের প্রথমে লাগিয়েছিল তারা এসে মনে করলো, আমরা বেশি পাব; কিন্তু তারাও এক এক সিকি পেল।
11 পেয়ে তারা সেই গৃহকর্তার বিরুদ্ধে বচসা করে বলতে লাগল,
12 শেষের এরা তো এক ঘণ্টা মাত্র খেটেছে, আমরা সমস্ত দিন খেটেছি ও রৌদ্রে পুড়েছি, আপনি এদেরকে আমাদের সমান করলেন।
13 জবাবে তিনি তাদের এক জনকে বললেন, হে বন্ধু! আমি তোমার প্রতি কোন অন্যায় করি নি; তুমি কি আমার কাছে কাজ করতে এক সিকিতে রাজী হও নি?
14 তোমার যা পাওনা তা নিয়ে চলে যাও; আমার ইচ্ছা, তোমাকে যা, ঐ শেষের জনকেও তা-ই দেব।
15 যা আমার নিজের, তা আমার ইচ্ছামত ব্যবহার করার অধিকার কি আমার নেই? না আমি দয়ালু বলে তোমার চোখ টাটাচ্ছে?
16 এভাবে যারা শেষের, তারা প্রথম হবে এবং যারা প্রথম, তারা শেষে পড়বে।
17 পরে যখন ঈসা জেরুশালেমে যেতে উদ্যত হলেন, তখন তিনি সেই বারো জন সাহাবীকে বিরলে নিয়ে গেলেন, আর পথের মধ্যে তাঁদেরকে বললেন,
18 দেখ, আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর ইবনুল-ইনসানকে প্রধান ইমামদের ও আলেমদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে;
19 তারা তাঁর প্রাণদণ্ড বিধান করবে এবং বিদ্রূপ করার, কশাঘাত করার ও ক্রুশে দেবার জন্য অ-ইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেবে; পরে তিনি তৃতীয় দিনে উঠবেন।
20 তখন সিবদিয়ের পুত্রদের মা তাঁর দুই পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কাছে এসে মাটিতে উবুড় হয়ে তাঁর কাছে কিছু যাচ্ঞা করলেন।
21 তিনি তাঁকে বললেন, তুমি কি চাও? তিনি বললেন, হুকুম করুন, যেন আপনার রাজ্যে আমার এই দুই পুত্রের এক জন আপনার ডান পাশে, আর এক জন বাম পাশে বসতে পারে।
22 কিন্তু জবাবে ঈসা বললেন, তোমরা কি যাচ্ঞা করছো, তা বোঝ না; আমি যে পাত্রে পান করতে যাচ্ছি, তাতে কি তোমরা পান করতে পার? তাঁরা বললেন, পারি।
23 তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা আমার পাত্রে পান করবে বটে, কিন্তু যাদের জন্য আমার পিতা কর্তৃক স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে, তাদের ছাড়া আর কাউকেও আমার ডান পাশে ও বাম পাশে বসতে দেবার আমার অধিকার নেই।
24 এই কথা শুনে অন্য দশ জন ঐ দুই ভাইয়ের প্রতি রুষ্ট হলেন।
25 কিন্তু ঈসা তাঁদেরকে কাছে ডেকে বললেন, তোমরা জান, অ-ইহুদীদের শাসনকর্তারা তাদের উপরে প্রভুত্ব করে এবং যারা মহান, তারা তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে।
26 তোমাদের মধ্যে সেরকম হবে না; কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেউ মহান হতে চায়, সে তোমাদের পরিচারক হবে;
27 এবং তোমাদের মধ্যে যে কেউ প্রধান হতে চায়, সে তোমাদের গোলাম হবে;
28 যেমন ইবনুল-ইনসান পরিচর্যা পেতে আসেন নি, কিন্তু পরিচর্যা করতে এবং অনেকের পরিবর্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে এসেছেন।
29 পরে জেরিকো থেকে তাঁদের বের হবার সময়ে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল।
30 আর দেখ, দু’জন অন্ধ পথের পাশে বসেছিল; সেই পথ দিয়ে ঈসা যাচ্ছেন শুনে তারা চেঁচিয়ে বললো, প্রভু, দাউদ-সন্তান, আমাদের প্রতি করুণা করুন।
31 তাতে লোকেরা চুপ্ চুপ্ বলে তাদেরকে ধমক্ দিল; কিন্তু তারা আরও বেশি চেঁচিয়ে বললো, প্রভু, দাউদ-সন্তান, আমাদের প্রতি করুণা করুন।
32 তখন ঈসা থেমে তাদেরকে ডাকলেন, আর বললেন, তোমরা কি চাও? আমি তোমাদের জন্য কি করবো?
33 তারা তাঁকে বললো, প্রভু, আমাদের চোখ যেন খুলে যায়।
34 তখন ঈসা করুণাবিষ্ট হয়ে তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, আর তখনই তারা দেখতে পেল ও তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগলো।