1 সাবধান, লোককে দেখাবার জন্য তাদের সাক্ষাতে তোমাদের ধর্মকর্ম করো না, করলে তোমাদের বেহেশতী পিতার কাছ থেকে তোমরা কোন পুরস্কার পাবে না।
2 অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সম্মুখে তূরী বাজিয়ো না, যেমন ভণ্ডরা লোকের কাছে প্রশংসা পাবার জন্য মজলিস-খানায় ও পথে করে থাকে; আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
3 কিন্তু তুমি যখন দান কর, তখন তোমার ডান হাত কি করছে, তা তোমার বাম হাতকে জানতে দিও না।
4 এভাবে তোমার দান যেন গোপনে হয়; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।
5 আর তোমরা যখন মুনাজাত কর, তখন ভণ্ডদের মত হয়ো না; কারণ তারা মজলিস-খানায় ও পথের কোণে দাঁড়িয়ে লোক-দেখানো মুনাজাত করতে ভালবাসে; আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
6 কিন্তু তুমি যখন মুনাজাত কর, তখন তোমার ভিতরের ঘরে প্রবেশ করো, আর দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তাঁর কাছে মুনাজাত করো; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।
7 আর মুনাজাত করার সময় তোমরা অনর্থক পুনরুক্তি করো না, যেমন অ-ইহুদীরা করে থাকে; কেননা তারা মনে করে, বেশি কথা বললেই তাদের মুনাজাতের উত্তর পাবে।
8 অতএব তোমরা তাদের মত হয়ো না, কেননা তোমাদের কি কি প্রয়োজন, তা যাচ্ঞা করার আগে তোমাদের পিতা জানেন।
9 অতএব তোমরা এই ভাবে মুনাজাতকরো;হে আমাদের বেহেশতী পিতা,তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক,
10 তোমার রাজ্য আসুক,তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হোক,যেমন বেহেশতে তেমনি দুনিয়াতেওহোক;
11 আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আজআমাদেরকে দাও;
12 আর আমাদের অপরাধগুলো মাফকর,যেমন আমরাও নিজ নিজঅপরাধীদেরকে মাফ করেছি;
13 আর আমাদেরকে পরীক্ষাতে এনোনা,কিন্তু মন্দ থেকে রক্ষা কর।
14 তোমরা যদি লোকের অপরাধ মাফ কর, তবে তোমাদের বেহেশতী পিতা তোমাদেরকেও মাফ করবেন।
15 কিন্তু তোমরা যদি লোকদেরকে মাফ না কর, তবে তোমাদের পিতা তোমাদের অপরাধও মাফ করবেন না।
16 আর তোমরা যখন রোজা রাখ, তখন ভণ্ডদের মত মুখ কালো করে রেখো না; কেননা তারা লোককে রোজা দেখাবার জন্য নিজেদের মুখ কালো করে রাখে; আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
17 কিন্তু তুমি যখন রোজা রাখ, তখন মাথায় তেল দিও এবং মুখ ধুইও;
18 যেন লোকে তোমার রোজা দেখতে না পায়, কিন্তু তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তিনিই দেখতে পান; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।
19 তোমরা দুনিয়াতে নিজেদের জন্য ধন সঞ্চয় করো না; এখানে তো কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে এবং এখানে চোরে সিঁধ কেটে চুরি করে।
20 কিন্তু বেহেশতে নিজেদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কেটে চুরি করে না।
21 কারণ যেখানে তোমার ধন, সেখানে তোমার মনও থাকবে।
22 চোখই শরীরের প্রদীপ; অতএব তোমার চোখ যদি সরল হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর আলোতে পূর্ণ হবে।
23 কিন্তু তোমার চোখ যদি মন্দ হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারময় হবে। অতএব তোমার মধ্যকার আলো যদি অন্ধকার হয়, সেই অন্ধকার কত বড়!
24 কেউই দুই মালিকের গোলামী করতে পারে না; কেননা সে হয় তো এক জনকে হিংসা করবে, আর এক জনকে মহব্বত করবে, নয় তো এক জনের প্রতি অনুরক্ত হবে, আর এক জনকে তুচ্ছ করবে; তোমরা আল্লাহ্ এবং ধন উভয়ের গোলামী করতে পার না।
25 এজন্য আমি তোমাদেরকে বলছি, ‘কি ভোজন করবো, কি পান করবো’ বলে প্রাণের বিষয়ে, কিংবা ‘কি পরবো’ বলে শরীরের বিষয়ে চিন্তিত হয়ো না; খাদ্য থেকে প্রাণ ও কাপড় থেকে শরীর কি বড় বিষয় নয়?
26 আসমানের পাখিগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত কর; তারা বপনও করে না, কাটেও না, গোলাঘরে সঞ্চয়ও করে না, তবুও তোমাদের বেহেশতী পিতা তাদেরকে আহার দিয়ে থাকেন; তোমরা কি তাদের থেকে বেশি শ্রেষ্ঠ নও?
27 আর তোমাদের মধ্যে কে চিন্তিত হয়ে নিজের বয়স এক হাত মাত্র বৃদ্ধি করতে পারে?
28 আর কাপড়ের জন্য কেন চিন্তিত হও? ক্ষেতের ফুলের বিষয়ে চিন্তা কর, সেগুলো কেমন বেড়ে ওঠে;
29 সেসব পরিশ্রম করে না, সুতাও কাটে না; তবুও আমি তোমাদেরকে বলছি, সোলায়মানও তাঁর সমস্ত প্রতাপে এর একটির মত সুসজ্জিত ছিলেন না।
30 ভাল, ক্ষেতের যে ঘাস আজ আছে ও আগামীকাল চুলায় ফেলে দেওয়া হবে, তা যদি আল্লাহ্ এভাবে সাজিয়ে থাকেন, তবে হে অল্প বিশ্বাসীরা, তোমাদেরকে কি আরও বেশি করে সাজাবেন না?
31 অতএব এই বলে চিন্তিত হয়ো না যে,
32 ‘কি ভোজন করবো?’ বা ‘কি পান করবো?’ বা ‘কি পরবো?’ কেননা অ-ইহুদীরাই এসব বিষয় চেষ্টা করে থাকে; তোমাদের বেহেশতী পিতা তো জানেন যে, এসব দ্রব্য তোমাদের প্রয়োজন আছে।
33 কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁর রাজ্য ও তাঁর ধার্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তা হলে ঐ সমস্ত দ্রব্যও তোমাদেরকে দেওয়া হবে।
34 অতএব আগামীকালের জন্য চিন্তিত হয়ো না, কেননা আগামীকাল তার নিজের বিষয় নিজেই চিন্তিত হবে; দিনের কষ্ট দিনের জন্যই যথেষ্ট।