1-2 মানুষ যখন পৃথিবীর উপর নিজেদের সংখ্যা বাড়িয়ে চলল এবং তাদের মধ্যে অনেক মেয়েরও জন্ম হল তখন ঈশ্বরের সন্তানেরা এই মেয়েদের সুন্দরী দেখে যার যাকে ইচ্ছা তাকেই বিয়ে করতে লাগল।
3 এই অবস্থা দেখে সদাপ্রভু বললেন, “আমার আত্মা চিরকাল ধরে মানুষকে চেতনা দিতে থাকবেন না, কারণ মানুষ মৃত্যুর অধীন। আমি তাদের আরও একশো বিশ বছর সময় দিচ্ছি।”
4 ঈশ্বরের সন্তানদের সংগে এই মেয়েদের মিলনের ফলে যে সন্তানদের জন্ম হল তারা ছিল পুরানো দিনের নাম-করা শক্তিশালী লোক। সেই সময় এবং তার পরেও পৃথিবীতে নেফিলীয় নামে এক জাতের লোক ছিল।
5 সদাপ্রভু দেখলেন পৃথিবীতে মানুষের দুষ্টতা খুবই বেড়ে গেছে, আর তার অন্তরের সব চিন্তা-ভাবনা সব সময়ই কেবল মন্দের দিকে ঝুঁকে আছে।
6-7 এতে সদাপ্রভু অন্তরে ব্যথা পেলেন। তিনি পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন বলে দুঃখিত হয়ে বললেন, “আমার সৃষ্ট মানুষকে আমি পৃথিবীর উপর থেকে মুছে ফেলব; আর তার সংগে সমস্ত জীবজন্তু, বুকে-হাঁটা প্রাণী ও আকাশের পাখীও মুছে ফেলব। এই সব সৃষ্টি করেছি বলে আমার মনে কষ্ট হচ্ছে।”
8 কিন্তু নোহের উপরে সদাপ্রভু সন্তুষ্ট রইলেন।
9 এই হল নোহের জীবনের কথা। নোহ একজন সৎ লোক ছিলেন। তাঁর সময়কার লোকদের মধ্যে তিনিই ছিলেন খাঁটি। ঈশ্বরের সংগে তাঁর যোগাযোগ-সম্বন্ধ ছিল।
10 শেম, হাম আর যেফৎ নামে নোহের তিনটি ছেলে ছিল।
11 সেই সময় ঈশ্বরের কাছে গোটা দুনিয়াটাই পাপের দুর্গন্ধে এবং অত্যাচার-অবিচারে ভরে উঠেছিল।
12 ঈশ্বর জগতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে, তা দুর্গন্ধময় হয়ে গেছে, কারণ দুনিয়ার মানুষের স্বভাবে পচন ধরেছে।
13 এই অবস্থা দেখে ঈশ্বর নোহকে বললেন, “গোটা মানুষ জাতটাকেই আমি ধ্বংস করে ফেলব বলে ঠিক করেছি। মানুষের জন্যই পৃথিবী অত্যাচার-অবিচারে ভরে উঠেছে। মানুষের সংগে দুনিয়ার সব কিছুই আমি ধ্বংস করতে যাচ্ছি।
14 তুমি গোফর কাঠ দিয়ে তোমার নিজের জন্য একটা জাহাজ তৈরী কর। তার মধ্যে কতগুলো কামরা থাকবে; আর সেই জাহাজের বাইরে এবং ভিতরে আল্কাত্রা দিয়ে লেপে দেবে।
15 জাহাজটা তুমি এইভাবে তৈরী করবে: সেটা লম্বায় হবে তিনশো হাত, চওড়ায় পঞ্চাশ হাত, আর তার উচ্চতা হবে ত্রিশ হাত।
16 জাহাজটার ছাদ থেকে নীচে এক হাত পর্যন্ত চারদিকে একটা খোলা জায়গা রাখবে আর দরজাটা হবে জাহাজের এক পাশে। জাহাজটাতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থাকবে।
17 আর দেখ, আমি পৃথিবীতে এমন একটা বন্যার সৃষ্টি করব যাতে আকাশের নীচে যে সব প্রাণী শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছে তারা সব ধ্বংস হয়ে যায়। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীই তাতে মারা যাবে।
18 “কিন্তু আমি তোমার জন্য আমার ব্যবস্থা স্থাপন করব। তুমি গিয়ে জাহাজে উঠবে আর তোমার সংগে থাকবে তোমার ছেলেরা, তোমার স্ত্রী ও তোমার ছেলেদের স্ত্রীরা।
19 তোমার সংগে বাঁচিয়ে রাখবার জন্য তুমি প্রত্যেক জাতের জীবন্ত প্রাণী থেকে স্ত্রী-পুরুষ মিলিয়ে এক এক জোড়া করে জাহাজে তুলে নেবে।
20 প্রত্যেক জাতের পাখী, জীবজন্তু ও বুকে-হাঁটা প্রাণী এক এক জোড়া করে তোমার কাছে আসবে যাতে তুমি তাদের বাঁচিয়ে রাখতে পার;
21 আর তুমি সব রকমের খাবার জিনিস জোগাড় করে মজুদ করে রাখবে। সেগুলোই হবে তোমার ও তাদের খাবার।”
22 নোহ তা-ই করলেন। ঈশ্বরের আদেশমত তিনি সব কিছুই করলেন।