1 ঈসা আবার দৃষ্টান্ত দ্বারা কথা বললেন,
2 তিনি তাদেরকে বললেন, বেহেশতী-রাজ্য এমন এক জন বাদশাহ্র মত, যিনি তাঁর পুত্রের বিয়ের ভোজের আয়োজন করলেন।
3 সেই ভোজে দাওয়াতপ্রাপ্ত লোকদেরকে ডাকবার জন্য তিনি তাঁর গোলামদেরকে প্রেরণ করলেন; কিন্তু তারা আসতে চাইল না।
4 তাতে তিনি আবার অন্য গোলামদেরকে প্রেরণ করলেন, বললেন, দাওয়াতপ্রাপ্ত লোকদেরকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি, আমার ষাঁড়গুলো ও হৃষ্টপুষ্ট পশুগুলো জবেহ্ করা হয়েছে, সকলই প্রস্তুত; তোমরা বিয়ের ভোজে এসো।
5 কিন্তু তারা অবহেলা করে কেউ নিজের ক্ষেতে, কেউ বা নিজের ব্যাপারে চলে গেল।
6 অবশিষ্ট সকলে তাঁর গোলামদেরকে ধরে অপমান করলো ও হত্যা করলো।
7 তাতে বাদশাহ্ ক্রুদ্ধ হলেন এবং সৈন্যসামন্ত পাঠিয়ে সেই হত্যাকারীদেরকে বিনষ্ট করলেন ও তাদের নগর পুড়িয়ে দিলেন।
8 পরে তিনি তাঁর গোলামদেরকে বললেন, বিয়ের ভোজ তো প্রস্তুত, কিন্তু ঐ দাওয়াতপ্রাপ্ত লোকেরা এর যোগ্য ছিল না;
9 অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়ে যত লোকের দেখা পাও, সকলকে বিয়ের ভোজে ডেকে আন।
10 তাতে ঐ গোলামেরা রাজপথে গিয়ে ভাল-মন্দ যত লোকের দেখা পেল, সকলকেই ডেকে নিয়ে আসল, তাতে বিয়ে-বাড়ি মেহমানদের দ্বারা পরিপূর্ণ হল।
11 পরে বাদশাহ্ মেহমানদেরকে দেখবার জন্যে ভিতরে এসে এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন, যার বিয়ের পোশাক ছিল না;
12 তিনি তাকে বললেন, হে বন্ধু, তুমি কেমন করে বিয়ের পোশাক ছাড়া এখানে প্রবেশ করলে? সে এর কোন জবাব দিতে পারল না।
13 তখন বাদশাহ্ পরিচারকদেরকে বললেন, ওর হাত-পা বেঁধে ওকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও; সেখানে কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে।
14 বাস্তবিক অনেকে আহ্বানপ্রাপ্ত, কিন্তু অল্পই মনোনীত।
15 তখন ফরীশীরা গিয়ে পরামর্শ করলো, কিভাবে তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলতে পারে।
16 আর তারা হেরোদীয়দের সঙ্গে তাদের শাগরেদকে দিয়ে তাঁকে বলে পাঠাল, হুজুর, আমরা জানি, আপনি সত্য এবং সত্যরূপে আল্লাহ্র পথের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন এবং আপনি কারো বিষয়ে ভীত নন, কেননা আপনি মানুষের মুখাপেক্ষা করেন না।
17 ভাল, আমাদেরকে বলুন, আপনার মত কি? সীজারকে কর দেওয়া উচিত কি না?
18 কিন্তু ঈসা তাদের দুষ্টামি বুঝে বললেন, ভণ্ডরা, আমার পরীক্ষা কেন করছো?
19 সেই করের মুদ্রা আমাকে দেখাও। তখন তারা তাঁর কাছে একটি দীনার আনলো।
20 তিনি তাদেরকে বললেন, এই ছবি ও এই নাম কার? তারা বললো, সম্রাটের।
21 তখন তিনি তাদেরকে বললেন, তবে সম্রাটের যা যা, সম্রাটকে দাও। আর আল্লাহ্র যা যা, আল্লাহ্কে দাও।
22 এই কথা শুনে তারা আশ্চর্য জ্ঞান করলো এবং তাঁকে ছেড়ে চলে গেল।
23 সেদিন সদ্দূকীরা— যারা বলে পুনরুত্থান নেই— তাঁর কাছে আসল
24 এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, হুজুর, মূসা বলেছেন, কেউ যদি নিঃসন্তান হয়ে মারা যায়, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে আপন ভাইয়ের জন্য বংশ উৎপন্ন করবে।
25 ভাল, আমাদের মধ্যে সাতটি ভাই ছিল; আর জ্যেষ্ঠ ভাই বিয়ের পর মারা গেল এবং সন্তান না হওয়াতে আপন ভাইয়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে রেখে গেল।
26 দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রভৃতি সপ্তম জন পর্যন্ত সেই স্ত্রীকে বিয়ে করলো।
27 সকলের শেষে সেই স্ত্রীও মারা গেল।
28 অতএব পুনরুত্থানে ঐ সাত জনের মধ্যে সে কার স্ত্রী হবে? সকলেই তো তাকে বিয়ে করেছিল।
29 জবাবে ঈসা তাদেরকে বললেন, তোমরা ভুল করছো, কারণ তোমরা না জান পাক-কিতাব, না জান আল্লাহ্র পরাক্রম।
30 কেননা পুনরুত্থানে লোকে বিয়ে করে না এবং বিবাহিতাও হয় না, বরং বেহেশতে আল্লাহ্র ফেরেশতাদের মত থাকে।
31 কিন্তু মৃতদের পুনরুত্থান বিষয়ে আল্লাহ্ তোমাদেরকে যা বলেছেন, তা কি তোমরা পাঠ কর নি?
32 তিনি বলেন,“আমি ইব্রাহিমের আল্লাহ্, ইস্হাকের আল্লাহ্ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্;”আল্লাহ্ মৃতদের আল্লাহ্ নন, কিন্তু জীবিতদের।
33 এই কথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষায় চমৎকার জ্ঞান করলো।
34 ফরীশীরা যখন শুনতে পেল, তিনি সদ্দূকীদেরকে নিরুত্তর করেছেন, তখন তারা একসঙ্গে এসে জুটলো।
35 আর তাদের মধ্যে এক জন আলেম ঈসাকে পরীক্ষা করার জন্য জিজ্ঞাসা করলো,
36 হুজুর, শরীয়তের মধ্যে কোন্ হুকুম মহৎ?
37 তিনি তাকে বললেন, “তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার আল্লাহ্ প্রভুকে মহব্বত করবে,”
38 এটি মহৎ ও প্রথম হুকুম। আর দ্বিতীয়টি এর মত;
39 “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে।”
40 এই দু’টি হুকুমে সমস্ত শরীয়ত এবং নবীদের কিতাবের শিক্ষা ঝুলছে।
41 আর ফরীশীরা একত্র হলে ঈসা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন,
42 মসীহের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়, তিনি কার সন্তান? তারা বললো, দাউদের সন্তান।
43 তিনি তাদেরকে বললেন, তবে দাউদ কিভাবে রূহের আবেশে তাঁকে প্রভু বলেন? তিনি বলেন—
44 “প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,তুমি আমার দক্ষিণে বস,যতদিন আমি তোমার দুশমনদেরকেতোমার পদতলে না রাখি।”
45 অতএব দাউদ যখন তাঁকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কিভাবে তাঁর সন্তান?
46 তখন কেউ তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারল না; আর সেদিন থেকে তাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে কারো সাহস হল না।