1 এসব কথা সমাপ্ত করার পর ঈসা গালীল থেকে প্রস্থান করলেন, পরে জর্ডান নদীর অন্যপারস্থ এহুদিয়ার অঞ্চলে উপস্থিত হলেন;
2 আর অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল এবং তিনি সেখানে লোকদেরকে সুস্থ করলেন।
3 আর ফরীশীরা তাঁর কাছে এসে পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, যে কোন কারণে কি আপন স্ত্রীকে তালাক দেওয়া উচিত?
4 জবাবে তিনি বললেন, তোমরা কি পাঠ কর নি যে, সৃষ্টিকর্তা আদিতে পুরুষ ও স্ত্রী করে তাদেরকে নির্মাণ করেছিলেন, আর বলেছিলেন,
5 “এই কারণ মানুষ পিতা ও মাতাকে পরিত্যাগ করে আপন স্ত্রীতে আসক্ত হবে এবং সে দু’জন একাঙ্গ হবে”?
6 সুতরাং তারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ। অতএব আল্লাহ্ যা যোগ করে দিয়েছেন, মানুষ তা বিয়োগ না করুক।
7 তারা তাঁকে বললো, তবে মূসা কেন তালাক-নামা দিয়ে তালাক দেবার হুকুম দিয়েছেন?
8 তিনি তাদেরকে বললেন, তোমাদের অন্তঃকরণ কঠিন বলে মূসা তোমাদেরকে নিজ নিজ স্ত্রীকে তালাক দেবার অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু আদি থেকে এরকম হয় নি।
9 আর আমি তোমাদেরকে বলছি, জেনার দোষ ছাড়া যে কেউ আপন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্য স্ত্রীলোককে বিয়ে করে, সে জেনা করে। যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে, সেও জেনা করে।
10 সাহাবীরা তাঁকে বললেন, যদি আপন স্ত্রীর সঙ্গে পুরুষের এরকম সম্বন্ধ হয়, তবে বিয়ে না করাই ভাল।
11 তিনি তাঁদেরকে বললেন, সকলে এই কথা গ্রহণ করে না, কিন্তু যাদেরকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তারাই করে।
12 কারণ এমন নপুংসক আছে, যারা মায়ের উদর থেকে সেরকম হয়ে জন্মেছে; আর এমন নপুংসক আছে, যাদেরকে মানুষে নপুংসক করেছে; আর এমন নপুংসক আছে, যারা বেহেশতী-রাজ্যের জন্য নিজেদের নপুংসক করেছে। এই কথা যে গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক।
13 তখন কতগুলো শিশু তাঁর কাছে আনা হল, যেন তিনি তাদের উপরে হাত রাখেন ও তাদের জন্য দোয়া করেন; তাতে সাহাবীরা তাদেরকে ভর্ৎসনা করলেন।
14 কিন্তু ঈসা বললেন, শিশুদেরকে আমার কাছে আসতে দাও, বারণ করো না; কেননা বেহেশতী-রাজ্য এদের মত লোকদেরই।
15 পরে তিনি তাদের উপরে হাত রেখে সেখান থেকে চলে গেলেন।
16 আর দেখ, এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বললো, হুজুর, অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমি কিরূপ সৎকর্ম করবো?
17 তিনি তাকে বললেন, আমাকে সৎ এর বিষয় কেন জিজ্ঞাসা কর? সৎ এক জন মাত্র আছেন। কিন্তু তুমি যদি জীবনে প্রবেশ করতে ইচ্ছা কর, তবে হুকুমগুলো পালন কর।
18 সে বললো, কোন্ কোন্ হুকুম? ঈসা বললেন, এই এই, “নরহত্যা করো না, জেনা করো না, চুরি করো না,
19 মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না, পিতা ও মাতাকে সমাদর করো এবং তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করো”।
20 সেই যুবক তাঁকে বললো, আমি এগুলো সবই পালন করেছি, এখন আমার কি ত্রুটি আছে?
21 ঈসা তাকে বললেন, যদি সিদ্ধ হতে ইচ্ছা কর, তবে চলে যাও, তোমার যা যা আছে, বিক্রি কর এবং দরিদ্রদেরকে দান কর, তাতে বেহেশতে ধন পাবে; আর এসো, আমার অনুসারী হও।
22 কিন্তু এই কথা শুনে সেই যুবক দুঃখিত হয়ে চলে গেল, কারণ তার বিস্তর সম্পত্তি ছিল।
23 তখন ঈসা তাঁর সাহাবীদেরকে বললেন, আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, ধনবানের পক্ষে বেহেশতী-রাজ্যে প্রবেশ করা দুষ্কর।
24 আবার তোমাদেরকে বলছি, আল্লাহ্র রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করার চেয়ে বরং সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওয়া সহজ।
25 এই কথা শুনে সাহাবীরা ভীষণ আশ্চর্য হয়ে বললেন, তবে কে নাজাত পেতে পারে?
26 ঈসা তাঁদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে বললেন, তা মানুষের অসাধ্য বটে, কিন্তু আল্লাহ্র পক্ষে সকলই সাধ্য।
27 তখন পিতর জবাবে তাঁকে বললেন, দেখুন, আমরা সমস্তই পরিত্যাগ করে আপনার অনুসারী হয়েছি; আমরা তবে কি পাব?
28 ঈসা তাঁদেরকে বললেন, আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, তোমরা যত জন আমার অনুসারী হয়েছ, পুনঃসৃষ্টিকালে যখন ইবনুল-ইনসান আপন মহিমার সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসে ইসরাইলের বারো বংশের বিচার করবে।
29 আর যে কোন ব্যক্তি আমার নামের জন্য নিজের বাড়ি, বা ভাই-বোন, বা পিতা-মাতা, বা সন্তান, বা ক্ষেত পরিত্যাগ করেছে, সে তার শত গুণ পাবে এবং অনন্ত জীবনের অধিকারী হবে।
30 কিন্তু যারা প্রথম, এমন অনেক লোক শেষে পড়বে এবং যারা শেষের, এমন অনেক লোক প্রথম হবে।