1 এর পর যিহূদা তার ভাইদের ছেড়ে অদুল্লম গ্রামের একজন লোকের সংগে বাস করতে গেল। লোকটির নাম ছিল হীরা।
2 সেখানে থাকবার সময় শূয় নামে একজন কনানীয় লোকের মেয়ে তার নজরে পড়ে গেল। মেয়েটিকে সে বিয়ে করল।
3 পরে মেয়েটি গর্ভবতী হল এবং তাঁর একটি ছেলে হল। যিহূদা ছেলেটির নাম রাখল এর।
4 পরে সে আবার গর্ভবতী হল এবং তার একটি ছেলে হল। মা ছেলেটির নাম রাখল ওনন।
5 তারপর আবার সে গর্ভবতী হল এবং তার আর একটি ছেলে হল। সে তার নাম রাখল শেলা। এই ছেলেটির জন্মের সময় তারা কষীব গ্রামে ছিল।
6 পরে যিহূদা তার বড় ছেলে এরের সংগে তামর নামে একটি মেয়ের বিয়ে দিল।
7 কিন্তু যিহূদার এই ছেলে এর সদাপ্রভুর চোখে এত খারাপ ছিল যে, তিনি তাকে আর বাঁচতে দিলেন না।
8 যিহূদা তখন ওননকে বলল, “তোমার ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে তুমি বিয়ে কর। তার দেবর হিসাবে তোমার যা করা উচিত তা কর এবং তোমার ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা কর।”
9 ওনন জানত যে, সেই বংশ তার নিজের হবে না। ভাইয়ের হয়ে বংশ রক্ষা করবার অনিচ্ছার দরুন যতবার সে তার ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে গেল ততবারই সে বাইরে মাটিতে বীর্যপাত করল।
10 কিন্তু তার এই ব্যবহারে সদাপ্রভু অসন্তুষ্ট হলেন। সেইজন্য তাকেও তিনি আর বাঁচতে দিলেন না।
11 তখন যিহূদা তার ছেলের বউ তামরকে বলল, “যতদিন না আমার ছেলে শেলা বড় হয় ততদিন তুমি তোমার বাবার বাড়ীতে গিয়ে বিধবা হিসাবে বাস করতে থাক।” যিহূদার মনে এই ভয় হয়েছিল, হয়তো শেলাও তার অন্য ভাইদের মত মারা যাবে। যিহূদার কথায় তামর তার বাবার বাড়ীতে গিয়ে থাকতে লাগল।
12 এর অনেক দিন পরে যিহূদার স্ত্রী, অর্থাৎ শূয়ের মেয়ে মারা গেল। তার জন্য শোক প্রকাশের সময় শেষ হয়ে গেলে পর যিহূদা ও তাঁর অদুল্লমীয় বন্ধু হীরা তিম্না গ্রামে গেল। যে লোকেরা যিহূদার ভেড়ার লোম কাটত তারা সেই গ্রামেই ছিল।
13 এর আগে একজন লোক তামরকে গিয়ে বলেছিল, “দেখ, তোমার শ্বশুর তাঁর ভেড়ার লোম ছাঁটাইয়ের জন্য তিম্নায় যাচ্ছেন।”
14 তামর লক্ষ্য করেছিল যে, শেলার বয়স হলেও শ্বশুর তাঁর কথামত শেলার সংগে তার বিয়ে দেন নি। সেইজন্য সে বিধবার কাপড়-চোপড় ছেড়ে মুখ ঢেকে গায়ে কাপড় জড়িয়ে ঐনয়িমের ফটকের কাছে গিয়ে বসে রইল। ঐনয়িম ছিল তিম্না যাবার পথে।
15 সে মুখ ঢেকে রেখেছিল বলে যিহূদা তাকে দেখে বেশ্যা মনে করল।
16 তাই সে রাস্তার ধারে তামরের কাছে গিয়ে বলল, “এস, তোমার সংগে শুতে যাই।” নিজের ছেলের বউকে সে চিনতেই পারল না।তামর বলল, “এইজন্য আপনি আমাকে কি দেবেন?”
17 যিহূদা বলল, “আমার পাল থেকে আমি তোমাকে একটা ছাগলের বাচ্চা পাঠিয়ে দেব।”তামর বলল, “সেটা না পাঠানো পর্যন্ত আপনি আমার কাছে কিছু বন্ধক রেখে যাবেন কি?”
18 যিহূদা বলল, “কি বন্ধক রাখব?”সে বলল, “দড়ি সুদ্ধ আপনার সীলমোহরখানা আর আপনার হাতের লাঠিটা।” তখন যিহূদা সেগুলো তার কাছে জমা রেখে তার সংগে মিলিত হল, আর তার ফলে তামর গর্ভবতী হল।
19 এর পর তামর উঠে চলে গেল, আর মাথার কাপড় খুলে ফেলে সে আবার বিধবার কাপড়-চোপড় পরল।
20 পরে স্ত্রীলোকটির কাছ থেকে সেই বন্ধক রাখা জিনিসগুলো ফেরৎ আনবার জন্য যিহূদা তার অদুল্লমীয় বন্ধুকে দিয়ে একটা ছাগলের বাচ্চা পাঠিয়ে দিল। কিন্তু সে তাকে খুঁজে পেল না।
21 তখন সে সেখানকার লোকদের জিজ্ঞাসা করল, “ঐনয়িমে রাস্তার ধারে যে মন্দির-বেশ্যাটি ছিল সে কোথায়?”তারা বলল, “এখানে তো কোন মন্দির-বেশ্যা নেই।”
22 তখন সে যিহূদার কাছে ফিরে গিয়ে বলল, “আমি তাকে খুঁজে পেলাম না। এছাড়া ওখানকার লোকেরা বলল যে, ওখানে কোন মন্দির-বেশ্যা নেই।”
23 যিহূদা বলল, “তাহলে ঐ জিনিসগুলো ওর কাছেই থাক্, না হলে লোকে আমাদের নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করবে। তা ছাড়া ছাগলের বাচ্চাটা তো আমি পাঠিয়েই দিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি তাকে খুঁজে পাও নি।”
24 এর প্রায় তিন মাস পরে যিহূদা শুনতে পেল যে, তার ছেলের বউ তামর ব্যভিচার করেছে, আর তার ফলে সে এখন গর্ভবতী হয়েছে। এই কথা শুনে যিহূদা বলল, “ওকে বের করে এনে পুড়িয়ে ফেলা হোক।”
25 তামরকে যখন বের করে আনা হচ্ছিল তখন সে তার শ্বশুরকে বলে পাঠাল, “আমার গর্ভে যাঁর সন্তান আছে এই সব জিনিস তাঁর।” তারপর সে বলল, “দয়া করে একবার পরীক্ষা করে দেখবেন কি, এই দড়ি সুদ্ধ সীলমোহরখানা ও লাঠিটা কার?”
26 যিহূদা সেগুলো চিনতে পেরে বলল, “সে তো তাহলে আমার তুলনায় অনেক ভাল, কারণ আমার ছেলে শেলার সংগে আমি তার বিয়ে দিই নি।” এর পর সে আর কখনও তামরের সংগে শোয় নি।
27 সন্তান প্রসবের সময় দেখা গেল তামরের গর্ভে যমজ সন্তান রয়েছে।
28 প্রসবের সময় একটি সন্তান তার হাত বের করল। তখন ধাত্রী একটা লাল সুতা তার হাতে বেঁধে দিয়ে বলল, “এটির জন্ম আগে হল।”
29 কিন্তু আশ্চর্য এই যে, সেই সন্তানটি যখন তার হাত ভিতরে টেনে নিল তখনই তার ভাই বের হয়ে আসল। তখন ধাত্রী বলল, “কি করে তুমি বাধা ভেংগে বেরিয়ে আসলে?” এইজন্য তার নাম রাখা হল পেরস (যার মানে “বাধা ভাংগা”)।
30 তারপর তার ভাই হাতে লাল সুতা বাঁধা অবস্থায় বের হয়ে আসল। তার নাম দেওয়া হল সেরহ।